“দুই দেশের আলাদা সীমানা, কিন্তু ভালোবাসা এক”— কলকাতায় তাসনিয়া ফারিণের খোলামেলা আড্ডা
তাসনিয়া ফারিণের কলকাতা সফর: আফসোস, আশার আলো আর নতুন স্বপ্ন
রবিবারের এক অলস সকালে পার্ক সার্কাসের এক অতিথিশালায় হাসিমুখে বসে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। অবশেষে তিনি কলকাতায়! দেবের নায়িকা হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হলেও মনখারাপ নয় তাঁর। বরং কোয়েল মল্লিকের ‘স্বার্থপর’ দেখে মুগ্ধ তাসনিয়া, আফসোস— এমন ভালো ছবি কেন বেশি তৈরি হয় না! শহরে পৌঁছে আলোকোজ্জ্বল কলকাতাকে দেখে মুগ্ধ ফারিণের মুখে একটাই কথা, “এ শহর যেন অপরূপা!”
এই সফরের মূল উদ্দেশ্য অবশ্য শুধু বেড়ানো নয়— কাজও আছে সমান তালে। দীর্ঘদিন ধরে কলকাতার পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তিনি। তবে ভিসা জটিলতায় একটা ছবির কাজ হাতছাড়া হয়েছে। সেই আক্ষেপ ঝেড়ে এখন নতুন প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা চলছে বহুদিন ধরেই, যদিও প্রকল্পটি নিয়ে এখনই কিছু স্পষ্ট করতে চান না তিনি। “চঞ্চলদা থাকবেন কি না জানি না, তবে টোনিদার সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি,” বললেন তিনি।
বাংলাদেশের বর্তমান চলচ্চিত্রের পরিবর্তন নিয়েও আশাবাদী তাসনিয়া। তাঁর মতে, এখন ওখানকার বাজেট বেড়েছে, গল্পে এসেছে বৈচিত্র্য, এবং প্রযোজনায় পেশাদারিত্ব। “আগে যে গল্প বলা হতো না, এখন তা সাহসের সঙ্গে বলা হচ্ছে,” বললেন তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। টলিউড ও ঢালিউডের কাজের ধরণে পার্থক্য থাকলেও, ভাষা ও আবেগে কোনও ফারাক দেখেন না তিনি— “একই ভাষা, একই অনুভূতি— আমরা এক।”
নারীশক্তির প্রতিনিধিত্ব নিয়েও খোলামেলা মত দিয়েছেন তাসনিয়া। তাঁর কথায়, “নায়িকাদের লড়াই এখনও চলছে। আমাদের এক টাকা পারিশ্রমিক বাড়াতেও কষ্ট হয়, অথচ নতুন নায়ক দুটো হিট দিয়ে দর বাড়িয়ে ফেলেন।” তবু তিনি আশার কথা শোনান— কোয়েল মল্লিকের মতো শিল্পীরা পথ দেখাচ্ছেন। “‘স্বার্থপর’ দেখেছি, এমন সাহসী ছবি আরও হওয়া উচিত,” বলেন তিনি দৃঢ় কণ্ঠে।
আরও পড়ুনঃ টিআরপিতে ফের জি বাংলার দাপট, দাগ কাটতে ব্যর্থ স্টার জলসা! ‘পরিণীতা’-র দাপটে কাঁপছে ‘পরশুরাম’! সমানে টক্কর দিচ্ছে ‘জগদ্ধাত্রী’, পিছিয়ে পড়ল ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’! সেরা পাঁচে এবার কে কোথায়?
বিয়ে, বিতর্ক, কিংবা ক্যারিয়ারের চাপ— কিছুই তাঁকে দমাতে পারে না। নিজের মতো করে জীবন বাঁচছেন তাসনিয়া। “বিয়ের পরও কাজ বেড়েছে,” বললেন হেসে। আর ভবিষ্যতের পরিকল্পনা? “সব ধারার ছবিতে কাজ করতে চাই। মশালা হোক বা নারীকেন্দ্রিক— প্রতিটি চরিত্রই নতুন অভিজ্ঞতা।” অবশেষে একটিই বার্তা রেখে গেলেন তিনি— “দুই দেশের আলাদা সীমানা থাকলেও, আমাদের সংস্কৃতি ও ভালোবাসা এক। এই আদানপ্রদানই হোক আমাদের শক্তি।”






