“মায়ের বড় অসুখ…মানসিক হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে”— ভেঙে পড়ে জানালেন অভিনেত্রী দিয়া মুখোপাধ্যায়! যাকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারেন না দিয়া, সেই মানুষটার সঙ্গে কী এমন ঘটেছে?

বাংলা টেলিভিশনের অভিনেত্রী ‘দিয়া মুখোপাধ্যায়’কে (Diya Mukherjee) এখন আর কেউ চেনেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। দর্শকদের কাছে তিনি আজও সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘মিঠাই’ ধারাবাহিকের ‘শ্রীতমা’ নামেই। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের সঙ্গে বেড়ে ওঠা দিয়ার পথটা সহজ ছিল না, কিন্তু তাঁর স্বাভাবিক অভিনয় আর হাসিমুখই তাঁকে এনে দিয়েছে আলাদা জায়গা। ছোট পর্দার পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামেও দিয়া এখন এক জনপ্রিয় নাম। প্রতিদিনই নতুন লুক, নতুন রিল— অনুরাগীদের সঙ্গে নিজের মুহূর্ত ভাগ করে নিতে তিনি ভালোবাসেন।

শুরুটা শিশু শিল্পী হিসেবে হলেও, দিয়া একের পর এক জনপ্রিয় ধারাবাহিকে নিজের প্রতিভার ছাপ রেখে গেছেন। ‘যোশ’, ‘অগ্নিজল’ থেকে শুরু করে ‘এক মাসের গল্প’— প্রতিটি ধারাবাহিকে ভিন্ন চরিত্রে তাঁর অভিনয় দর্শকের মনে ছাপ ফেলেছে। সম্প্রতি শেষ হওয়া ‘কথা’ ধারাবাহিকে ‘জুনি’ চরিত্রে তাঁর সংবেদনশীল অভিনয় আবারও প্রশংসা কুড়িয়েছে। দর্শকদের কাছে তাঁর আকর্ষণ শুধু রূপে নয়, মনের দিক থেকেও। তাঁর কথা, হাসি, আচরণ— সবেতেই আছে একধরনের আন্তরিকতা ও শিশুসুলভ সরলতা, যা তাঁকে করে তুলেছে আরও আপন।

তবে গ্ল্যামার দুনিয়ার বাইরে দিয়ার জীবন কিন্তু বেশ নিঃশব্দ! প্রসঙ্গত, কাজের সূত্রে এখন তিনি টলিগঞ্জে একাই থাকেন। বাড়ি মধ্যমগ্রামে হলেও পেশার টানে পরিবার থেকে অনেকটা দূরে। খুব একটা বড় বন্ধু মহল নেই তাঁর, তাই ফাঁকা সময়ে নিজের গাড়িকেই সঙ্গী করে শহরের রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। মায়ের আদরে বড় হওয়া মেয়েটি রান্নাবান্নায় তেমন পটু নন, তাই কলকাতার ব্যস্ত জীবনে নিজের খাওয়াদাওয়া নিয়েও মাঝেমধ্যে ঝামেলা পোহাতে হয় তাঁকে। দিয়ার জীবনে এখনও প্রবেশ করেনি তাঁর মনের মানুষটি।

কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন, ভাগ্য একদিন ঠিক তাঁর ভালোবাসার মানুষটিকে সামনে এনে দেবে। তাঁর জীবনটায় পরিবারই সবচেয়ে বড় জায়গা দখল করে আছে, বিশেষ করে মা। মা-ই তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু, তাঁর জীবনের প্রেরণা। কিন্তু এই প্রিয় মানুষটিকেই কিছুদিন আগে এক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। ঠিক কি হয়েছিল? সম্প্রতি জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘দিদি নম্বর ওয়ানে’ মাকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তিনি। সেখানেই দিয়া নিজের জীবনের সেই কঠিন সময়ের কথা প্রকাশ্যে আনেন।

আরও পড়ুনঃ ২০২৫-এ দাঁড়িয়েও নারীর অবস্থান সেই অর্থে বদলায়নি! মেয়েদের এক টাকা পারিশ্রমিক বাড়াতে অনেকটা পথ পেরোতে হয়! সেখানে নতুন নায়ক দুটো ছবি করেই পারিশ্রমিক বাড়িয়ে ফেলেন! আজও পুরুষ-নারীতে এটাই পার্থক্য, অকপট জনপ্রিয় নায়িকা

তিনি জানান, বিগত কিছুদিন যাবত মাকে মেন্টাল অ্যাসাইলামে থাকতে হয়েছে! তাঁর মা একসময় মানসিকভাবে ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন। দাদুর মৃ’ত্যুর পর সেই শোক সামলাতে না পেরে বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হন তিনি, তাঁকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুটিংয়ের ব্যস্ততায় মায়ের পাশে সবসময় থাকতে পারেননি দিয়া, তাই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলেন। তবে এখন তাঁর মা অনেকটাই সুস্থ, চিকিৎসা চলছে নিয়মিত। মায়ের হাসিই এখন তাঁর সবচেয়ে বড় প্রেরণা, আর সেই হাসিই তাঁকে আবার নতুন করে লড়াইয়ের শক্তি দিচ্ছে।

You cannot copy content of this page