কেন বম্বে ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন সন্ধ্যা? লতাজির সঙ্গে টক্করই কি একমাত্র কারণ? 

৯০ বছর বয়সে সংগীত জগতকে অভিভাবকহীন করে চলে গেলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। বিদায়বেলায় অনুরাগীদের চোখের জলে স্বর্ণালী সন্ধ্যা স্মৃতির পাতায় থেকে গেল। এমনভাবেই মুম্বই (তখনকার বম্বে) শহরকে বিদায় জানান গায়িকা। কিন্তু কেনো?

উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খান-এর একনিষ্ঠ ছাত্রী সন্ধ্যা ১৯৫০ সালে গেলেন বম্বে। সুরকার অনিল বিশ্বাস-এর নির্দেশনায় ‘তারানা’ ফিল্মে প্রথমবার হিন্দিতে প্লে-ব‍্যাক করেন। এই ফিল্মে গাইতে গিয়েই লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে পরিচয় হয়। ‘তু বোল পাপিহে বোল’ গানটি একসঙ্গে গিয়েছিলেন সন্ধ্যা এবং লতা। তারপর হঠাৎ করেই সেই শহর ছেড়ে দেন তিনি। অনেকে বলতেন দুই গায়িকার মধ্যে রেষারেষি শুরু হয়েছিল। এই গুজব ছড়িয়েছিল তৎকালীন মিডিয়ায় প্রকাশিত একটি ছবি থেকে। সেই ছবিতে লতার দিকে সন্ধ্যা হাত বাড়িয়ে দেন। কিন্তু লতা নিস্পৃহ ভঙ্গিমায় রয়েছেন। এদিকে লতাজি হাত বাড়ানোর আগেই ছবি তুলে নেওয়া হয়েছিল।

তবে বাস্তবে দুজনের সম্পর্ক ছিল খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। এমনকি কলকাতায় সন্ধ্যার ঢাকুরিয়ার বাড়িতে তাঁর মায়ের হাতের রান্না খেতে আসতেন লতা। সন্ধ্যা বম্বে গেলে তাঁর হোটেলের ঘরে দুজন গল্প করতেন। আর এই পারস্পরিক শত্রুতার গুজবকে কেউই পাত্তা দিতেন না। এমনকি সন্ধ্যা একটি আংটিও উপহার দেন লতাকে। লতার কন্ঠের ধাঁচ ছিল মারাঠি এবং তিনি উচ্চস্বরে গাইতে পারতেন। আর সন্ধ্যার কন্ঠ ছিল অনেকটাই নরম। তাই টক্করের প্রশ্নও ওঠে না। সন্ধ্যা মনে করতেন অত্যধিক গান গাইলে গলা খারাপ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বাণিজ্য নগরীতে থাকলে তাঁর প্রচুর রেকর্ডিং থাকতো। এছাড়া বম্বের হিন্দি পরিবেশ ও অন্য জলহাওয়ার সঙ্গে মানাতে পারেননি নিজেকে। শেষমেশ কলকাতায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন সন্ধ্যা।

You cannot copy content of this page