“পার্টি না দিলে, মদ না খাওয়ালে সেই সময় মিডিয়া ছবি ছাপাতো না, পাবলিসিটিও পাওয়া যেত না!”— অকপট স্বীকারোক্তি অনামিকা সাহার! ফাঁস করলেন সেই সময়ের পাবলিসিটি পাওয়ার গোপন নিয়ম! অভিনেত্রী জানালেন কীভাবে সম্মান বাঁচাতে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এই প্রলোভন!

বিনোদন জগৎ মানেই ঝলমলে আলো, ক্যামেরার ফ্ল্যাশ আর গ্ল্যামার। কিন্তু এই উজ্জ্বল দুনিয়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকে বহু অজানা গল্প, যেগুলো খুব কম মানুষই জানে। সিনেমা জগতে টিকে থাকতে গেলে শুধু প্রতিভা নয়, দরকার সংযোগ, পাবলিসিটি, এবং কখনও কখনও কিছু আপসও— এমনটাই শুনে আসা হয় বছরের পর বছর ধরে। তবে এই নিয়মের ব্যতিক্রমও ছিলেন অনেকেই, যারা কখনও নিজের মর্যাদা বিসর্জন দিয়ে আলোচনায় আসার পথ বেছে নেননি।

বাংলা সিনেমার এমনই এক উজ্জ্বল নাম অনামিকা সাহা। টলিউডের পুরোনো দিনের খলনায়িকাদের মধ্যে অন্যতম তিনি। ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ সিনেমার মাধ্যমে দর্শকের মনে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এই সাফল্যের পেছনে ছিল কঠোর পরিশ্রম, আত্মসম্মান, আর নিজের নীতিতে অবিচল থাকার এক শক্ত ভিত। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি শেয়ার করেছেন এমনই এক অভিজ্ঞতার কথা, যা আজকের দিনে বহু নবাগত শিল্পীর জন্য শিক্ষা হয়ে উঠতে পারে।

অভিনেত্রী জানান, যখন তিনি প্রথম দিকের সিনেমায় কাজ করছিলেন, তখন একটি ছবির শুটিংয়ের জন্য বোলপুর শান্তিনিকেতনে গিয়েছিলেন পুরো টিম নিয়ে। সেই সময় ছবির পরিচালক এক প্রেস মিটের আয়োজন করেন। সেখানেই অনামিকার সঙ্গে দেখা হয় কয়েকজন সাংবাদিকের। তাঁদের মধ্যে একজন তাঁকে সরাসরি বলেন, “আপনি নিজেই পার্টির আয়োজন করুন, আমাদের ডাকুন। নয়তো মানুষ জানবে কী করে আপনি কোন সিনেমায় কি কাজ করছেন!” সাংবাদিক আরও বলেন, “পার্টি না দিলে এই জগতে কিছু করা যায় না।” কিন্তু অনামিকা তাতে রাজি হননি।

এরপর আসে তাঁর জীবনের মোড় ঘোরানো সময়— ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ মুক্তি পাওয়ার পর সিনেমাটি বিপুল সাফল্য পায়। সেই উপলক্ষে আয়োজিত পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন সেই সাংবাদিকরাই। তাঁরা অনামিকার সঙ্গে ছবি তুলতে চাইলে তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, “আমি আপনাদের কোনওদিনই পার্টি দেব না, মদ খাওয়াব না। আমার পাবলিসিটির প্রয়োজন নেই। যদি আমার মধ্যে কিছু থেকে থাকে, দর্শক নিজেরাই আমাকে ভালোবাসবে।”

আরও পড়ুনঃ “ইন্ডাস্ট্রিতে কারোর সঙ্গেই আমার বন্ধুত্ব হয়নি, একজনই পরম বন্ধু আছে!” খ্যাতনামা অভিনেতাদের সঙ্গে অভিনয় করেও, ইন্ডাস্ট্রিতে আজ‌ও বন্ধুহীন স্বর্ণযুগের দাপুটে অভিনেত্রী অঞ্জন-কন্যা চুমকি চৌধুরী!

আজও সেই কথাগুলো যেন অনামিকা সাহার জীবনের প্রতিচ্ছবি। তিনি প্রমাণ করেছেন, বিনোদন দুনিয়ায় টিকে থাকতে গেলে শুধু গ্ল্যামার নয়, প্রয়োজন প্রতিভা আর আত্মসম্মান। দর্শকের ভালোবাসা পার্টি দিয়ে কেনা যায় না, সেটি নিজের যোগ্যতা ও অভিনয়ের মাধ্যমে দেখিয়েছেন অনামিকা সাহা।

You cannot copy content of this page