“চারপাশ থেকে যা খবর…দক্ষিণী স্টাইলে ঝুলন সাজানো দেখতেই যদি চান, ‘রঘু ডাকাত’ দেখুন!”— দেবযে নিয়ে ফের কুণাল ঘোষের খোঁচা! দলীয় সাংসদকেই কেন নিশানায় রাখছেন তিনি? তবে শুধুই ছবি, নাকি পিছনে রয়েছে কোনও রাজনৈতিক কারণ?— প্রশ্ন উঠছে নেটপাড়ায়!

এবার পুজোর মরশুমেই টলিউডে একসঙ্গে মুক্তি পেয়েছে চার চারটি বড় বাজেটের ছবি। চোখ ধাঁধানো সেই তালিকায় রয়েছে দেবের (Dev) ‘রঘু ডাকাত’ (Raghu Dakat), প্রসেনজিৎ-শ্রাবন্তীর ‘দেবী চৌধুরাণী’, আবির-মিমির ‘রক্তবীজ ২’ এবং আবিরের ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’। দর্শকরা কোন ছবিকে বেশি পছন্দ করছে, আর কোনটা না– তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে প্রেক্ষাগৃহে ছবির জনপ্রিয়তা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকেও বেশি আলোচনায় উঠে এসেছে দেবের ছবিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক টিপ্পনি, বিতর্ক!

তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) সাম্প্রতিক সমাজ মাধ্যম পোস্ট ঘিরেই শোরগোল। প্রথম থেকেই তিনি ‘রঘু ডাকাত’কে নিয়ে নানান রকম তির্যক মন্তব্য করেই যাচ্ছিলেন। এদিন তিনি লিখেছেন, “চারটি ছবির মধ্যে ‘রক্তবীজ ২’ সেরা, ‘দেবী চৌধুরাণী’ যথেষ্ট ভালো, ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’ও মোটামুটি, আর দেবের ছবি দেখতে হবে মূলত যাঁদের দক্ষিণী স্টাইলের ঝলমলে উপস্থাপনা পছন্দ।” এক্ষেত্রে কুণালের বক্তব্য সরাসরি দেবকে খোঁচা দিয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকেই। ফলে নেটিজেনদের মধ্যে জল্পনা ছড়িয়েছে।

অনেকেই প্রশ্ন করছেন, এটা কি শুধুই ছবির সমালোচনা, নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ? এমনটা অবশ্য প্রথম নয়। দেবের ছবি ‘রঘু ডাকাত’ নিয়ে কুণাল ঘোষ আগেও মন্তব্য করেছেন। কিছুদিন আগে তিনি দাবি করেছিলেন, ছবিটির মুক্তির আগেই তিনি জানতেন বক্স অফিসে এটি চতুর্থ স্থানে থাকবে। এমনকি ‘বাড়তি সুবিধা’ নিয়ে বেশি শো পাওয়ার অভিযোগও তুলেছিলেন। তাঁর কথায়, দেব রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে ছবির প্রচার করেছেন জেলায় জেলায়, তাই কৃতিত্ব কেবল অভিনেতার নয়, দলেরও প্রাপ্য।

ফলে রাজনীতির সঙ্গে বিনোদন জগতের টানাপোড়েন ফের প্রকাশ্যে চলে এসেছে। অন্যদিকে, দেব নিজের জবাব দিয়েছেন একেবারে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতেই। তিনি কুণাল ঘোষকে নিজের ‘গুরু’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, তাঁর বন্ধু হতে গেলেও যোগ্যতা লাগে, আবার শত্রু হতে গেলেও লাগে যোগ্যতা। দেবের এই মন্তব্য ঘিরে আবার নতুন করে আলোচনার জন্ম হয়েছে। কেউ বলছেন, দেব রসিকতা করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছেন। আবার কেউ মনে করছেন, তিনি আসলে সোজা কথায় পাল্টা বার্তা দিলেন।

আরও পড়ুনঃ “আজকের প্রজন্ম পাশ্চাত্যমুখী, রক গানে ডুবে আছে আর বাংলা গানেও সেই ছায়া খোঁজে!” “এখন শিল্পীদের ঘোর দুর্দিন, প্রচুর লড়তে হচ্ছে!”— নতুন বাংলা গান নিয়ে হতাশ অন্তরা চৌধুরী! শিশুকণ্ঠে ‘বুলবুল পাখি ময়না টিয়ে’ আজও সমান জনপ্রিয়, নতুন প্রজন্মে বাংলা উচ্চারণ হারাচ্ছে বলে ক্ষোভ তাঁর!

সব মিলিয়ে টলিউডের পর্দার লড়াই এখন রাজনীতির মঞ্চেও গড়িয়েছে। দর্শকেরা একদিকে ছবিগুলির রোমাঞ্চে মেতে উঠলেও, অন্যদিকে তারকাদের এই বাকযুদ্ধ নিয়ে মজা নিচ্ছেন সমাজ মাধ্যমের নটিজেনরা। কোন ছবি শেষ পর্যন্ত সেরা প্রমাণিত হয়, তা সময় বলবে। তবে এই মুহূর্তে নিশ্চিতভাবে বলা যেতেই পারে, পুজোর মরশুমে যেমন ছবিগুলি নিয়ে উত্তেজনা রয়েছে, তেমনই রাজনীতির আঁচেও বাড়তি গরমে ঘাম ছুটেছে টলিপাড়ার।