ইচ্ছে শক্তিতে বলীয়ান হয়ে চরম দারিদ্র্যকে জয় করে মাত্র ২১ বছরে আইএএস অফিসার অটোচালকের সুপুত্র!

মানুষের জীবন মানেই সংগ্রাম এবং সেই সংগ্রাম হয়তো আরও দ্বিগুণ বেড়ে যায় আর্থিক সমস্যার কারণে। এরকম অনেক শিশুরাই রয়েছেন যারা অর্থের কারণেই শেষ করে উঠিতে পারেননি তাদের পড়াশোনা। অনেককেই আবার ছোট দেখেই লেখাপড়ার হাত ছেড়ে ধরে নিতে হয়েছে কর্মের হাত। শিশু এবং শিক্ষার জীবন ভুলে তাদের বাস্তবের কঠিন সত্যকে মেনে নিয়ে তাদের শুরু করতে হয়েছে অর্থ উপার্জন। এই ধরনের উদাহরণ আমাদের সমাজে নেহাতই কম নয়। কন্যা সন্তান হলেই পিতা মাতা অর্থের অভাবে তাদের পড়াশোনা না করতে পেরে দিয়ে দিয়েছেন তাদের বিবাহ।

হয়তো সেই মেয়েটির মেধা ছিল, বুদ্ধি ছিল কিন্ত পরিস্থিতি সামনেই হারে মেনে নিয়ে হয়েছে তাকে আবার অনেক ছেলের ক্ষেত্রে দেখা গেছে পিতা মাতা অর্থের অভাবে কারণে তাদের লেখাপড়া না করিয়ে লাগিয়ে দিয়েছেন দিন মজুরের কাজে, শিশু বয়সের সচল মস্তিষ্ক যাকে ঘষে মেজে হয়তো তাকে তৈরি করা যেত পুলিশ, ইঞ্জিনিয়ার বা শিক্ষক কিন্তু অর্থের অভাব তার থেকে কেড়ে নিয়েছেন তার বড় হয়ে ওঠার, চাকরি করার বা প্রতিষ্টিত হওয়ার স্বপ্ন। তবে সব কিছুই তো রয়েছে দুটি দিক। সমাজেরও তাই। একদিকে যেমন আমরা এরকম উদাহরণ দেখতে পাই ঠিক একই দিকে আমরা দেখেছে এরকম অনেক মানুষকে, এমন অনেক পিতা মাতাকে যারা নিজেরা না খেয়েও শিশুর হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন বই।

অক্লান্ত পরিশ্রম করে তারা প্রতিষ্টিত করছেন তাদের ছেলেমেয়েদের। সেরকমই একটি কাহানি হয়েছে আজকে। শুনতে গল্পের মতো মনে হলেও আদতে সেটি বাস্তব। দরিদ্রতা ছোটো দেখেই সঙ্গে ছাড়েনি তার। একসময় এরকম পরিস্থিতি হয়েছিল যখন তার মনে হয়েছে এবার পড়াশোনাও হয়তো ছাড়তে হবে তাকে। তবে মনের সাহস হারাননি তিনি কখনই, লড়ে গেছেন। আর সমস্ত প্রতিকূলতাকে হারিয়ে এখন মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি হয়েছেন IAS অফিসার।

আনসারের বাবা পেশায় ছিলেন একজন অটোচালক। তবে ছোট বেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলেন আনসার। স্কুলে বরাবরই ভালো ফল করছে সে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বোর্ডে ৯১ শতাংশ নম্বর পেয়ে স্টার মার্কস নিয়ে পাশ করেছিল সে। এরপর স্নাতক পরীক্ষাতেও ৭৩ শতাংশ নম্বর নিয়ে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে পাশ করছিল আনসার। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণেই পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল তাকে। এত মেধাবী ছাত্র পড়াশোনা করবে না! সেটা মেনে নেয়নি স্কুল। এগিয়ে আসে তার হাত ধরেন স্কুলের শিক্ষকরা।

আরো পড়ুন: ঔদ্ধত্যের চরম সীমা পার কাঞ্চন-শ্রীময়ীর! বৌভাতে প্রেস, সিকিউরিটি, ড্রাইভার নিষিদ্ধ! অপমানের জবাবে কাঞ্চনকে বয়কটের সিদ্ধান্ত মিডিয়ার!

তারপরই আনসার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে UPSC পরীক্ষার। তবে UPSC পড়ার পাশাপাশি অর্থ উপার্জন করে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই কাজ করতেও শুরু করে সে। দেশের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা যেখানে বছরের পর বছর পরীক্ষা দিয়েও উত্তীর্ণ হতে পারেনা ছাত্রছাত্রীরা। ২০১৫ সালে সে পরীক্ষা দিয়ে প্রথমবারেই সে ৩৬১ স্থান লাভ করে। তার এই সাফল্যতায় খুশি তার পরিবার সহ তার স্কুলের শিক্ষকরা। মাত্র ২১ বছরে IAS অফিসার হয়ে তিনি অনুপ্রাণিত করেন সারা দেশের সমস্ত ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের। তিনি প্রমাণ করেছেন আর্থিক সচ্ছলতা না থাকলেও দুর্গম পথ অতিক্রম করে লক্ষ্য ভেদ করা সম্ভব যদি মনে সে সাহস আর জেদ থাকে।