টলিউডের রোমান্টিক নায়ক থেকে রাজনীতির মঞ্চ, দুই ক্ষেত্রেই একসময় সমান জনপ্রিয় ছিলেন অভিনেতা ‘জয় বন্দ্যোপাধ্যায়’ (Joy Banarjee)। নয়ের দশকে পর্দায় তাঁর উপস্থিতি ছিল একেবারে আলাদা মাত্রার। সুপুরুষ চেহারা আর স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয় দিয়ে তরুণীদের পাগল করে তুলেছিলেন তিনি। অগণিত প্রেমপত্র, ফুলের তোড়া আর প্রস্তাব পেতেন তিনি রোজ। কিন্তু এই উজ্জ্বল সাফল্যের আড়ালে লুকিয়ে ছিল তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের জটিল অধ্যায়। দীর্ঘদিন ধরে সিওপিডিতে ভুগে অবশেষে মাত্র ৬২ বছর বয়সে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন, এই মুহূর্তে তাঁর ভক্ত-পরিবারে গভীর শোকের ছায়া।
তাঁর অভিনয়জীবনে এক সময়ে জড়িয়ে যায় এক অনিচ্ছাকৃত সম্পর্ক। পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর কন্যা ‘চুমকি চৌধুরী’র (Chumki Choudhury) সঙ্গে নাম জড়ায় জয়ের। ‘হীরক জয়ন্তী’ ছবির শুটিংয়ের সময় থেকেই এই বন্ধুত্বে প্রেমের রঙ লেগেছিল। যদিও শুরুতেই অঞ্জন চৌধুরী সতর্ক করে দিয়েছিলেন জয়কে, যেন মেয়ের সঙ্গে অকারণে ঘনিষ্ঠ না হয়। কিন্তু শুটিংয়ের ফাঁকেই বাড়তে থাকে সম্পর্ক। ঘুরে বেড়ানো, কথা বলা, সবকিছু মিলিয়ে দু’জনের মধ্যে তৈরি হয়েছিল এক বিশেষ বন্ধন। চুমকি নিজেও প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, জয় ছাড়া কাউকে তিনি বিয়ে করতে চান না।
তবু শেষমেশ সেই সম্পর্ক টেকেনি। জয় নিজের কেরিয়ারকে বেছে নিয়েছিলেন। তখন তিনি টলিউডের অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন নায়ক, একের পর এক ছবির প্রস্তাব আসছিল। অঞ্জন চৌধুরীর দশটি ছবির অফারও তিনি ফিরিয়ে দেন, কারণ বিয়ের জন্য তখন প্রস্তুত ছিলেন না। ব্যক্তিগত জীবনের চেয়ে পেশাগত সাফল্যকেই তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্তে ভেঙে পড়েছিলেন চুমকি। প্রেম থেকে দূরে সরে গেলেও তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন বহুদিন ধরে টলিপাড়ায় আলোচনার বিষয় ছিল। আজ জয় বন্দ্যোপাধ্যায় আর নেই, রয়ে গেলেন চুমকি।
গত ১৫ আগস্ট শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে, পরে ভেন্টিলেশনে রাখা হলেও শেষরক্ষা হয়নি। ১৭ আগস্টের সকলেই শান্ত হয়ে যান এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক। তাঁর মৃত্যুর খবরে চোখের জল আটকাতে পারেননি চুমকি চৌধুরীও। দীর্ঘদিন আগের সম্পর্কের স্মৃতি যেন আবার সামনে ভেসে উঠল তাঁর কাছে। এক সময় যে মানুষকে ভালোবেসেছিলেন, আজ তাঁর চিরবিদায়ে তিনি ভেঙে পড়লেন কান্নায়। এদিন জয়ের এক সময়ের প্রেমিকা চুমকি বললেন, “আমার আর জয়ের বাবা খুব ভালো বন্ধু ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ “আমি এতদিন যা বলেছি ঠিক বলেছি…কোনও আক্ষেপ নেই, আবারও বলব!” “আজকাল কেউ কু’কুরকে “কু’কুর” বললেও লোকে তেড়ে আসে!”— দীর্ঘদিনের বিতর্ক নিয়ে অকপট মমতা শঙ্কর! সমালোচনার জবাবে মুখ খুলতেই ফের জড়ালেন নয়া বিতর্কে!
সেই সূত্রেই আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। জয় তো দেখতে সত্যিই খুব সুদর্শন ছিল। তাই বাবা যখন ‘হীরক জয়ন্তী’ ছবিটা বানাচ্ছেন, তখন সরল সাদাসিধে অথচ সুপুরুষ নায়কের দরকার ছিল। কিছু না ভেবেই বাবা জয়কে ছবিতে আমার বিপরীতে নায়ক বানালেন। সেই ছবি পর্দায় সুপারহিট হয়, আর বাস্তবে আমরা হই খুব ভালো বন্ধু। সেই দিনের কথা মনে পড়লে মনটা ভারী হয়ে যাচ্ছে। ও যে এত তাড়াতাড়ি চলে যাবে ভাবিনি। অনেকদিন ওর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না, ওর মৃ’ত্যু সংবাদ বিশ্বাস করতে পারিনি। প্রথমে ভেবেছিলাম মিথ্যে রটনা, কিন্তু পরে জানলাম সত্যিই আর নেই জয়। ওর আত্মার শান্তি কামনা করি এখন শুধু!”
“আমি এতদিন যা বলেছি ঠিক বলেছি…কোনও আক্ষেপ নেই, আবারও বলব!” “আজকাল কেউ কু’কুরকে “কু’কুর” বললেও লোকে তেড়ে আসে!”— দীর্ঘদিনের বিতর্ক নিয়ে অকপট মমতা শঙ্কর! সমালোচনার জবাবে মুখ খুলতেই ফের জড়ালেন নয়া বিতর্কে!