মারণ রোগ ক্যা’ন্সারের (Cancer) সঙ্গে লড়াই করা মানেই প্রতিদিন নতুন এক যুদ্ধের মুখোমুখি হওয়া। চিকিৎসা পদ্ধতি, শারীরিক কষ্ট, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ— সবকিছু মিলে এক অদৃশ্য যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করে দেয়। অথচ এর মাঝেই যদি কেউ দৃঢ় মানসিক শক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, সেটাই অগণিত মানুষকে অনুপ্রেরণা দেয়। সম্প্রতি সমাজ মাধ্যমে এমন এক খোলা চিঠি নিয়ে সামনে এসেছেন এক জনপ্রিয় অভিনেত্রী (Famous Actress)। যেখানে লেখা প্রতিটি শব্দ যেন সাহসের অন্য নাম।
সেই বার্তায় উঠে এসেছে, অস্ত্রোপচারের সম্ভাবনা আর নেই, এবার কেবল কেমোথেরাপিই ভরসা। চিকিৎসার কঠিন বাস্তবতাকে একেবারে খোলাখুলি স্বীকার করে নিয়ে সেখানে জীবনের প্রতি এক গভীর ভালোবাসার ঘোষণা রয়েছে। তিনি লিখেছেন, “আজ থেকে নতুন অধ্যায় শুরু করছি…বিশ্বাস করো, আমি জীবনকে ভালোবাসি।” এই সরল অথচ গভীর কথাগুলো অনেকের মনেই নতুন করে লড়াই করার শক্তি জাগাতে সক্ষম।
উল্লেখ্য ২০১৮ সালে অভিনেত্রী আক্রান্ত হন তৃতীয় পর্যায়ের ওভারিয়ান ক্যা’ন্সারে। বছরখানেকের মধ্যে তিনি মারণ রোগ থেকে মুক্তি পান। তবে, সেই সময় জানিয়েছিলেন যে আগামী পাঁচ বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাঁর জীবনে। প্রতি পাঁচ মাস অন্তর নিজেকে পরীক্ষা করাতে হবে। মারণ রোগ ফিরে আসার সম্ভাবনা জানিয়েছিলেন ডাক্তার অভিনেত্রীকে। এমনকি কেমো নেওয়ার কারণে লিউকোডার্মা ধরা পড়ে তাঁর।
শুধু চিকিৎসার কথা নয়, পরিবারকেও সমান গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। অভিনেত্রীর তিন সন্তান। দুই পুত্র এবং একটি কন্যা। এই সন্তানদের উদ্দেশে সেই খোলা চিঠিতে তিনি ভাগ করেছেন এক মর্মস্পর্শী বার্তা, যেন অনুপস্থিতিতেও মা থেকে যায় ভালোবাসার মাধ্যমে। ভাইবোনদের পারস্পরিক সম্পর্ককে জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ বলে মনে করেন তিনি। একে অপরকে আঁকড়ে থাকার কথাই ছিল তাঁর উপদেশে।
সেই সমাজ মাধ্যম পোস্টে তাঁর লেখার পাশাপাশি ছিল চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু নথিও। যেখানে রোগের ধাপ, অগ্রগতি আর বেঁচে থাকার সম্ভাব্য হিসেব উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও সবটা খোলসা করেননি, তবুও ইঙ্গিতই যথেষ্ট ছিল বুঝতে, পরিস্থিতি খুব একটা সহজ নয়। এর আগে তিনি একাধিকবার বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েও নতুন জীবন শুরু করেছেন। আবারও সেই শক্তি নিয়েই শুরু করেছেন আরেক পর্ব। এই সাহসী নারীর নাম নাফিসা আলি সোধি।
আরও পড়ুনঃ অসুস্থ শরীর তাও স্ত্রীর জন্য পছন্দ করে জুতো কেনেন নিজ হাতে! বার্ধক্য শরীরকে কাবু করলেও এখনও মনে রাজা বিপ্লব চ্যাটার্জি!
বলিউডে অভিনয়ের পাশাপাশি সমাজকর্মী হিসেবে তাঁর সমান ভূমিকা রয়েছে। বড়পর্দায় তাঁকে শেষ দেখা গিয়েছিল ২০২২ সালের ‘উঁচাই’ ছবিতে, যেখানে অমিতাভ বচ্চন, অনুপম খের, বোমান ইরানি, নীনা গুপ্তা-সহ আরও অনেকের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন পর্দা। দীর্ঘ অভিনয়জীবন আর জীবনের কঠিন লড়াই— দুটোই তাঁকে আলাদা করে চিনিয়ে দিয়েছে দর্শকদের কাছে। আজও তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যুদ্ধ যতই কঠিন হোক, জীবনের প্রতি ভালোবাসাই সবচেয়ে বড় ওষুধ।