স্টার জলসার ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) ধারাবাহিক কিছুদিন ধরেই অদ্ভুত এক অস্বস্তির ভেতর দিয়ে এগোচ্ছিল। বাইরে থেকে সবকিছু স্বাভাবিক দেখালেও বাবিলের আচরণে যে একটা ফাঁক তৈরি হচ্ছিল, সেটা দর্শকের চোখ এড়ায়নি। হঠাৎ মিটিলের ফোন না ধরা, সামনে পড়লে তাড়াহুড়ো, কথা বলায় আগ্রহের অভাব, এই ছোট ছোট বদলগুলো মিলেই একটা বড় প্রশ্ন তৈরি করেছিল। মিটিলের মতো মানুষ, যে নিজের জীবনটাকে বাবিলের এবং তার পরিবারে পাশে দাঁড়িয়েই কাটিয়ে দিল, সে-ই যেন ধীরে ধীরে তার কাছ থেকে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছিল।
এই দূরত্বটাই শেষমেশ ভয়ংকর সত্যের দিকে নিয়ে গেল গল্পটাকে! সম্প্রতি যে পর্বটা সম্প্রচারিত হয়েছে, সেখানে আর কোনও রাখঢাক না রেখেই বাবিল নিজেই সবটা সামনে এনে দিয়েছে। মিটিলকে নিয়ে কফি শপে বসে, হাত ধরে সে জানায় তার জীবনে অন্য একজন এসেছে! এই মুহূর্তটা এতটাই অপ্রত্যাশিত যে মিটিল বিশ্বাসই করতে পারে না। তার প্রথম প্রশ্নটাই ছিল, তাহলে কি তাদের বিয়েটা আর হচ্ছে না? বাবিলের উত্তরগুলো যেন আরও বেশি আঘাত করে! গানের দলের নতুন এক মেয়ের কথা বলে সে, যে নাকি আগে থেকেই তাকে পছন্দ করত।
বাবিলের দাবি, সে এতদিন পাত্তা না দিলেও কিন্তু এক রাতে প্রোগ্রামের পর নিজেকে সামলাতে পারেনি! সেই স্বীকারোক্তির সঙ্গে সঙ্গে মিটিলের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে! আর এতেই বাবিলের চরিত্র নিয়ে এতদিনের সন্দেহ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সে যে সবসময় নিজের কথাই আগে ভেবেছে, সেটা নতুন নয়। মিটিলের প্রতি তার নির্লিপ্ততা তাই হঠাৎ তৈরি হয়নি, বরং অনেকদিন ধরেই ভিতরে ভিতরে জমে উঠছিল। সম্পর্ক মানে যে দায়িত্ব, মানসিক উপস্থিতি আর সম্মান এই বোধটা বাবিলের মধ্যে অনুপস্থিত আর সেই অভাবটাই এবার নির্মমভাবে সামনে এলো।
মিটিল কখনও শুধু প্রেমিকা হয়ে থাকেনি, বাবিলের পরিবারের অংশ হয়ে উঠেছিল। নিজের চাওয়া-পাওয়াকে পিছনে রেখে সে সম্পর্কটাকে আগলে রাখতে চেয়েছে। অথচ সেই সম্পর্কই তাঁর জীবনের দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়ালো! তবে এই মোড় ঘিরে শুধু বাবিলের চরিত্র নয়, লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায়কেও কাঠগড়ায় তুলছেন দর্শকেরা! অনেক দর্শকই এই নতুন মোড়ে হতবাক এবং ক্ষুব্ধ। সমাজ মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন অনেকেই। কারও মতে, ধারাবাহিকটা ক্রমেই অশা’লীনতার দিকে যাচ্ছে। আবার কেউ বলছেন নেতিবাচক বিষয় দেখানোর এই প্রবণতা নতুন নয়।
আরও পড়ুনঃ কৃষ্ণ ভজন ও মা কালীর গানে আপত্তি, পরে হয়তো গানটাই কেড়ে নেবে!’ ‘সংখ্যায় কম তাই নিষেধাজ্ঞা, বাড়লে হাত উঠতেও পারে!’ শিল্প ধর্মের খাঁচায় বন্দি নয়! লগ্নজিতার পর, লোকসংগীতের মঞ্চে হেনস্থার শিকার শিল্পী মধুবন্তী মুখার্জী! ঠিক কী ঘটেছে?
সংবেদনশীল বিষয়গুলিকে খুব স্বাভাবিকভাবে দেখানো হচ্ছে বলেই অভিযোগ! কেউ বলছেন, “নোংরামির শেষ নেই যেন, এই সিরিয়েলের সবাই চরিত্রহীন!” তো আবার কেউ মন্তব্য করছেন, “পঁচা নর্দমা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ধারাবাহিকটা, গল্পই প্রমাণ করে দিচ্ছে, লেখিকার রুচি কতটা নিম্ন মানের!” বেশিরভাগ দর্শকই মনে করছেন, লেখিকা বরাবর এমন ধারাবাহিক লেখেন যেগুলি ব্যতিক্রমী হতে গিয়ে খারাপ দিকটাই বেশি তুলে ধরে। সেখানে পর’কীয়া, বিকৃত মানসিকতা এমনকি আ’ত্মহ’ত্যার মতো জিনিসগুলোও খুব স্বাভাবিকভাবে দেখানো হয়।






