কপালে বড় কালো টিপ, চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, পরনে সাদা শাড়ি, মাথায় সবসময় ঘোমটা দেওয়া। অপরূপ সুন্দরী তিনি, কম বয়সে যে রূপের জৌলুস ছিল তা দেখে বোঝা যায় এখনও। ভিক্ষাবৃত্তি করা কোনো পৌঢ়ার, এমন সাজ হতে পারে তা অনেকেই ঠাওর করতে পারেন না। এমনই এক মহিলা যদি আপনার কাছে ভিক্ষার হাত বাড়ায় আপনি কিছু দেবেন নাকি এড়িয়ে যাবেন? সম্ভবতই কেউ আন্দাজ করতে পারছেন না এমন কেউ ভিক্ষাবৃত্তির জন্য রাস্তায় দাঁড়াতে পারে। কিন্তু কলকাতার রাস্তায় দেখা গেল এমনই এক ছবি।
পার্কস্ট্রিটে পাঁচতারা হোটেলের বাইরে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন নম্র, ভদ্র এক সুন্দরী বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। শুনতে খটকা লাগছে? তবে এটাই সত্যি। বয়স ৭৫ এর কাছাকাছি, নাম ডলি তালুকদার। স্বভাবতই এত সুন্দরী প্রৌঢ়া কলকাতার পাঁচতারা হোটেলের বাইরে দাঁড়িয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন দেখে অনেকেই অবাক হচ্ছেন। জানা গেছে, তিনি এক সময় যুক্ত ছিলেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সাথে। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন, নিজের বলতে এখন আর কেউ নেই। খাবারের কোনো শখ নেই, কেউ অল্প কিছু দিলে, সেই টাকায় পান, চা, জল খেয়েই সময় কাটান।
ডলি তালুকদার গড়িয়ার বাসিন্দা। রোজ তিনি গড়িয়া থেকে বাস ধরে পার্ক স্ট্রিটে আসেন দু’মুঠো রোজগারের আশায়। এই বয়সে তাকে দেখার মতো আজ কেউ নেই। পাঁচতারা হোটেলের বাইরে কেউ তাকে লক্ষ্য করেন আবার কেউ এড়িয়ে যান। যারা লক্ষ্য করেন তারাই যা কিছু দেন তাই হাসিমুখে গ্রহণ করেন ডলি দেবী। তাঁর কোন চাহিদা নেই। ডলি দেবীর কথায়, “ভগবান পাঠিয়েছে, তিনি জোগাড় করে দেবেন।”
ডলি দেবীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি একসময় নার্সিং লাইনে ছিলেন তাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে পছন্দ করেন। তার জন্যই দরকার পড়ে টাকার। ডলি দেবীর কথায়, “২০০১ সালে আমার স্বামী মারা যায়, সে সময় অনেক কষ্ট করে চালিয়েছি। এখনও কষ্টের দিন শেষ হয়নি। ভগবান আমায় অনেক আশীর্বাদ করেছেন সেই আশীর্বাদ নিয়ে যেতে পারলে বাঁচি।”
আরও পড়ুন: বুবাই সুস্থ হতেই, বেকায়দায় আকাশ ভৌমিক! অপরাধীদের শাস্তি দেবে দাবাং পর্ণা!
ডলি তালুকদারকে দেখে স্পষ্ট তিনি কোন ভদ্র বাড়ির বউ। অভাবের দায়ে রাস্তায় এসেছেন। তার কণ্ঠস্বর আপনাকে মাতিয়ে রাখবে। নিরুপায় হয়ে তিনি রাস্তায় ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিয়েছেন। ডলি তালুকদারের এই ভিডিও বাপন দাস নামের এক পুলিশ কর্মী, তার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল থেকে শেয়ার করেছেন। মুহূর্তে এই সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।