জীবনের বেশির ভাগ সময়ই আমরা চাই নিজের পরিবারের আদরে বড় হতে। ছোটবেলা কাটে স্বপ্ন আর কল্পনার মাঝে, যেখানে বিয়েকে আমরা ভাবি নতুন জীবনের শুরু, সুখ আর স্নেহের মিলন। কিন্তু বাস্তব জীবনের গল্প সবসময় ফেয়ারি টেল না-ও হতে পারে। অনেক সময় আমরা দেখতে পাই, পরিবারের বেল্টে আটকে থাকা মেয়ে নিজেকে খুঁজে পেতে গিয়ে ভেঙে পড়ে, বাধার মুখোমুখি হয়। অনেকের বিয়ের পরের জীবন হয় কষ্টের, যেখানে মনের মতো আরাম বা স্বাধীনতা মেলে না। বিশেষ করে যারা বাইরে থেকে এসেছে, নতুন শ্বশুরবাড়ির নিয়মে খাপ খাওয়াতে গিয়ে অনেকের জীবনই হয়ে ওঠে কষ্টের।
তবে এও সত্যি যে, কিছু মানুষ নিজেদের পরিবর্তন করতে পারেন, সংসারে মানিয়ে নিতে পারেন, আবার কেউ কেউ সেই মানিয়ে নেওয়ার গণ্ডি পার করতে পারেন না। প্রেম, বিয়ে, দাম্পত্য জীবনের গল্প হাজার হাজার মানুষের জীবনে প্রতিদিন ঘটে। তার মাঝেই থাকে গোপন কান্ড, যা অনেক সময় বাইরে প্রকাশ পায় না। তেমনই একটি গল্প সম্প্রতি খুলে বললেন বাংলা চলচ্চিত্রের পরিচিত মুখ মানালি দে। যেখানে জীবনের সেই অজানা অধ্যায়ের কথা উঠে এসেছে, যা অনেকেই জানেন না।
মানালি দে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে জানালেন, তার প্রথম বিয়ে কেন ভেঙে গিয়েছিল, আর সেই সময় তার মন ও অনুভূতি কী ছিল। মানালি বললেন, ‘আমি বাড়ির মেয়ে হয়ে থাকতে চেয়েছিলাম। খুব আদরে বড় হয়েছি বাবা-মা আর দাদুর কাছে। কিন্তু বিয়ের পর যখন শ্বশুরবাড়িতে গেলাম, তখন আমি দেখতে পেলাম তাঁদের প্রত্যাশা ভিন্ন ছিল। তাঁরা বোধহয় বাড়ির বউ হিসেবে আমাকে দেখতে চেয়েছিল। আমি হয়তো সেই জায়গায় মানিয়ে নিতে পারিনি।’ মানালি স্পষ্ট করলেন, শ্বশুরবাড়িতে নিজের জায়গাটা খুঁজে পাওয়া তার কাছে সহজ ছিল না, কারণ নিজেকে কখনোই তাদের বাড়ির মেয়ে মনে হয়নি।
আরও বলেছেন, বর্তমানে তার দ্বিতীয় স্বামী অভিমন্যুর সঙ্গে তার সম্পর্ক অনেকটাই পারিবারিক বন্ধনের মতো। ‘আমার নিজের বাবা-মার মতোই ওর বাবা-মার সঙ্গেও আমার সম্পর্ক। আমি চেষ্টা করি সবাইকে সমানভাবে ভালোবাসতে।’ মানালি বুঝিয়ে দিলেন, একটা মেয়ের জন্য বিয়ের পর নতুন পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সহজ কাজ নয়। এটি সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে হওয়া প্রয়োজনীয় এক প্রক্রিয়া। কিন্তু তাঁর প্রথম বিয়েতে এই মিলনে ব্যর্থ হওয়ায় বিচ্ছেদ হয়। শেষ পর্যন্ত, মানালি বলেন, ‘প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে আমার আজ আর কোনো সম্পর্ক নেই। খারাপ সম্পর্কের জন্য আমরা একসঙ্গে থাকতে পারিনি। বন্ধুত্বের জায়গা এখন নেই।’
আরও পড়ুনঃ ‘চোখের জলে ভিজেছিল রাত’, কাজ শুরু করেও বের করে দেওয়া হয়েছিল অন্বেষাকে, আজ তিনি বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ!
এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে মানালি দে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের একটি সংবেদনশীল অধ্যায় প্রকাশ করেছেন, যা অনেকেই লুকিয়ে রাখেন। জীবনের পরিবর্তন, সম্পর্কের কঠিন বাস্তবতা এবং মানিয়ে নেওয়ার গল্পগুলো শুধু অভিনেত্রীদের নয়, আমাদের সবারই জীবনের একটি অংশ। মানালির কথাগুলো তাই অনেক মানুষের মনের স্পর্শ করতে পারে, যাদের জীবনেও হয়তো এমন সম্পর্কের টানাপোড়েন আছে।