টলিউডে (Tollywood) অন্যদের মতন মুখচোরা নন তিনি, বরং মুখোমুখি হয়ে নিজের দুর্বলতাকেই শক্তিতে পরিণত করা একজন অভিনেত্রীর নাম ‘অপরাজিতা আঢ্য’ (Aparajita Adhya)। চুলচেরা সৌন্দর্যের মাপকাঠিতে বিচার করে যেখানে একাংশ ট্রোলিংয়ে ব্যস্ত, সেখানে অপরাজিতা স্পষ্ট জানালেন, নিজের ‘ডিফেক্টিভ ফেস’-কে লুকিয়ে রাখার কোনো ইচ্ছেই তার নেই। বরং তার মতে, সবার সামনে তা তুলে ধরার মধ্যেই লুকিয়ে আছে নিজের প্রতি বিশ্বাস আর এগিয়ে যাওয়ার সাহস।
এদিন এক সাক্ষাৎকারে অপরাজিতা জানান, তাঁর মুখের গঠন একেবারেই ‘পারফেক্ট’ নয়। এক চোখ অন্য চোখের থেকে ছোট, আর মুখের দুদিকের গঠনও পুরোপুরি সমান নয়। ফলে ক্যামেরার সামনে ঠিকভাবে দাঁড়াতে হলে তাঁকে ভাবতে হয় একটু আলাদা করে। একটু পাশ ফিরে দাঁড়ানো, একটু নিজের মতো করে সাজা। সাধারণের চোখে যা ‘ত্রুটি’, অভিনেত্রীর চোখে সেটা স্বকীয়তা। আর এই স্বকীয়তাই আজ তাঁকে করে তুলেছে অনন্যা।
অভিনেত্রী আরও জানান, এই ত্রুটিগুলো তিনি খুব ভালো করে বোঝেন। তাই মেকআপ আর্টিস্টের উপর নির্ভর না করে, নিজের মুখের খুঁটিনাটি খুঁতগুলো মাথায় রেখে তিনি নিজেই নিজের মেকআপ করতে ভালোবাসেন। কারণ মুখের কোন দিকটা কতটা হাইলাইট করতে হবে, কোথায় কনসিলার বসবে বা কোন দিকটা একটু ঢাকতে হবে, এসবের সবচেয়ে ভালো জানেন তিনি নিজেই। এটাই তাঁর আত্মবিশ্বাসের মূল চাবিকাঠি।
তবে এসবকে তিনি কোনোদিনই দুর্বলতা বলে মানেননি। বরং বারবার বলেছেন, একজন শিল্পীর আসল পরিচয় তাঁর মনের জোর আর নিজেকে ভালোবাসার ক্ষমতা। শরীর বা মুখের খুঁত যদি তাঁকে থামাতে পারত, তাহলে আজকের অপরাজিতা হয়ে ওঠা সম্ভব হতো না। বরং এই ভিন্নতাকে শক্তি করে তুলেছেন তিনি, আর বার্তা দিয়েছেন সমস্ত নারীদের জন্য, যারা আজও তথাকথিত ‘সৌন্দর্য’-এর চাপে আত্মবিশ্বাস হারাতে বসেছেন।
আরও পড়ুনঃ ‘হরনাথ, বুম্বার জন্যই আজ আমি বিনোদিনী’—২৫ বছর আগে কতটা যুদ্ধ করে ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’তে সুযোগ পেয়েছিলেন অনামিকা সাহা?
অপরাজিতা আঢ্য বরাবরই প্রমাণ করে এসেছেন, অভিনয়ের জন্য,” ‘পারফেক্ট ফিগার’ বা ‘পারফেক্ট ফেস’ জরুরি নয়। বরং নিজেকে যেভাবে তুলে ধরতে চান, নিজের ত্রুটিগুলোকে যেভাবে গ্রহণ করতে পারেন, সেটাই আপনাকে আলাদা করে তোলে।” আর ঠিক সেইখানেই অপরাজিতার ‘ডিফেক্টিভ ফেস’ নয়, বরং তার সাহসী মানসিকতাই হয়ে ওঠে সকলের অনুপ্রেরণা।