“উড়ন্ত টাকা আর দুরন্ত নায়ক আমি চিরকাল এভয়েড করেছি!” “উত্তমদা বলতেন, তুই চোখে তাকাবি না, আমি কথা ভুলে যাই!”— মহানায়কের স্মৃতিচারণায় সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের অকপট স্বীকারোক্তি! ফাঁস করলেন অজানা অনেক কথা, যেগুলি এতদিন ছিল গোপন!

টলিউডের স্বর্ণযুগে মহানায়িকার পর সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের (Sabitri Chatterjee) নাম আজও আলোচিত। তিনি ছিলেন এমন এক নায়িকা, যিনি শুধু নায়ক-নির্ভর ছবিতে সীমাবদ্ধ থাকেননি। বরং নিজের অভিনয়ের জোরেই দর্শকদের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছিলেন। হাস্যরসাত্মক দৃশ্য থেকে শুরু করে আবেগঘন চরিত্র, সবকিছুতেই সমান দক্ষতায় তিনি মুগ্ধ করেছেন প্রজন্মের পর প্রজন্মকে। উত্তম কুমারের (Uttam Kumar) সঙ্গে তাঁর রসায়ন যেমন ছিল অবিস্মরণীয়, তেমনি তাঁদের বন্ধুত্বও ছিল অনেকের ঈর্ষার কারণ। শোনা যায়, তিনি ব্যক্তিগত জীবনে উত্তমকে ভীষণ ভালবেসেছিলেন।

কিন্তু সেই ভালবাসা সম্পর্কে পরিণত না হলেও, জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তিনি সেই অনুভূতিকে সম্মান জানিয়ে একা পথ চলাই বেছে নিয়েছেন। তাই আজ নব্বই ছুঁইছুঁই বয়সেও তিনি রয়ে গেছেন অবিবাহিতা। অন্যদিকে, এই প্রজন্মের দর্শকের কাছে সাবিত্রী আবারও ফিরে আসছেন ছোট পর্দার হাত ধরে। সান বাংলার জনপ্রিয় গেম শো ‘লাখ টাকার লক্ষ্মীলাভ’–এর নতুন প্রোমোতে দেখা মিলেছে তাঁর। অভিনেত্রীর উপস্থিতি ইতিমধ্যেই আলোড়ন তুলেছে দর্শকমহলে। সাবিত্রী দেবীকে এদিন দেখা গেল উজ্জ্বল লাল রঙের পোশাক আর ওনার স্টাইলের মেকআপে, একেবারে সবসময়ের মতো প্রাণবন্ত।

সঞ্চালিকা অভিনেত্রীকে প্রশ্ন করেন তাঁর কেমন লাগছে এই অনুষ্ঠানে এসে? সাবিত্রী দেবীর উত্তর, “আমাকে জানানো হয়েছিল যে একটা খাঁচার মধ্যে টাকা উড়বে আর আমাকে ধরতে হবে। আমি বলে দিয়েছি পারব না, উড়ন্ত টাকা আর দুরন্ত নায়ক আমি চিরকাল এভয়েড করেছি! শান্ত নায়করা আমার বেশি পছন্দ। তাঁরা ভাবতে পারে, সময় বের করতে পারে। চঞ্চল বেশিদিন টেকে না!” এছাড়াও অভিনয়ের প্রথমদিন নিয়ে খোলাখুলি কিছু অজানা কথাও তিনি জানিয়েছেন। যেমন একবার থিয়েটারে তাঁর অভিনয় দেখে সরযূবালা দেবী মুগ্ধ হয়ে যান।

পরবর্তীতে নিজের ছবির পরিচালককে সাবিত্রী দেবীকে তার চরিত্রটি দিতে বলেন। সেই চরিত্র যার নাম ‘শ্যামলী’ আজও আপামর সিনেমাপ্রেমীদের মনে জীবন্ত। এমনকি উত্তম কুমারের সঙ্গেও তাঁর প্রথম আলাপ এই ছবির মাধ্যমেই। এদিন তিনি জানালেন, “উত্তম দার সঙ্গে আমি সব থেকে বেশি ছবি করেছি! তুমি একটা কথাই বলতেন, সাবু তুই ডায়লগ বলার সময় আমার চোখের দিকে তাকাবি না। কারণ জিজ্ঞেস করতেই বলেছিলেন, আমি তোর চোখে তাকালে ডায়লগ ভুলে যাই। জানতে চেয়েছিলাম যে প্রেমের দৃশ্যে তো তাকাতেই হবে!

আরও পড়ুনঃ “বাংলায় এত অবাঙালিয়ানার রমরমা কেন হবে?” “বাংলার সংস্কৃতির ক্ষতি করে অবাঙালিদের ট্রেন্ডিং এক্সপেরিমেন্টই আমার আপত্তি!”— মহালয়ার শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়!

বুকে মাথা না রেখে প্রেম হবে কী করে? তখনও বললেন যে, তুই তাকালে আমি কথা ভুলে যাই!” মঞ্চে কিংবদন্তি অভিনেত্রীর এই কথায় ওঠে হাসির ঝড়। প্রোমোতে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আরও দুই কিংবদন্তি অভিনেত্রী লিলি চক্রবর্তী ও অনামিকা সাহা। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক সুদীপ্তা চক্রবর্তী তাঁর প্রাণবন্ত ভঙ্গিতে যেন নতুন মাত্রা দিয়েছেন। ফলে এই মঞ্চ শুধু প্রতিযোগিতার নয়, বরং একসঙ্গে তিন প্রজন্মের স্মৃতি, অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়ে উঠছে। এ যেন বাংলার চলচ্চিত্রের ইতিহাসকে নতুন করে ছুঁয়ে দেখার এক বিরল সুযোগ।

You cannot copy content of this page