‘আপনি তো অভিনেত্রী, অভিনেত্রীর মতো থাকুন! এখানে কেন এসেছেন!’ — পোষ্যকে বাঁচাতে গিয়ে চূড়ান্ত অপ’মানিত দেবশ্রী রায়, আবাসনে হুলস্থূল

পোষ্যপ্রেমের জন্য দেবশ্রী রায়ের পরিচয় নতুন নয়। পর্দার অভিনেত্রী তিনি, কিন্তু মাটির মানুষ হিসেবে প্রাণীদের জন্য তাঁর ভালোবাসা অনেক গভীর। বহু বছর ধরে তাঁর ‘দেবশ্রী রায় ফাউন্ডেশন’ পথকুকুরদের সুরক্ষা ও যত্নের দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু এবার সেই প্রাণপ্রেমই যেন তাঁকে ফেলল এক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। দক্ষিণ কলকাতার এক অভিজাত আবাসনে এক পোষ্য কুকুরকে ঘোরানো নিয়ে তৈরি হল প্রবল উত্তেজনা, আর সেই সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে অপমানের মুখে পড়লেন দেবশ্রী নিজে।

ঘটনা দক্ষিণ কলকাতার এক বৃহৎ আবাসনের, যেখানে পোষ্যদের বাইরে ঘোরানো নিয়ে বহু বাসিন্দার আপত্তি। আবাসনেরই এক দম্পতি, আদৃজা ও তাঁর স্বামী, নিজেদের কুকুরকে হাঁটাতে নিয়ে গেলে তাঁদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় অন্য বাসিন্দাদের। অভিযোগ, তাঁদের উপর চড়াওও হয় কয়েকজন। আর এই আদৃজা দেবশ্রীর ফাউন্ডেশনের একজন সক্রিয় সদস্য। তাঁর বিপদের খবর পেয়ে রবিবার বিকেলে দেবশ্রী নিজে হাজির হন ঘটনাস্থলে— কিন্তু তাঁকেও পেতে হয় অপমানের তির।

আবাসনের কিছু বাসিন্দা সরাসরি দেবশ্রীকে বলেন, “আপনি কে? আমাদের সমাজে এসে প্রশ্ন করছেন কেন?” এমনকি কেউ কেউ তাঁকে কটাক্ষ করে বলেন, “ইউ আর জাস্ট অ্যান অ্যাকট্রেস।” দেবশ্রীর প্রতি এই রূঢ় আচরণে চমকে যান উপস্থিত সবাই। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়, তবে অভিনেত্রীর ক্ষোভ তখনও স্পষ্ট।

দেবশ্রী জানান, “যখন শুনলাম, শান্তশিষ্ট একটি রিট্রিভার কুকুরকে নিয়ে এমন কাণ্ড হচ্ছে, তখন আমি চুপ থাকতে পারিনি। কেউ যদি প্রাণীর উপর অন্যায় করে, আমি ছুটে যাবই — এটা আমার দায়িত্ব।” তিনি আরও বলেন, “আমাকে বলা হচ্ছে, আমি অভিনেত্রী, তাই কেন এসেছি! কিন্তু আমি শুধু অভিনেত্রী নই, আমি একজন প্রাণপ্রেমী, বহু বছর ধরে প্রাণীকল্যাণের সঙ্গে যুক্ত।”

আরও পড়ুনঃ রণজয় থেকে শোভন রঙিন প্রেম জীবন সোহিনীর! ‘একটা সময় আমাদের সম্পর্ক ছিল…’, এবার অনির্বাণের সঙ্গে অতীত প্রেমকে সীলমোহর দিলেন জনপ্রিয় বাঙালি নায়িকা

সবশেষে দেবশ্রীর প্রশ্ন— “একটি কুকুর যদি শিবমন্দিরের সামনে হাঁটে, তাতে পাপ কোথায়? শিবের তো প্রিয় প্রাণ কুকুর! দেবতা কি শুধু মানুষের? পশু, পাখি, প্রকৃতি— এরা কি ঈশ্বরের সৃষ্টি নয়?” তাঁর এই বক্তব্য যেন শুধু এক ঘটনার প্রতিবাদ নয়, সমাজে প্রাণীদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির উপরও এক গভীর প্রশ্নচিহ্ন।

You cannot copy content of this page