‘কালো মেয়েরা কোনদিনও হিরোইন হতে পারে না’, প্রতিভা থাকা সত্বেও গায়ের রং এর জন্য, অভিনেত্রী মহুয়া হালদার ‘মা’ বা ‘পিসিমা’র ভূমিকায় সীমাবদ্ধ! ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে চিরকাল সহ্য করতে হয়েছে অপমান!

বিনোদন জগতে যুগ পরিবর্তন হলেও, অনেক ক্ষেত্রেই গায়ের রং এখনও একটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করছে। অভিনেতা বা অভিনেত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিভার চেয়ে অনেক সময় রঙ বা লুককেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই প্রথা শুধু পুরোনো নয়, বর্তমান যুগেও টেলিভিশন, সিনেমা বা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এই ধরনের বৈষম্যের দেখা মেলে। দর্শক কিংবা প্রোডিউসারদের চোখে কখনো কখনো কালো গায়ের অভিনেত্রীদেরকে হিরোইন হিসেবে ভাবাই কঠিন হয়ে ওঠে।

এরই মধ্যে নাম উঠে আসে অভিনেত্রী মহুয়া হালদারের। বহু চরিত্রে অভিনয় করে তিনি দর্শকদের মন জয় করেছেন। অনেক আগে থেকেই অভিনয়কে প্যাশন হিসেবে গ্রহণ করা মহুয়া টেলিভিশন নাটক এবং ধারাবাহিকে সমান দক্ষতা দেখিয়েছেন। প্রতিটি চরিত্রের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতি ফুটিয়ে তোলার তার ক্ষমতা দর্শক এবং সমালোচকদের কাছেও প্রশংসিত হয়েছে।

যদিও মহুয়ার অভিনয় প্রতিভা অতুলনীয়, তবুও তাকে কখনো লিড চরিত্রে দেখা যায়নি। প্রায়শই তিনি মা, পিসিমা বা অন্যান্য পার্শ্ববর্তী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এমনকি বহু প্রজেক্টে তার দক্ষতা সত্ত্বেও তাকে মূল চরিত্রে নেওয়া হয়নি। এই বাস্তবতা অনেক সময় অভিনেত্রীদের জন্য হতাশাজনক হলেও মহুয়া সবসময় নিজের কাজের প্রতি নিবেদিত থেকেছেন।

আরও পড়ুনঃ তিন সন্তানের মা বলে অপ’বিত্র! সত্যনারায়ণ পুজোয় কমলিনীর হাতের সিন্নি খেতে না! স্বতন্ত্রর মধ্যবয়স্ক নারীর বিয়েকে ঘিরে প্রতিবেশী মহিলাদের ক’টূক্তি! ‘চিরসখা’র পর্বে সমাজের মানসিকতার ন’গ্ন প্রকাশ! সামাজিক সংকীর্ণতার এই দৃশ্য প্রশ্ন তুলেছে, আমরা আসলে কতটা বদলেছি?

মহুয়া হালদার জানিয়েছেন, বিনোদন জগতে আসার পর অনেক প্রোডিউসার ও সিনিয়ারদের মুখ থেকেও তাকে শুনতে হয়েছে, “কালো মেয়েরা হিরোইন হতে পারে না।” এই ধরনের মন্তব্য শুধুমাত্র বডি শেমিং নয়, বরং পেশাদার জীবনে বড় বাধা সৃষ্টি করেছে। তবুও মহুয়া আত্মবিশ্বাস হারাননি এবং প্রতিটি চরিত্রে তার সেরাটা দিয়ে চলেছেন।

মহুয়া হালদারের গল্প প্রমাণ করে, প্রতিভা এবং ধৈর্যই শেষ পর্যন্ত স্বীকৃতি পায়। তিনি এখন দর্শক ও সহকর্মীদের দ্বারা সন্মানিত। বিনোদন জগতে রঙের বৈষম্য কমাতে যদিও সময় লাগবে, তবুও মহুয়ার মতো অভিনেত্রী প্রমাণ করছেন যে, প্রতিভা সব সময়ে সামনে আসে।

You cannot copy content of this page