‘বাংলা সাহিত্য সোনার খনি’! “আমাদের যা দরকার তা শুধু নিজের জায়গা থেকেই খুজে বের করতে হবে। আমাদের অন্য কোথাও তাকানোর প্রয়োজন নেই, বোম্বে হোক বা অন্য কোথাও।”- অকপট অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক! অভিনেতার বার্তা কি বদলে দেবে বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ?

বাংলার সাহিত্য শতাব্দী ধরে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। সাহিত্য শুধু গল্প নয়, এটি আমাদের জীবনের অনুভূতি, সমাজের প্রতিচ্ছবি এবং মানুষের মানসিকতার আয়না। সেলুলয়েডে বা বড় পর্দায় যতবারই বাংলা সাহিত্য উঠে আসে, দর্শকরা তা শুধুই বিনোদনের জন্য নয়, বরং হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে শরৎচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়—প্রত্যেক লেখকের গল্প আমাদের জীবনের নানা দিককে স্পর্শ করেছে।

টলিউডের সিনেমা ইতিহাসে বাংলা সাহিত্যের প্রভাব অনস্বীকার্য। বহু হিট সিনেমা সাহিত্যিক কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছে। গল্পের মূল ভাব, চরিত্রের গভীরতা এবং মানবিক সংবেদনশীলতা—এসবই সাহিত্য থেকে নেওয়া হয়ে থাকে। বাংলা সিনেমার সৌন্দর্য এখানেই যে, গল্প যেমন দর্শকের চোখে আনন্দ আনে, তেমনি মনের গভীরতায় ছাপ ফেলে। ফলে সাহিত্য এবং সিনেমা একে অপরের পরিপূরক হয়ে ওঠে, যা বাংলা সংস্কৃতির অনন্য পরিচয়।

দশকের পর দশক ধরে টলিউডে নিজের বিশেষ স্থান করে নিয়েছেন রঞ্জিত মল্লিক। শুধু তার অভিনয় নয়, তার ব্যক্তিত্ব এবং কথার ধরনও দর্শকদের মুগ্ধ করে। বাঙালি দর্শক তাকে ভালোবেসে এসেছে একটি বিশ্বাসযোগ্য এবং প্রাণবন্ত চরিত্র হিসেবে। বিশেষ করে রঞ্জিত মল্লিক এবং কোয়েল মল্লিককে দীর্ঘ ২৬ বছর পর বড় পর্দায় দেখা গিয়েছে “স্বার্থপর” সিনেমার মাধ্যমে, যা তাদের ক্যারিয়ারের জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত।

সাম্প্রতিক এক ইন্টারভিউতে রঞ্জিত মল্লিক জানিয়েছেন, “বাংলার সাহিত্য এবং আমাদের সিনেমা একটি সোনার ভান্ডার। আমাদের যা দরকার তা খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের অন্য কোথাও তাকানোর প্রয়োজন নেই, বোম্বে হোক বা অন্য কোথাও।” তার কথায় স্পষ্ট হয়েছে যে, টলিউডের ভবিষ্যৎ বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হতে পারে। তিনি মনে করেন, শুধু গল্পের নকল নয়, বরং সাহিত্যের গভীরতা, চরিত্র এবং সামাজিক বার্তা সিনেমায় আনাই মূল চাবিকাঠি।

আরও পড়ুনঃ বাংলায় শুরু হতে না হতেই এবার হিন্দিতে! আসছে ‘ও মোর দরদিয়া’র হিন্দি রিমেক! নতুন রূপে ধরা দেবে বাণী ও অনিরুদ্ধের গল্প

এই ভাবনা টলিউডের সিনেমা নির্মাতাদের জন্য নতুন পথ দেখাচ্ছে। সাহিত্যকে বড় পর্দায় তুলে ধরে গল্পকে আরও প্রাণবন্ত করা সম্ভব। দর্শকরা এই মেলবন্ধনকে কেবল বিনোদন হিসেবে নেবেন না, বরং বাঙালির সংস্কৃতি, মূল্যবোধ এবং সাহিত্যিক ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হবেন। রঞ্জিত মল্লিকের এই মন্তব্য শুধু তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি নয়, বরং বাংলা সিনেমার ভবিষ্যতের দিকনির্দেশকও বটে।