নব্বই দশকের বাংলা ছবির ইতিহাসে ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ (Sasurbari Zindabad) একটি অন্যতম জনপ্রিয় নাম। ২৫ বছর আগে এই ছবি যখন প্রথমবার মুক্তি পেয়েছিল, তখন তা বক্স অফিসে রীতিমতো ঝড় তুলেছিল। তৎকালীন দিনে দাঁড়িয়েও প্রায় পৌনে ২ কোটির কাছাকাছি রোজগার করেছিল এই ‘কালজয়ী ছবি’। ‘প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়’ (Prosenjit Chatterjee) ও ‘ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত’র (Rituparna Sengupta) অনবদ্য রসায়ন আজও ভুলতে পারেনি মানুষ, কিন্তু সেই রসায়নের বাইরেও এই ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ ছিলেন ‘অনামিকা সাহা’ (Anamika Saha)।
নায়কের শাশুড়ি মায়ের চরিত্রে তাঁর জাঁদরেল উপস্থিতি আজও দর্শকের মনে গেঁথে আছে। এই চরিত্রে অনামিকার সাজসজ্জা ছিল রাজকীয়! চোখে থাকত সোনালি ফ্রেমের চশমা, ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক, আর সোনার গয়নায় পরিপূর্ণ এক কঠোর ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি। এক ধনী, অভিজাত পরিবারের নারী হিসেবে তিনি নিজেকে পর্দায় এমনভাবে তুলে ধরেছিলেন, যা আজও প্রশংসার দাবিদার। অথচ এই চরিত্রে তাঁকে নেওয়া নিয়ে তখন অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন!
এমনকি পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তীকে সাবধান করে দেওয়া হয়েছিল! এর নেপথ্যে কারণ কী? আজ অনামিকা সাহা সেই স্মৃতির পাতা খুলে জানালেন, “অনেকেই ভেবেছিল আমি পারব না। হিন্দি সংস্করণে যেই চরিত্রে হেমা মালিনী অভিনয় করেছিলেন, সেটা আমার জন্য উপযুক্ত কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।” যদিও তাঁর উপর ভরসা রেখেছিলেন এই ছবির দুই গুরুত্বপূর্ণ মানুষ, হরনাথ চক্রবর্তী এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
তাঁদের সেই অগাধ আস্থার ফলেই বিনোদিনীর চরিত্রে অনামিকার অভিনয় আজও কালজয়ী রয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় সুখবর! ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’-এর সেই সুবর্ণ অধ্যায় আবারও ফিরে আসছে বড়পর্দায়, জামাইষষ্ঠীর আগেই রি-রিলিজের খবরে নস্টালজিয়ায় ভাসছেন সিনেপ্রেমীরা। আর অনামিকা সাহার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন অনেকে, যিনি নিঃসন্দেহে এই ছবির অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ “আমি যদি নেগেটিভ খুঁজতে চাই জীবনে তাহলে শান্তি পাবো না!”- অভিনয় জীবনের আক্ষেপ নিয়ে অকপট টলি অভিনেত্রী, ঋতুপর্ণ ঘোষের অফার কেন ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মৈত্রেয়ী মিত্র?
অনেক বাধা পেরিয়ে তিনি যে স্থানটি পেয়েছেন, তা আজও অনন্য। এই চরিত্রের মাধ্যমে শুধু একজন খলনায়িকা নয়, বরং একজন দক্ষ অভিনেত্রীর প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেছিলেন অনামিকা সাহা। তাঁর সেই সাহস, অধ্যবসায় এবং নিজের ওপর বিশ্বাস আজও অনেক শিল্পীর অনুপ্রেরণার উৎস। আর ২৫ বছর পরেও সেই অনামিকার বিনোদিনী, আবারও প্রেক্ষাগৃহে ফিরতে চলেছে বাঙালির হৃদয় জয় করতে। আপনারা কতটা উৎসাহী এই ছবির পুনরায় ফিরে আসা নিয়ে?