বাঙালি সিনেমা জগতের এক অতি পরিচিত নাম শুভাশিস মুখোপাধ্যায় (Subhasish Mukherjee)। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন বহু পরিচালকের ছবিতে। কিন্তু আজকের দিনে নতুন পরিচালকরা তার অভিনয় দক্ষতা দেখতে পান না, এমনটাই দাবি করেছেন এই প্রখ্যাত অভিনেতা। শুভাশিস জানালেন, বর্তমানে পরিচালকরা তাকে “অশিক্ষিত” ভাবেন এবং তাঁর অভিনয়ের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করছেন। এর ফলস্বরূপ, তাকে আজকাল আর সেই ধরনের চরিত্রে দেখা যায় না, যেগুলোর জন্য তিনি পরিচিত ছিলেন।
“এখনকার পরিচালকরা আমাকে অশিক্ষিত ভাবে”: শুভাশিস
শুভাশিস বলেন, “এখনকার পরিচালকরা আমাকে অশিক্ষিত ভাবেন, ভাবেন, ‘ও কি পারবে? বুঝবে?’ এবং এই ধারণা থেকেই তারা আমাকে নেন না।” এর মাধ্যমে তিনি অভিনয়ের প্রতি বর্তমান সময়ের পরিচালকরা যে এক ধরনের অপর্যাপ্ত মনোভাব পোষণ করছেন, তা প্রকাশ করেছেন। এমনকি তিনি প্রশ্ন করেছেন, “আমি কেন অন্য ধরনের ছবিতে অভিনয় করতে পারি না?” যেখানে আগে তিনি চলচ্চিত্রের মূল চরিত্রে কিংবা অভিনয়ের গভীরতা নিয়ে পরিচিত ছিলেন।
এক সময় শুভাশিস মুখোপাধ্যায় ছিলেন বাঙালি চলচ্চিত্রের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাঁর অভিনয় ছিল স্বতন্ত্র, এবং তিনি বহু বিখ্যাত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন। তার প্রতিভা এবং প্রতিশ্রুতি সকলের কাছে পরিচিত ছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি থেকে মনে হয়, নতুন ধারার পরিচালকরা তাঁর প্রতি আগ্রহ হারিয়েছেন, এবং তার পারফরম্যান্সের জায়গা নিতান্তই সীমিত হয়ে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতি নিয়ে শুভাশিসের এক ধরনের আক্ষেপ রয়েছে। তিনি মনে করেন, পরিচালক এবং প্রযোজকরা হয়তো এক ধরনের নতুন স্টাইলের অনুসরণ করছেন, যেখানে তার অভিজ্ঞতা এবং পরিশ্রমের মূল্য কম পড়েছে। নতুন দিনের সিনেমা, যেখানে গল্প এবং কনটেন্টের ভিন্ন ধরনের চাহিদা থাকে, সেখানে তার জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। শুভাশিস মনে করেন, “আমি যদি নতুন ধারার ছবি করতে চাই, তবে সেখানে কিছুটা সময় এবং অধ্যবসায় দরকার, কিন্তু এখনকার সময়ের পরিচালকরা হয়তো সেটা বুঝতে পারছেন না।”
সত্যিই, আজকের সিনেমার বাজারে অনেকেই বাণিজ্যিক সফলতা ও নতুন ধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করার জন্য প্রতিযোগিতা করছে। তবে এর মধ্যে পুরনো এবং নতুনদের মেলবন্ধন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুভাশিসের মতো প্রতিভাবান অভিনেতা যদি সঠিক মূল্যায়ন না পান, তবে সেটা শুধুমাত্র তার জন্য নয়, বরং পুরো চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য এক বড় সংকট হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন: টলিউডে কাজের অভাব! পেটের দায়ে ফুটপাতে ‘কে আপন কে পর’, ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’ খ্যাত পরিচালক
এদিকে, শুভাশিসের মন্তব্যে তাঁর অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন এবং শিল্পী হিসেবে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে, এটি স্পষ্ট যে, চলচ্চিত্র জগতের এই পরিবর্তিত মানদণ্ডে একজন অভিজ্ঞ অভিনেতা হয়তো তার অভিনয়ের পরিসর খুঁজে পাচ্ছেন না।