প্রতারণা করেছে দিদি! স্ত্রী মেয়েকে হারিয়ে কেমন আছেন ৯০-এর দশকের জনপ্রিয় নায়ক লোকেশ ঘোষ?
বাংলার একসময়কার জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন লোকেশ ঘোষ। একসময়কার জনপ্রিয় পরিচালক দেবেশ ঘোষের পুত্র তিনি। তার জন্ম এবং বড় হয়ে ওঠা মুম্বাই শহরে। মুম্বাইয়ে থাকাকালীন তিনি অভিনয়ের সঙ্গে পরিচিত হন। বেশ কিছু হিন্দি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু তার চারিত্রিক ত্রুটির জন্য তার বাবা তাকে অনেক শাসনই রাখতেন শোনা গেছে ছোটো থেকেই খুব ডানপিটে এবং দুষ্ট স্বভাবের ছিলেন তিনি। একবার তরুণ বয়সে সিগারেট খেতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি, বাবা দেবেশ ঘোষ তাকে ১ সপ্তাহ গৃহবন্দি করে রেখে ছিলেন।
কলকাতায় এসেই অভিনয় জগতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন লোকেশ। কিন্তু বাবা তাকে কোনও রকম সাহায্য করেননি। উল্টে তার পরিচিত সকলকে তিনি বলেছিলেন তার ছেলেকে অভিনয়ে না নিতে। তার কারণ তিনি চেয়ে ছিলেন তার ছেলে নিজের পরিচয় নিজে তৈরী করুক, সেকথা স্বীকার করেছে লোকেশ নিজেই। যদিও তার অভিনয় জীবনে সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব অঞ্জন চৌধুরীর এই বিষয়ে লোকেশ ঘোষ নিজেই নির্দ্বিধায় সংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন অভিনয় জগতে তার নাম গড়ে তোলার পিছনে অঞ্জন চৌধুরীর কৃতিত্ব সবচেয়ে বেশি।
১৯৯৬ সালে অঞ্জন চৌধুরীর সিনেমা নাচ নাগিনী নাচ রে মাধ্যমেই তিনি পা রাখেন অভিনয় জগতে। তার বিপরীতে এই সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন চুমকি চৌধুরী। এই সিনেমাটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। সেই সময় রঞ্জিত মল্লিক, তাপস পাল, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, চিরঞ্জিতের মতো নাম করা অভিনেতাদের সঙ্গে একই গতিতে সিনেমা করতে শুরু করেন তিনি। এছাড়াও শ্রীমান ভূতনাথ, মাতৃভূমি, লোফার, কৃষ্ণা কাবেরী,গুঁড়া, রাখি পূর্ণিমা, আসল নকল, বারুদ সহ নানান সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
তার বেশির ভাগ সিনেমাতেই তার বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা গেছে অঞ্জন চৌধুরীর মেয়ে চুমকি চৌধুরীকে। পর্দায় ভালোবাসা রূপ নেয় বাস্তবেও। পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন তারা। তাদের একটি কন্যা সন্তানও হয় কিন্তু সংসার টেকেনি তাদের। তার পিছনে অন্যতম কারণ লোকেশের চারিত্রিক ত্রুটি। জানা গেছে রোজ মদ্যপান করতেন তিনি। অনেকবার স্ত্রী চুমকি চৌধুরীর গায়ে হাতও তুলেছেন তিনি। মেয়ের এই করুন অবস্থা মেনে নেননি অঞ্জন চৌধুরী। বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তাদের। মেয়েকে নিয়ে চলে আসেন চুমকি চৌধুরী, পরে বিয়েও করেছেন চুমকি।
২০০৪ সালে তার বাবা মারা যাওয়ার পর তার দিদি সমস্ত সম্পত্তি নিয়ে নেন। লরির দালালি থেকে হোটেলের ব্যাবসা সবই করেছেন তিনি। মেয়ের সঙ্গে এই ব্যবহার করার অপরাধে তাকে নিজের কোম্পানি থেকে বার করে দেন অঞ্জন চৌধুরী। শেষবার তাকে দেখা গিয়েছিল ২০১৩ সালের ভগবানের মাথায় হাত সিনেমায়। তারপরও বদলাননি তিনি। জানা গেছে একজন গায়িকা বান্ধবী ছিল তার। তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল দুই বছরের। একদিন লোকেশ তাকে শরীর খারাপের কথা বলে বাড়িতে ডাকেন। বাড়িতে গিয়ে লোকেশকে মদ্যপ অবস্থায় দেখতে পান তিনি।
লোকেশের ফোন দেখে তিনি জানতে পারেন একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আছেন তিনি। সেই নিয়ে তাদের মনোমালিন্য হাতাহাতির পর্যন্ত পৌঁছায়। কসবা থানায় অভিযোগ জানান তিনি। তবে সম্প্রতি লোকেশ জানিয়েছেন তিনি শুধরে গেছেন, আবার অভিনয়ে ফিরছেন তিনি। তার কিছু সিনেমা শীঘ্রই মুক্তি পেতে চলেছে। তাহলে এই বিষয়ে আপনাদের কি মত লোকেশ কি ঘরতে পারবেন সিনেমার জগতে পুনরায় তার পরিচিতি।