Komola o Sriman Prithviraj: পরিবার, সমাজের বিরুদ্ধে লড়ে পুত্রবধূকে নিজের মতো উকিল বানাবে কমলার শ্বশুর! সেই সময়ে দাঁড়িয়ে এই সিদ্ধান্ত সত্যিই কতটা বুকের পাটা লাগে! মুগ্ধ দর্শক

নতুন সব ধারাবাহিকের জায়গা করে দিতে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পুরনো সব ধারাবাহিক। আসলে শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই যদি দর্শকদের মনে রাজত্ব করতে না পারা যায় তাহলে সেই সব ধারাবাহিককে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ করে দেওয়াই হচ্ছে। আর তাই অল্প সময়ে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিতে পারাটাই বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়।

গত ১৬ ই মার্চ থেকে টেলিভিশনের পর্দায় শুরু স্টার জলসার ধারাবাহিক কমলা ও শ্রীমান পৃথ্বীরাজ। বলা যায় সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বাদের একটি ধারাবাহিক এটি। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে দর্শকদের মনে রাজত্ব করা শুরু করে দিয়েছে এই ধারাবাহিকটি। আসলে চিরাচরিত গল্পের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বাদের এই গল্প দর্শকদের মন ছুঁয়ে গেছে। সেই সঙ্গে কমলা ও পৃথ্বীরাজের অর্থাৎ শিশু অভিনেত্রী অয়ন্যা চ্যাটার্জী ও অভিনেতা সুকৃত সাহার অসামান্য অভিনয় দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে।

এই ধারাবাহিকে উঠে এসেছে ইংরেজ শাসনে গোঁড়া বাঙালি সমাজের গোঁড়ামির চিত্র। নারী স্বাধীনতা যেখানে অপরাধ সমান। স্ত্রী শিক্ষা নাকি বৈধব্যের কারণ। বিদেশি শব্দ মুখে আনলে নাকি পাপ হয়। মেয়েদের শিক্ষা থেকে খাওয়া গান-বাজনা সবেতেই বড্ড বেশি নিয়ন্ত্রণ‌। কিন্তু পুরুষদের জন্য ছাড় সবকিছুতেই। উল্লেখ্য, সমাজের সেইসব গোঁড়ামিকেই এবার তুলে ধরা হচ্ছে ধারাবাহিক কমলা ও শ্রীমান পৃথ্বীরাজের। শ্বশুরবাড়িতে এসে সমাজের এই অচলায়তনের মধ্যেই বন্দি হয়ে পড়েছে কমলা। আর সেই অচলায়তনে সে পাশে পেয়েছে নিজের শশুর মশাই, স্বামী এবং বড়মাকে।

আসলে সেই যুগে এক বাঙালি শ্রেণি ইংরেজ ব্যবস্থাকে আপন করে নিয়েছিল। আর এক শ্রেণীর মানুষের কাছে ইংরেজরা ছিল পাপ সমান। আর কমলা নিজের বাবার বাড়িতে গান-বাজনা থেকে পড়াশুনা সব‌ই শিখেছে। এবং সবেতেই সে তুখোড়। মেম সাহেবরা এসে তাঁকে গান-বাজনা শিখিয়েছে। ইংরেজি ভাষা শিখিয়েছে। তবে কমলার শ্বশুরবাড়িতে পিসিশ্বাশুড়ি দাপটে স্ত্রী শিক্ষা বন্ধ। শ্বশুরবাড়িতে এসে ইংরেজি গান গাওয়ার অপরাধে পাপমোচনের জন্য কমলার মাথায় গোবর ঢেলে দেওয়া হয়েছে। যদিও স্ত্রীয়ের এমন অপমান মেনে নিতে পারেনি কমলার স্বামী পৃথ্বীরাজ। মেনে নিতে পারেনি কমলার শ্বশুর মশাইও।

বলা যায়, শ্বশুরবাড়িতে এসে কমলা যেন তাঁর বাবাকেই আবার ফিরে পেয়েছে। পুত্রবধূ কমলার পড়াশুনার প্রতি তীব্র ভালোবাসা দেখে তাঁকে আর‌ও পড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। নিজের পুত্রবধূকে নিজের মতোই উকিল বানাতে চান তিনি। আর যার জন্য নিজের পরিবার এবং সমাজের বিরুদ্ধে লড়তেও প্রস্তুত তিনি। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে কট্টর সামাজিক গোঁড়ামির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন তিনি নিজের পুত্রবধূর জন্য। আর যা দেখে প্রশংসায় মুখর নেটিজেনরা।

দর্শকরা তাই বলছেন, শ্বশুর এবং পুত্রবধূর এমন জুটি অনুপ্রেরণার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁদের কথায় কমলার শ্বশুরের কোন‌ও জবাব নেই। নিঃসন্দেহে সেই যুগে দাঁড়িয়ে সামাজিক অচলায়তনকে ভাঙার এই চেষ্টা করার জন্য তিনি প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য দাবিদার। তবে একা শ্বশুর মশাই নন। কমলাকে আর‌ও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে প্রস্তুত কমলার স্বামী মানিক অর্থাৎ পৃথ্বীরাজ।আর সেইসঙ্গে আছে বড় মায়ের স্নেহ। দর্শকরা আশাবাদী অবশ্যই কমলা একদিন বড় উকিল হবে।