শরৎকালে পূজোর আমেজে দেবদেবীর নানা গল্প উঠে আসে আলোচনায়। তবে কেবল পুজো নয়, দেবতার আচার-ব্যবহারও আমাদের জীবনের সঙ্গে অদ্ভুত মিলে যায়। ঠিক তেমনই জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুদীপা চ্যাটার্জি জানালেন নিজের অনুভূতি। তাঁর কথায়, গণেশকে দেখলেই মায়া হয়। বিদ্যা ও বুদ্ধিতে অনন্য হলেও, এই দেবতা আজীবন ‘বডি শেমিং’-এর শিকার হয়েছেন। এই মন্তব্যের পর থেকেই আলোচনার ঝড় উঠেছে।
সুদীপা ব্যাখ্যা দেন, পুরাণে বর্ণিত আছে গণেশ আসলে রূপবান ছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে হাতির মস্তক নিয়ে জীবিত থাকতে হয় তাঁকে। সেই থেকে তিনি উপহাসের পাত্রে পরিণত হন। প্রচলিত ছড়া থেকে শুরু করে নানা গল্পে গণেশকে নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে। এমনকি এক পুরাণকথায় দেখা যায়, ইঁদুর বাহন থেকে পড়ে যাওয়ার পর তাঁর পেট থেকে মিষ্টি বেরিয়ে আসায় আকাশের চাঁদ পর্যন্ত তাঁকে বিদ্রূপ করেছিল। এসব ঘটনাই প্রমাণ করে, দেবতার মধ্যেও অবহেলা ও কটাক্ষের যন্ত্রণা বিদ্যমান।
তবে এখানেই শেষ নয়। অভিনেত্রী জানালেন, গণেশপুজোর সময় তাঁর নিজেরও মনে পড়ে মিষ্টি আর মোদকের কথা। খাওয়া-দাওয়ার প্রতি ভালোবাসাই তাঁকে গণেশের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ করে তোলে। প্রতিদিন রাতে ছেলে আদিদেবকে নিয়ে তিনি গণেশের গল্প করেন। শুধু তাই নয়, জীবনের দুই বিশেষ মানুষের মধ্যে তিনি গণেশের সঙ্গে মিল খুঁজে পান।
প্রথমজন তাঁর ছেলে আদিদেব। সরলতা, ভোলাভাব ও হিসাবি মন—সব মিলিয়ে ছেলের মধ্যে গণপতির প্রতিচ্ছবি দেখতে পান অভিনেত্রী। দ্বিতীয়জন তাঁর প্রিয় বন্ধু, অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্য। অম্বরীশের তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, খুঁটিনাটি হিসাব রাখার অভ্যাস এবং সূক্ষ্ম নজর তাঁকে বারবার মনে করিয়ে দেয় গণেশের কথা। সুদীপার মতে, এই দুই প্রিয় মানুষ তাঁর জীবনে দেবতার প্রতীক হিসেবেই রয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ ঘোড়া নয়, গজ নয়, এবার দেবীর বাহন মেট্রো! সিংহ গেছে ছুটি, ট্রলি হাতে গণেশকে নিয়েই ভাইরাল মা দুর্গার ভিডিও! ক্ষুদে দুর্গার কাণ্ড দেখে মুগ্ধ নেটপাড়া!
শেষে অভিনেত্রী বলেন, গণেশ শুধু মজার পাত্র নন, বরং বিদ্যা, বুদ্ধি, শক্তি আর ভরসার প্রতীক। কার্তিক ময়ূরে চেপে বিশ্ব প্রদক্ষিণ করলেও, গণেশ শিব-পার্বতীকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করে বাজিমাত করেছিলেন। সেই বুদ্ধি ও কৌশল আজও মানুষের কাছে শিক্ষণীয়। আর এই কারণেই সুদীপা মনে করেন, গণেশের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক এত গভীর—যেখানে দেবতার ভোলাভাবও প্রিয়জনদের চরিত্রে প্রতিফলিত হয়।