একের পর এক নতুন ধারাবাহিকের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে টেলিভিশনের পর্দায় চলা বিভিন্ন ধারাবাহিক। কোনও ধারাবাহিক চলছে সাত মাস তো কোনও ধারাবাহিকের অন্ত হচ্ছে তিন মাসে। নতুনকে জায়গা করে দিতে পুরোনোকে সরে যেতেই হয়! সিরিয়াল জগতেও এমনটাই হচ্ছে। নতুন ধারাবাহিককে জায়গা করে দিতে সরে যেতে হচ্ছে পুরোনো ধারাবাহিককে। আর সেই ধারাবাহিকতাতেই স্টার জলসায় একের পর এক ধারাবাহিক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক ধারাবাহিক।
কিছুদিন আগেই টেলিভিশনের পর্দায় শুরু হয়েছে একটু অন্য ধারার ধারাবাহিক কমলা ও শ্রীমান পৃথ্বীরাজ। গত ১৬ ই মার্চ থেকে প্রতিদিন বিকেলে সাড়ে ছটায় সম্প্রচারিত হচ্ছে নতুন এই বাংলা ধারাবাহিক। ইতিমধ্যেই এই ধারাবাহিক দর্শকদের বেশ মনে ধরেছে বলেই জানা গেছে। কমলা ও পৃথ্বীরাজের মধ্যেকার দুষ্টু মিষ্টি সম্পর্ক এই গল্পের অন্যতম পাথেয়।
তবে এই ধারাবাহিকে উঠে এসেছে ইংরেজ শাসনে গোঁড়া বাঙালি সমাজের এক অন্য নারী নির্যাতনের গল্প। যেখানে বারবার হস্তক্ষেপ করা হয়েছে নারী স্বাধীনতায়। শিক্ষা থেকে খাওয়া গান-বাজনা সবেতেই যেন বড্ড বেশি নিয়ন্ত্রণ। শ্বশুরবাড়ির সবার খাওয়ার আগে বৌমা খেতে পারবেনা, স্ত্রী শিক্ষা নাকি বৈধব্য সমান। বিদেশিদের ভাষা মুখে আনা যাবে না। বিভিন্ন ধরনের নিয়মের বেড়াজাল। কিন্তু পুরুষদের জন্য ছাড় সবকিছুতেই। আর সমাজের সেইসব গোঁড়ামিকেই তুলে ধরা হচ্ছে ধারাবাহিক কমলা ও শ্রীমান পৃথ্বীরাজে।
এই ধারাবাহিকের সাম্প্রতিক পর্বে দেখানো হয়েছে শ্বশুরবাড়িতে ইংরেজি গান গাওয়ার মস্ত অপরাধে পাপমোচনের জন্য কমলার মাথায় গোবর ঢেলে দেওয়া হয়েছে। যদিও স্ত্রীয়ের এমন অপমান মেনে নিতে পারেনি পৃথ্বীরাজ। বদলা নিবে বলে ঠিক করেছে সে। কিন্তু কমলার সঙ্গে শ্বশুরবাড়িতে হওয়া প্রত্যেকটি ঘটনা সেই যুগে মহিলাদের সঙ্গেও ঘটে থাকত। সমাজের সেই সব ঘটনাকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে এই ধারাবাহিক। তবে আজকের দিনে দাঁড়িয়েও বহু নারীর জীবন কমলার থেকে আলাদা কিছু নয়।
এই ধারাবাহিকের গল্প আগেকার দিনের হলেও বর্তমানে এমন অনেক পরিবার আছে যেখানে এখনও নারী ও পুরুষের মধ্যে রয়েছে তীব্র বৈষম্য। নারী কোনও মর্যাদা নেই সেই পরিবারে।
আসলে বলা যায় মেয়েদের জন্মই হয়েছে সংসারে কাজের জন্য। কিন্তু নিজেদের প্রাপ্য সম্মানটুকু তাঁরা কখনও পাবেনা। আজও স্বামীর থেকে স্ত্রী বেশি শিক্ষিত হলে কথা শুনতে হয় স্ত্রীকে। আজও স্বামীর উপার্জনের থেকে স্ত্রী’র উপার্জন বেশি হলে সবাই বাঁকা চোখে তাকায় স্ত্রীয়ের দিকেই। আর তাই অনায়াসে বলা যায়, তখন থেকে এখন সমাজের চিত্রটা বোধহয় একই রকম থেকে গেছে কোথাও না কোথাও।