বাংলা টেলিভিশনে বহু জুটি এসেছে আর গেছে, কিন্তু ‘রাজা গোস্বামী’ (Raja Goswami) এবং ‘মধুবনী গোস্বামী’ (Madhubani Goswami) এখনও দর্শকের মনে নিজেদের জুটিকে নিয়ে আলাদা ভাবে জায়গা করে রেখেছেন। আজও হাজার ব্যস্ততার মাঝে দু’জনেই নিজেদের সংসার জীবনকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেন আর সেই ভারসাম্যটাই তাদের সম্পর্কের একটা বড় শক্তি। একসঙ্গে থাকা মানে যে সবসময় মসৃণ পথ নয়, সেটা তাঁরা বোঝেন। তবু তাদের সম্পর্কের স্থায়িত্ব কারোর নজর এড়ায় না।
প্রসঙ্গত, তাদের প্রেমের শুরুটা হয়েছিল প্রথম ধারাবাহিকের সেটেই। তবে বিয়ের পর সম্পর্কটা যেন নতুন এক পরিণতি পেয়েছে। বিয়ে তো অনেকেরই হয়, কিন্তু বিয়ের পর দুইজন কতটা নিজেদের মতো করে পথ তৈরি করতে পারেন, সেই জায়গাটাও গুরুত্বপূর্ণ। এই দম্পতি সেই জায়গায় নিজেদের মতো করে ছন্দ খুঁজে নিয়েছেন। তাঁদের চারপাশের আলোচনাও কখনও কখনও চাপ তৈরি করে, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে তাঁরা সেই প্রভাবটা ঢুকতে দেন না।
পেশাগত দিক থেকেও পরিবর্তন এসেছে সময়ের সাথে। রাজা অভিনয়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে তাঁকে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে, মধুবনী আপাতত অভিনয়ের বাইরে থাকলেও, নিজের পার্লারের থেকে ইউটিউব চ্যানেল আর মাঝেমধ্যেই নতুন পরিকল্পনা নিয়ে তিনি নিজের পরিচয়কে অন্যভাবে গড়ে তুলছেন। তাঁদের ‘রাজা মধুবনী কালেকশন’ ব্যাগের ব্যবসাটাও এই চেষ্টারই একটা ফল।
একটি ছোট সন্তানকে বড় করা, পেশার দায়িত্ব এবং নিজেদের ব্যক্তিগত সময়, সব মিলিয়ে জীবনকে আলাদা করে সাজাতে হয়। তাঁদের ছেলে কেশব এখন স্কুলে যাচ্ছে আর তার যত্নে দু’জনকেই সময় বের করতে হয়। মাঝেমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের নানা কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে আলোচনা বা সমালোচনা হয় ঠিকই, কিন্তু তাতে সম্পর্কের ভিত নড়ে গিয়েছে, এমনটা দেখা যায়নি। বরং দিনযাপনের ছোট ছোট দায়িত্বগুলো তাঁরা ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুনঃ “অহেতুক কোনও চিত্রনাট্যে যদি চুম্বন দৃশ্য থাকে সেটা করতে পারব না! এর সঙ্গে বিবাহিত বা অবিবাহিত হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।”- কড়া সিদ্ধান্ত শ্রুতি দাসের
সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠলে রাজা সম্প্রতি একটি কথা বলেছেন, যা আজকের সময়ের অনেক সম্পর্কের বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করে। তাঁর কথায়, “মানুষ যত উপরে উঠছে, তাঁর বাড়ির তলা ততই বাড়ছে আর সম্পর্কের গভীরতা আরও কমছে। ভিত নড়বড়ে হলে, তখন ভাঙন তো হবেই!” তাঁর এই মতামতটিতে আজকের দ্রুত বদলে যাওয়া সম্পর্কের চিত্রটা স্পষ্ট। মূলত তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, সম্পর্ক বাঁচিয়ে রাখতে হলে বাইরের সাফল্যের ভিড়ে ভিতটাকে শক্ত রাখা জরুরি। আর হয়তো সেই কারণেই রাজা-মধুবনীর সম্পর্ক অন্য অনেক তারকার বিচ্ছেদের খবরের মাঝেও আলাদা আলো হয়ে থাকে।






