মাতৃরূপে তিনি সেরা। পর্দার সেরা মা হয়ে উঠেছেন। কিন্তু বাস্তবে সেই সুখ না নিজে পেয়েছেন না নিজের স্বামীকে দিতে পেরেছেন এই অভিনেত্রী। আমরা কথা বলছি বাংলা টেলিভিশনের অনন্য অভিনেত্রী মৌসুমী সাহাকে নিয়ে।
অভিনেত্রী মৌসুমী সাহা বাংলা চলচ্চিত্র জগতের স্বনামধন্য অভিনেত্রী। এই যাবত বেশ কিছু হিট সিনেমা এবং ধারাবাহিক বাঙালি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন যেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভালো মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মৌসুমী। কখনো তিনি সুপারস্টার দেবের মা আবার কখনো হয়ে ওঠেন সোহম চক্রবর্তীর মা। কিন্তু এখন অবধি যে কয়টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন সেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেবের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মৌসুমী সাহা।
বড় পর্দা হোক কিংবা ছোট পর্দা সব ক্ষেত্রেই তিনি মমতাময়ী মাতৃরূপে দেখা দিয়েছেন। অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল ১৯৯০ সালে তরুন মজুমদারের ছবি “আপন আমার আপন” দিয়ে। তারপর একে একে চোখের বালি, প্রেমের কাহিনী, প্রেম আমার, পরান যায় জ্বলিয়া রে, দুজনে, বলো না তুমি আমার, নটবর নট আউট, ওয়ান্টেড, সেদিন দেখা হয়েছিল, যোদ্ধা, পাগলু ২, তোর নাম, রংবাজ, বেশ করেছি প্রেম করেছি ইত্যাদি হিটের পর হিট সিনেমায় অভিনয় করে গেছেন।
জন্মভূমি ধারাবাহিকের হাত ধরে ছোট পর্দায় অভিষেক হয়েছে মৌসুমী সাহার। তারপর ধন্যি মেয়ে, দীপ জ্বেলে যাই, খোকাবাবু, বিকেলে ভোরের ফুল, গুড়িয়া যেখানে গুড্ডু সেখানে, দুর্গা দুর্গেশ্বরী, কপালকুণ্ডলা, খোকাবাবু, গঙ্গারাম এবং বর্তমানে গৌরী এলো, খেলাঘর ধারাবাহিকের অভিনয় করেছেন। এদিকে স্টার জলসায় একেবারে নতুন শুরু হওয়া ধারাবাহিক মাধবীলতাতে মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করছেন তিনি।
তবে অভিনয় জীবন যেমন সামলেছেন তেমনি শাশুড়ি মা আর স্বামীকে নিয়ে সংসার জীবন সামলেছেন তিনি। মৌসুমির হাতের রান্না ছাড়া নাকি শাশুড়ি আর স্বামী খেতে চান না। তাই দুইবেলা দুজনের ফরমায়েশ অনুযায়ী রান্না করতে হয় নায়িকাকে। ভোর সাড়ে চারটেয় উঠে রান্না করা শুরু করে দেন। বাড়ির পরিচারিকা এলে ভালো নইলে ঘর মোছা সবকিছু নিজেই করেন। তারপর রান্না করে খেয়ে শুটিংয়ে যান নিজে। বাড়ি এসে এবার রাত্রিবেলার জন্য রুটি-তরকারি রান্না করতে হয় নায়িকাকেই। কিন্তু এভাবেই সুখে সংসার করছেন মৌসুমী।
দুঃখের বিষয় একটাই এত সিনেমা এবং ধারাবাহিকে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, এত মানুষকে আনন্দ দিয়েছেন তবে নিজে সেই মাতৃসুখ লাভ করতে পারেননি। বঞ্চিত থেকেছেন মাতৃত্ব থেকে। কেন মা হতে পারেননি তা আজও স্পষ্ট নয়। হয়তো কোথাও মনের গভীরে নিশ্চয়ই এই ক্ষত রয়ে গেছে নায়িকার।