‘চড় খেয়েছি, পরিচালকদের পায়ে পড়েছি! এখন আর কাজ পাই না’! অকপট পর্দার বিন্দু মাসি
তিনি হলেন বাংলা সিনেমার (Bengali Film) অন্যতম আইকনিক চরিত্র। বাংলা সিনেমাকে নিজের অভিনয় দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। বাংলা সিনেমা মূলত এই অভিনেত্রীকে চেনে একজন খলনায়িকা (villain) হিসেবে। বলাই বাহুল্য একটা সময় পর্যন্ত বাংলা সিনেমায় তাবড় খলনায়িকা হিসেবে তাকে ছাড়া অন্য কাউকেই ভাবা যেত না। প্রায় ২০০টিরও বেশি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়ই কার কথা বলছি? তিনি বাংলা সিনেমার বিন্দু মাসি যাকে পর্দায় দেখলেই থরহরিকম্প শুরু হয়ে যেত দর্শকদের মনে। তিনি বাংলার ও বাঙালির অত্যন্ত প্রিয় অভিনেত্রী অনামিকা সাহা। বলে রাখা ভালো অনামিকা সাহার আসল নাম কিন্তু অনামিকা নয়। অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন অভিনয় দুনিয়ায় আসার আগে পর্যন্ত তার নাম ছিল ঊষা, তবে ইন্ডাস্টিতে আসার শুরুতেই তিনি নিজের নাম বদলে হয়ে যান অনামিকা সাহা। আর জনপ্রিয় হন এই নামেই।
উল্লেখ্য, বাংলার এই স্বনামধন্য অভিনেত্রীর অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল ‘আলো’ ছবি দিয়ে। এরপর বিভিন্ন সিনেমায় দুরন্ত অভিনয় করে বাংলা জোড়া সাফল্য হস্তগত করেন তিনি। এমনকি জানা যায়, বাংলা ছবিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর মুম্বই থেকেও ডাক এসেছিল তাঁর। ‘অনুসন্ধান’ ছবিতে বিখ্যাত গান ‘ফুলকলি রে ফুলকলি’ এর জন্য ডাক পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মুম্বইয়ে ভালো না লাগার কারনে তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন।
একটি সাক্ষাৎকারে একবার অভিনেত্রী বলেছিলেন, বড় শিল্পীদের অভিনয় দেখার জন্য আমি পরিচালকের পায়ে পর্যন্ত পড়েছি। বলতাম ‘আমি একটু দেখব যে কিরম করে ওঁরা অভিনয় করেন। আসলে অভিনয় না দেখলে শিখব কীভাবে’। বাংলা সিনেমার এই দাপুটে অভিনেত্রী জানিয়েছেন তিনি নাকি একবার জ্ঞানেশ মুখোপাধ্যায়ের কাছে চড় পর্যন্ত খেয়েছিলেন।
অভিনেত্রীর অভিনয় পেশাকে ভালো চোখে মেনে নেয়নি তার শ্বশুরবাড়ি। তিনি একবার জানিয়েছিলেন নিজের শ্বশুরবাড়িতে নিজের মেয়েকে নিয়েও কটাক্ষ হজম করতে হয়েছিল তাকে। কটাক্ষ করে বলা হয়েছিল মেয়েও বড় হলে মা-বাবার মতোই নেচে বেড়াবে, তাদের কথার মানে ছিল মেয়েও বিনোদন দুনিয়ায় আসবে। মেয়েকে এই দুনিয়ায় আসতে দিতে চাননি তিনি।চেয়েছিলেন মেয়ে পড়াশোনা করে বড় হবে। মায়ের কথা রেখেছেন মেয়ে রাই। বর্তমানে তিনি দিল্লিতে দু’টি কলেজে অধ্যাপনা করেন। মাকে নিজের কাছে নিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। রাজি হননি অনামিকা সাহা। কারণ কাজের মধ্যেই ভালো থাকেন তিনি। কাজ না থাকলে ভেঙে পড়েন।
উলটপালট টিআরপিতে চমকে দেওয়া রেজাল্ট! কে বেঙ্গল টপার? না পড়লে বিশ্বাস হবে না
তবে বড় পর্দায় আর কেউ ডাকেনা তাকে। তবুও মাঝে তাকে ছোট পর্দায় কাজ করতে দেখা গেছে। লালকুঠি ও এক্কাদোক্কা ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু বর্তমান বাংলা সিনে দুনিয়ায় তিনি কার্যত সম্পন্ন ভাবেই ব্রাত্য। সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গাঙ্গুলির মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজের স্বপ্ন দেখলেও আর কেউ ডাকেনা তাকে। ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে অভিনেত্রী অনামিকা সাহার মনে রয়েছে ক্ষোভ।মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। অপরাজিতা আঢ্য থেকে শুরু করে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় সবাইকে নিয়েই মুখ খুলেছিলেন তিনি। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে আর কিছু বলেন না তিনি।