সিনেমার পর্দায় তিনি কখনও হাসির ছলে ছায়া, কখনও আবার দৃঢ় চরিত্রে প্রাণ সঞ্চার করেছেন। দর্শকরা তাঁকে এক নামেই চেনেন—দেবরঞ্জন নাগ। অভিনয়ের পাশাপাশি তাঁর জীবনের নানা অভিজ্ঞতা আজও অনেকের কাছে অজানা। অভিনেতার জন্ম ও বেড়ে ওঠা কলকাতায়। অল্প বয়স থেকেই নাটকের প্রতি ঝোঁক ছিল তাঁর। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন নাট্যদলে অভিনয় শুরু করেন। তখনই বুঝতে পারেন, অভিনয়ই তাঁর ভবিষ্যতের পরিচয় হতে চলেছে। তবে পরিবারে শুরুতে একটু আপত্তি ছিল। অনেকেই চাইতেন তিনি অন্য কোনও নিরাপদ পেশায় যান। কিন্তু জেদ আর ভালোলাগা—দুটো মিলিয়ে তিনি থেমে থাকেননি।
টেলিভিশনে তাঁর প্রথম বড় সুযোগ আসে জনপ্রিয় ধারাবাহিকের মাধ্যমে। চরিত্রটি ছোট হলেও সেখান থেকেই দর্শকরা তাঁর মুখ চিনে নিতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে বড় চরিত্র, নতুন চ্যালেঞ্জ—সবই তাঁর জীবনে আসে একে একে। বর্তমান সময়ের কথা বলতে গিয়ে অভিনেতা জানান, আজকের দিনে টলিউডের পরিস্থিতি আগের মতো নেই, আসলে টলিউড কোনদিনও ইন্ডাস্ট্রি হয়ে ওঠেনি। অভিনয়ের জগতে সুযোগ পাওয়া যেমন কঠিন, তেমনই ধারাবাহিকভাবে কাজ পাওয়া আরও বেশি কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি অকপটে জানিয়েছেন, “একসময় টেলিভিশনে প্রচুর কাজ হত, এখন আগের সেই অবস্থা নেই। অনেক সময় দীর্ঘদিন কোনও কাজ পাওয়া যায় না।”
তিনি মনে করেন, বর্তমানে টলিউডে নতুনদের জন্য যেমন চ্যালেঞ্জ রয়েছে, ঠিক তেমনই অভিজ্ঞ অভিনেতারাও সমস্যার মুখে পড়ছেন। প্রতিটি চরিত্রের জন্য লড়াই করতে হয়, এমনকি ছোট চরিত্রও সহজে পাওয়া যায় না। তাঁর মতে, এই অবস্থা শুধু তাঁর নয়, ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
দেবরঞ্জনের অভিজ্ঞতা বলছে, ধারাবাহিক বা ওয়েব সিরিজে কাজের সুযোগ যতটা সীমিত হয়ে পড়েছে, ততটাই বেড়েছে প্রতিযোগিতা। আগে যেখানে নিয়মিত কাজ করা যেত, এখন সেখানে কয়েক মাস কাজ না থাকার ঘটনা সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর মতে, এই অনিশ্চয়তা মানসিক চাপও বাড়িয়ে দেয়।
আরও পড়ুনঃ “শুভাশিসের কথায় ‘হরিদাস পাল’ নই বলেই এখনও রাজনীতিবিদ হইনি!” “অভিনেতাদের নেতা হওয়ার দরকার নেই, কিন্তু কাজ করেছি বলেই মানুষ তিনবার জিতিয়েছে!”— অভিনেতাদের রাজনীতিতে আসা নিয়ে শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্যে, জোরালো প্রতিক্রিয়া চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর!
তবুও তিনি আশা হারাননি। দেবরঞ্জনের বিশ্বাস, ইন্ডাস্ট্রির এই কঠিন পরিস্থিতি একদিন বদলাবে। তাঁর নিজের কথায়, “কাজ না পেলেও হাল ছাড়িনি। আমি চাই সামনে আরও ভালো চরিত্রে কাজ করার সুযোগ আসুক।” অভিনয়কে তিনি কেবল পেশা নয়, নিজের পরিচয় হিসেবেই মানেন এবং ভবিষ্যতে আরও সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন।