এই মুহূর্তে টলিপাড়ার অন্যতম সফল অভিনেত্রী ‘কৌশানী মুখোপাধ্যায়’-এর (Koushani Mukherjee) বাড়ির কালীপুজোও বেশ জনপ্রিয়। আট বছর ধরে নিয়মিতভাবে তিনি এই পুজো আয়োজন করে আসছেন নিজের বাড়িতেই। কাজের ব্যস্ততার মাঝেও পুজোর সব আয়োজন তিনি নিজে হাতে করেন-চন্দন বাটা, ফুলের মালা গাঁথা, মায়ের গয়না-শাড়ি থেকে শুরু করে প্রতিটি খুঁটিনাটি কাজে তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি থাকে। পুজোর দিন নির্জলা উপোস করে দেবীর আরাধনা করা তাঁর বহু বছরের নিয়ম। এমন মনোযোগ ও নিষ্ঠা দেখে অনেকেই কৌশানীর ভক্ত, কারণ এই ব্যস্ত সময়ে এমন বিশ্বাসে স্থির থাকা সহজ নয়।
তবে এবারের কালীপুজো শেষে যা ঘটালেন অভিনেত্রী, তা তাঁকে আবারও সংবাদ শিরোনামে নিয়ে এসেছে, তবে খুব ইতিবাচকভাবে নয়। পুজোর দিনেই সাংবাদিকদের সামনে মা কালীকে নিয়ে এমন কিছু মন্তব্য করে বসেন অভিনেত্রী, যেটা সমাজ মাধ্যমে জন্ম দিয়েছে তুমুল বিতর্কের। কি এমন বললেন অভিনেত্রী? পুজোর দিন বাকি অতিথিদের সঙ্গে সঙ্গে, অভিনেত্রী বাড়িতে ভিড় জমিয়েছিল বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা। সাংবাদিকদের সামনে কৌশানী বলেন, “মায়ের গলায় যে সোনার হারটা দেখছেন, সেটা আমি গিফট করেছি।”
কথাটা শুনে প্রথমে কেউ হয়তো হেসে উড়িয়ে দিতে পারতেন, কিন্তু যখন তিনি যোগ করেন, “দিয়ে দাও ফুটেজ লাইভ, সবাই দেখুক,” তখনই বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে। সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সেই ভিডিও, আর শুরু হয় কটাক্ষের ঝড়। সত্যি বলতে, ভক্তি আর প্রদর্শনের মধ্যে যে সূক্ষ্ম সীমারেখা, কৌশানীর কথায় সেটাই যেন ঝাপসা হয়ে গেল। পুজো মানে শুধুই জাঁকজমক নয়, বরং একরাশ শ্রদ্ধা, মনের শান্তি ও আত্মসমর্পণ। সেই জায়গা থেকে দেখলে “গিফট করেছি” বলাটা যেন এক অদ্ভুত আত্মপ্রদর্শনের ছাপ রাখে।
ঈশ্বরকে উপহার দেওয়া যায় না, তাঁকে অনুভব করা যায়– এটাই আমাদের সংস্কৃতির মূল শিক্ষা। এই নিয়ে সমাজ মাধ্যমে একজন বলেছেন, “মা কালীকে কিছু গিফট করা যায় বাপের জন্য প্রথমবার শুনলাম! উল্টে মা-ই আমাদের সুযোগ করে দেন ওই জিনিসটা তাঁকে দেওয়ার।” কেউ আবার সরাসরি কটাক্ষ করে বলেছেন, “কতটা অহংকারের কথা, উনি চারটে সিনেমা করে নিজেকে সুচিত্রা সেন মনে করছেন, জগৎ জননীকে নাকি উনি গিফট করেছেন গয়না!” অন্য কেউ বলেছেন, “তুমি কালীপুজো করছ, না লোক দেখানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছ!”
আরও পড়ুনঃ ‘ও মেয়ে হয়ে জন্মালেও নিজেকে ছেলে বলেই বিশ্বাস করে!’ নিজের বোনকেই ভাই ফোঁটা দেন অভিনেত্রী এনা সাহা! বিশেষ নিয়মে উদযাপিত হয় ভাই ফোঁটা
অন্যজন বলেছেন, “কে আপনি যে মাকে গিফট দিচ্ছেন? এত বড় ক্ষমতা হয় কি করে, কথাটা বলার? আরও একজন বলেছেন, “অহংকার পতনের কারণ, অহংকারকারীদের থেকে মা কিছু নেন না বরং সব কেড়ে নেন।” উল্লেখ্য, কৌশানী নিঃসন্দেহে একজন প্রতিভাবান অভিনেত্রী, তাঁর পরিশ্রম ও অর্জন অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু মানুষ যতই সাফল্যের শিখরে উঠুক, ভক্তির জায়গায় বিনয়টাই সবচেয়ে বড় গয়না। অনেকেই মনে করছেন, কৌশানীর উচিত ছিল নিজের বিশ্বাসের প্রকাশটাকে একটু সংযমের সঙ্গে উপস্থাপন করা। কারণ, ঈশ্বরকে দেখানোর জন্য নয়, নিজের ভেতরের আলো জ্বালানোর জন্যই পুজো করা হয়।