“মমতা সবার পাশে দাঁড়ায়, অতীতে এমন মুখ্যমন্ত্রী দেখিনি!”— আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘বঙ্গ-বিভূষণ’ পেয়ে আপ্লুত আরতি মুখোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ! শিল্পীর মন্তব্যে সমাজ মাধ্যমে শুরু বিতর্কের ঝড়! প্রশ্ন উঠছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ধরন নিয়ে!

বাংলা সংগীত জগতের এক অবিচ্ছেদ্য নাম ‘আরতি মুখোপাধ্যায়’ (Aarti Mukherji)। তাঁর কণ্ঠ যেন সময়ের সীমানা ছাড়িয়ে আজও অনুরণিত হয় অসংখ্য শ্রোতার মনে। শিশুস্বর থেকে শুরু করে চলচ্চিত্রের রোমান্টিক গান— প্রতিটি ঘরানাতেই তিনি নিজের ছাপ রেখে গিয়েছেন অমলিনভাবে। ১৯৫০-এর দশকে যে গানের যাত্রা শুরু করেছিলেন, তা পরে বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের প্রতীক হয়ে ওঠে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁর গানে খুঁজে পেয়েছে নস্টালজিয়া, শ্রদ্ধা আর আবেগের মেলবন্ধন।

গানের মধ্যে ‘হার মানা হার’, ‘বন্যার মতো এসেছো প্রিয়’, ‘আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা’, ‘তুমি রবে নীরবে’— এমন কত শত গান আজও বাঙালির স্মৃতির অঙ্গ। তাঁর গলায় সেই সুরগুলো যেন এক অন্য রকম মায়া তৈরি করত, যা সহজে ভোলার নয়। আধুনিক গান থেকে শুরু করে গীতিনাট্য— প্রতিটি ধারাতেই আরতি মুখোপাধ্যায়ের স্বর হয়ে উঠেছিল নিখুঁত এক সুরেলা শিল্প। তাই তো তিনি কেবল গায়িকা নন, বাংলা সংগীতের আবেগময় মুখ।

সম্প্রতি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (KIFF) উদ্বোধনী মঞ্চে তাঁকে বিশেষভাবে সম্মান জানাল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজ হাতে তাঁকে তুলে দিলেন রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান ‘বঙ্গ বিভূষণ’। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা জানেন আরতিদি আমাদের কি কি দিয়েছেন। কিন্তু আমরা তাঁকে কোনওদিন কিছু দিতে পারিনি… বাংলার মাটির দান আপনি গ্রহণ করলে, তাতেই আমরা কৃতজ্ঞ হব।” এই কথার পরই দর্শকাসনে তৈরি হয় আবেগঘন পরিবেশ।

এরপরেই দেখা যায়, মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রীকে থামিয়ে আবেগে আপ্লুত গলায় আরতি মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি কিন্তু খুব ভালবেসে এটা নিয়েছি। মমতা, তোমার কাজ আমি পছন্দ করি। বিশেষ করে সঙ্গীতের জন্যে তোমার চেষ্টা, শিল্পীদের পাশে তোমার থাকা…সমস্যা হলে তুমি তাঁদের পাশে দাঁড়াও। অতীতে কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে দেখেনি এভাবে পাশে থাকতে। তোমার কাজই তোমায় স্মরণ করাবে, মিলিয়ে নিও।” তাঁর কথায় এদিন স্পষ্ট ছিল কৃতজ্ঞতা। তিনি আরও বলেন, সারাজীবন দিয়ে গেছেন কেবল সুরের মাধ্যমে, বিনিময়ে পেয়েছেন শ্রোতার ভালোবাসা আর সম্মান।

আরও পড়ুনঃ “বাইরে ভালো মানুষের মুখোশ…কিন্তু ভিতরে ও মানুষ নয়, দা’নব একটা!” “মানসিক নির্যা’তন থেকে বাঁচতে, হাত জোড় করে ছেড়ে দিতে ভি’ক্ষা চাই!”— বিস্ফো’রক অভিযোগে সরব অভিনেতা সুরজিৎ সেনের স্ত্রী রীত মণ্ডল! উঠল নোং’রা মানসিকতার অভিযোগ, প্রকাশ্যে আনলেন চাঞ্চল্যকর তথ্য!

তবে অনুষ্ঠান শেষে আরতি মুখোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা ঘিরে সমাজ মাধ্যমে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ বলছেন, এক শিল্পীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মধ্যে রাজনৈতিক রঙ খোঁজা ঠিক নয়। অন্যদিকে, বিরোধী মতের একাংশ মনে করছেন, “এভাবে কোনও রাজনৈতিক নেতাকে মঞ্চে প্রশংসা করা একজন শিল্পীর পক্ষে শোভন নয়।” ফলে শুরু হয়েছে নানান তর্ক-বিতর্কের ঝড়— কেউ বলছেন এটি নিছক ভালোবাসার প্রকাশ, আবার কেউ প্রশ্ন তুলছেন এই উচ্ছ্বাসের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে।