পিসিমা চরিত্র তো দর্শকের প্রিয়, তবু কেন বারবার বাদ পড়তে হয়েছিল তাঁকে ‘জন্মভূমি’ থেকে? নিজের জীবনের অজানা অধ্যায় প্রকাশ্যে করলেন মিতা চ্যাটার্জী!

বাংলা টেলিভিশনের ইতিহাসে কিছু চরিত্র চিরকালীন হয়ে যায়। এমনই একটি চরিত্র ‘পিসিমা’। যাঁর মুখের ভাষা, চলন, আর সংলাপ একসময় বাংলার ঘরে ঘরে শুনতে পাওয়া যেত। কিন্তু জানেন কি, যাঁকে আজ সবাই ‘পিসিমা’ নামে চেনে, তাঁকে এই চরিত্রের জন্য প্রথমে নেওয়া হয়নি দীর্ঘ মেয়াদের জন্য? শুধু ছ’দিনের চুক্তিতে শুরু হয়েছিল তাঁর ‘জন্মভূমি’র সফর।

প্রথমে প্রযোজনা সংস্থা চেয়েছিল একটি পার্শ্বচরিত্রে কয়েকদিনের জন্য তাঁকে নিতে। মিতা চ্যাটার্জীর কথায়, “আমি জানতাম এই চরিত্র বড় কিছু নয়। মাত্র ছ’দিনের কাজ ছিল। কিন্তু দর্শকের ভালবাসা এমন জিনিস, যেটা পরিকল্পনার গণ্ডি মানে না।” সত্যিই তাই, কারণ ছ’দিনের চুক্তি পেরিয়ে সেই চরিত্র চলে সাড়ে সাত বছর! আর দর্শক ‘পিসিমা’ ছাড়া ভাবতেই পারতেন না ধারাবাহিককে।

সময়ের সঙ্গে ধারাবাহিকের কাহিনিতেও পরিবর্তন এসেছে। একাধিকবার ‘পিসিমা’ চরিত্রকে বিদায় জানানোর পরিকল্পনা ছিল নির্মাতাদের। কখনও তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, কখনও বলা হয়েছে গ্রামের বাড়ি চলে গিয়েছেন। কিন্তু যতবারই তিনি পর্দায় অনুপস্থিত ছিলেন, ধারাবাহিকের টিআরপি ততবারই কমে গিয়েছে। দর্শক যেন বারবার জোর করে ফিরিয়ে এনেছে তাঁকে।

এই অবস্থায় বাধ্য হয়েই নির্মাতারা বারংবার মিতাকে ফিরিয়ে আনেন পর্দায়। ‘পিসিমা’ যেন হয়ে ওঠেন ধারাবাহিকের মেরুদণ্ড। মিতার ভাষায়, “প্রোডিউসাররা আমায় বলেছিলেন, আপনাকে ছাড়া ধারাবাহিক টিকে না। দর্শকের রিঅ্যাকশনই প্রমাণ করত আমি দরকারি।” এমন নজির বাংলা টেলিভিশনে বিরল, যেখানে একটি পার্শ্বচরিত্রই মূল চরিত্রকে ছাপিয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ ‘ভাইয়ের মতো বলেছিল’, কিন্তু লিভ-ইনে থাকত মালদায়! স্বামীর সম্পর্কে তীব্র অভিযোগ তুলে মুখ খুললেন রিয়া গঙ্গোপাধ্যায়

আজও ‘পিসিমা’ নামটি উচ্চারিত হলে অনেকেই মনে করেন, তিনি বুঝি আমাদেরই পরিবারের কেউ। মিতা চ্যাটার্জীর অসামান্য অভিনয়ই এই চরিত্রকে কালজয়ী করে তুলেছে। সময় গড়িয়ে গেলেও দর্শকের মনে তাঁর অবস্থান একইরকম অটুট। আর ‘জন্মভূমি’ ধারাবাহিকের ইতিহাসে ‘পিসিমা’ হয়তো সেই অধ্যায়, যাকে শেষ করেও শেষ করা যায়নি।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।