বাংলা সিরিয়ালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্বেতা ভট্টাচার্য। সিরিয়াল থেকে সোজা সিনেমায় যাত্রা। আর প্রথম সিনেমাই হিট। সুপারস্টার দেব এবং মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত বাংলা সিনেমা ‘প্রজাপতি’তে এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিলেন তিনি। প্রথম সিনেমাতেই দেবের মতো একজন হিরোর নায়িকা হওয়ার সুযোগ। অভিনেত্রীর কাছে এ এক বিরাট পাওনা।
প্রথম সিনেমা থেকেই এমন অভূতপূর্ব সাড়া পেয়ে ভীষণ খুশি অভিনেত্রী নিজেও। এই সাফল্যের জন্য যদিও সিনেমার পরিচালক, প্রযোজকদের প্রতি নিজের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত আজকের যুগের নায়িকা হয়েও বাকিদের থেকে বেশ আলাদা অভিনেত্রী শ্বেতা ভট্টাচার্য। এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, দীর্ঘ ১০ বছরের এই অভিনয় জীবনে তাঁর কাজটা যত না শখের তার চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজনের।
View this post on Instagram
টিভির পর্দায় সবসময় হাসিমুখের এই শ্বেতার জীবনে কিন্তু রয়েছে অনেক কষ্ট অনেক স্ট্রাগলের কাহিনী। তিনি একেবারেই সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাননি। বরং তাঁর ছোটবেলায় এমনও দিন গিয়েছে যখন তাঁর জুটেছে শুধুই নুনভাত। শ্বেতা জানান, “আমার ছোটবেলা মোটেই সহজ ছিল না। আমার দাদা ছিলেন, সে-ও মারা গিয়েছে। আমার ছোটবেলা বলতে বসলে ইতিহাস হয়ে যাবে। মা বাইরে বেরোনোর আগে শিখিয়ে দিতেন, কেউ জিজ্ঞেস করলে যেন বলি, মাছভাত বা মাংস-ভাত খেয়েছি। দুপুরে খেয়ে রাতে ভাবতে হত, কী খাব? এখন তাই একটাই লক্ষ্য, আমার মা-বাবা যেন ভাল থাকেন”।
কাজ করতে খুবই ভালোইবাসেন শ্বেতা। কাজের মধ্যে থাকলে তিনি অবসাদ ভুলে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মেগা সিরিয়ালের শুটিং মানে মাসের অধিকাংশ দিনই বুকড। কিন্তু শ্বেতা শুটিং শুরুর আগেই একাধিক শর্ত দিয়ে দেন। মা-বাবাকে ভালো রাখতে বেশী রোজগারের প্রয়োজনে, আর তাই ভালো না লাগলেও বাধ্য হয়েই মাচা শো করেন তিনি। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, “আমার মাথার উপরে অনেক দায়িত্ব আছে। তাই মাচা করি’। এরজন্য রবিবার তিনি কাজের থেকে সর্বদা ছুটি নেন। পাশাপাশি ১ জানুয়ারি তিনি কাজ করেন না।
View this post on Instagram
শ্বেতার বাবা-মা দুজনেই অসুস্থ। দুবার স্ট্রোক ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে তাঁর মায়ের। ডান চোখে দেখতেও পান না তিনি। চিকিৎসক বলে দিয়েছেন, আর যদি স্ট্রোক হয় তাহলে নিজের মাকে আর বাঁচাতে পারবেন না তিনি। তাই মাকে চোখে চোখে রাখতে মাকে সঙ্গে নিয়েই প্রতিদিন শুটিং সেটে আসেন শ্বেতা। তাঁর কাছে তাই এখন কাজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বলে কাজের জন্য মরিয়া হয়ে আজ পর্যন্ত কারও কোনো প্রলোভনে পা দেননি তিনি। তিনি এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেননি, যাতে পরে অনুশোচনা হতে পারে। তিনি আরও জানান, “আমি যেমন সিনেমা বা শুটিংয়ের জন্য হলেও ছোট খোলামেলা পোশাক পরি না, হাতকাটা জামা পরি না। এগুলো আমার আগে থেকেই বলা থাকে। কাজের প্রয়োজনে আমি ক্যামেরার সামনে চুমু খেতে পারব না’।