বাংলা তথা গোটা ভারতবর্ষের চলচ্চিত্র জগতের একটি কালো জয়ী সিনেমা হলেও পথের পাঁচালী। যেদিকে তৈরি করেছিলেন কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়। কিন্তু এই অস্কারজয়ী পরিচালক কে এই ছবি তৈরি করতে গিয়ে পড়তে হয়েছিল অনেক রকম অসুবিধায় এমনকি কোন বড় প্রযোজক তাকে টাকাও দিতে চাননি এই ছবি তৈরি করার জন্য। কিন্তু কখনোই তিনি দমে যাননি। আসলে যুগের থেকে অনেকটাই এগিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায় যার জন্য এমন একটা সুন্দর প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে পেরেছিলেন ছবির মাধ্যমে। গ্রামের সারলতা থেকে শুরু করে ভাই বোনের সম্পর্ক সবকিছুকেই পুংখ না পুঙ্খভাবে তুলে ধরেছিলেন।বিধান রায়ের সরকারের সাহায্যে ধাপে ধাপে ছবিটি বানিয়েছিলেন তিনি।
ছবিটি তৈরি হওয়ার পর থেকেই ভারতের দরবারে এনেছে একের পর এক বিশ্বজয়ী পুরস্কার। তবে এই ছবি ১৯৫৫ সালে তৈরি হলেও আজ পর্যন্ত বাংলার মানুষের মনে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। এখনো টিভির পর্দায় পথের পাঁচালী দিলে মানুষ সব ছেলে সেটাকেই দেখতে বসে পারে। কিন্তু এবার এই ছবি বাংলাকে এনে দিল ভারতের সেরা ছবির তকমা।
India Chapter Of The International Federation of Film Critics (FIPRESCI) ঘোষণা করলো ভারতের সর্বকালীন শ্রেষ্ঠ সিনেমা হিসেবে সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’। গত শুক্রবার সেরা ১০টি ভারতীয় সিনেমার নাম প্রকাশ্যে এনেছে FIPRESCI India। এবং সেখানেই বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, সেরার সেরা ছবি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাসের আধারে তৈরি ছবি ‘পথের পাঁচালি’। যাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন FIPRESCI India -র ৩০ জন সদস্য। গোপনে একটি পোলের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
FIPRESCI India -র পোল অনুযায়ী, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা'(১৯৬০)। তৃতীয় স্থান দখল করেছে মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ (১৯৬৯)। চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে Adoor Gopalakrishnan -এর Malayalam ছবি Elippathayam (১৯৮১), Girish Kasaravalli -র ছবি Ghatashraddha (১৯৭৭) এবং MS Sathyu -র ছবি Garm Hava (১৯৭৩)।সপ্তম স্থান দখল করেছে সত্যজিৎ রায়ের Charulata (১৯৬৪) ছবিটি। অষ্টম স্থানে রয়েছে Shyam Benegal-র ছবি Ankur(১৯৭৪)। নবম স্থানে Guru Dutt -এর ছবি Pyaasa (১৯৫৪) এবং Ramesh Sippy-র ছবি Sholay (১৯৭৫) ১০ম স্থান দখল করেছে। উল্লেখযোগ্য FIPRESCI এর নির্বাচিত সেরা ভারতীয় ছবির তালিকার প্রথম তিনটি ছবিই বাংলার। আর যা নিয়ে বাংলার দর্শকরা বেজায় খুশি।