Mithai-Mithi: মেয়েরা শুধু মেয়েদের শত্রু নয়, মেয়েরা মেয়েদের জীবনে আশীর্বাদও। আর তাইতো মিথ ভেঙে মিঠাইয়ের কষ্ট লাঘব করতে প্রাণপাত করছে মিঠি, খোলা চিঠি ভক্তের
বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয়তম ধারাবাহিক গুলির মধ্যে অন্যতম হলো মিঠাই(Mithai)। একটা সময় টিআরপি তালিকায় রাজত্ব করত এই ধারাবাহিক। আসলে মিঠাই ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা প্রথম থেকেই তুঙ্গে। এই ধারাবাহিক’কে তার স্থান থেকে টলানো কার্যত অসাধ্য হয়ে উঠেছিল অন্যান্য ধারাবাহিক গুলির পক্ষে। সিদ্ধার্থ(Sidharth) আর মিঠাইয়ের রোম্যান্স, মোদক পরিবারের পারিবারিক আনন্দে শামিল হয়েছিল বাঙালি দর্শক।
তবে দর্শক মনে ঝড় তোলা এই জুটির পথচলা কিছুদিন আগে হঠাৎই থমকে যায়। তবে দর্শকদের জন্য অন্য নাম নিয়ে অন্য চরিত্রে ফেরেন অভিনেত্রী সৌমীতৃষা কুন্ডু। মিঠি। অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্ত, প্রাণ চঞ্চল এই চরিত্রটি চোখের নিমেষে দর্শকদের মনে জায়গা করে নেয়। মিঠি’র সঙ্গে সিদ্ধার্থ’র সম্পর্ক যখন স্বাভাবিক হওয়ার পথে, তখনই সামনে আসে মিঠাইয়ের ফেরার খবর।
দীর্ঘদিন থেকে মিঠাইয়ের তৈরি আলাদা ছিল সিদ্ধার্থ! এই সময়টা মিঠাইয়ের ছেলে আর সিদ্ধার্থ’র খেয়াল রাখে মিঠি। তবে মহাশিবরাত্রি’র বিশেষ পর্বে বহুদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেখা হয় তাঁদের। স্মৃতি হারিয়ে কাউকেই চিনে উঠতে পারছে না মিঠাই। তাঁর স্মৃতি ফেরাতে বদ্ধপরিকর সিদ্ধার্থ। আর তার পাশে রয়েছে মিঠি। আসলে মিঠাইয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার জেরে স্মৃতি হারিয়েছে মিঠাই। অতীতের কথা যে কিছুই মনে পড়েনা তাঁর। মিঠিও সিদ্ধার্থ’র এই লড়াইয়ে তাঁর পাশে রয়েছে। সাম্প্রতিক প্রোমো’তে দেখা যাচ্ছে মিঠাইকে মনোহরায় ফের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু স্মৃতিভ্রষ্ট হওয়ার জন্য সে কাউকেই চিনতে পারছেনা।
মিঠাই মনহরাতে ফিরলে তাঁর স্মৃতি ফেরাতে আপ্রান চেষ্টা করে মিঠি। নিজের সমস্ত কষ্ট লুকিয়ে মিঠাই আর সিদ্ধার্থকে এক করতে উঠে পড়ে লাগে সে। মিঠাই চলে আসায় অনেকেই ভেবেছিল মিঠি চরিত্রটি হয়তো ভিলেনে পরিণত হবে। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি। উল্টে মিঠাইকে তাঁর আসল জীবন ফিরিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর মিঠি। মিঠাই এবং মিঠি এই দুই চরিত্রে সৌমীতৃষা’র অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছে দর্শকরা।
আসলে কমবেশি সব ধারাবাহিকেই দেখানো হয় মেয়েরা মেয়েদের সব থেকে বড় শত্রু। একজন মেয়েই সব সময় নীচে টেনে নামাতে চায় অন্য নারীকে। আর সেখানেই ব্যতিক্রম মিঠাই। সেখানে দেখানো হচ্ছে মিঠাইয়ের এই অসহায় সময়ে তাঁর পাশে তাঁর হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে মিঠি। আর গতকাল ছিল বিশ্ব নারী দিবস। এই বিশেষ দিনে এই ধারাবাহিকের গুণমুগ্ধ এক ভক্ত সোশ্যাল মাধ্যমে মিঠাই টিমের উদ্দেশ্যে কলম ধরলেন! তিনি লিখলেন, “একটি কথা খুব প্রচলিত রয়েছে যে মেয়েরা নাকি মেয়েদের শত্রু! মেয়ে বলে নয় শত্রুতা হয়তো সুযোগ পেলে মানুষ মানুষের সাথেই করে। মেয়েরা যে মেয়েদের জীবনে আশীর্বাদ হতে পারে, এক মেয়ে অন্য জনের জন্য লড়তে পারে তার নজির তো টেলিভিশনের পর্দায় দেখতেই পাচ্ছি। আপন সত্তা ভোলা মিঠাই যে কিনা এখন শুধুই মিষ্টির মা। তেজি দূরদর্শী মিঠাই রানি ভাগ্যের ফেরে হয়ে গেছে অসহায় ও লোভীমানুষদের হাতে জিম্মি। কিন্তু তার জীবনের কষ্ট লাঘব করতে আবির্ভাব ঘটে আরেক নারীর। মিঠি, সাহসে ও মানসিকতায় খুব উঁচু দরের মানুষ। সে লড়ছে আরেক উঁচু দরের মানুষের জন্যই।”
তিনি আরও লিখেছেন, “টেলিভিশনে যখন এক নারী আরেক নারীকে টেনে নিচে নামাচ্ছে দেখানো ট্রেন্ড ঠিক তখন এমন উল্টো পথে হাটার জন্যে মিঠাই টিমকে ধন্যবাদ জানাই।
আমি আজ ভীষণভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই সৌমিতৃষা ফ্যানডোমের নারীদের। তোমরা সকল মিথ ভুল প্রমাণিত করেছ। তোমরা দেখিয়ে দিয়েছ কীভাবে মেয়েরা একজন অভিনেত্রীকে সাপোর্ট করতে পারে৷ নারী অভিনয়শিল্পীদের পথ চলাটা অতটা মসৃণ হয়না, তাদের পান থেকে চুন খসলে দোষ হয়, চরিত্রে ওঠে আঙুল, হতে হয় কারনে অকারনে ট্রোলড। তোমরা দেখিয়ে দিয়েছ প্রকৃত নারী সত্তার বিকাশ অন্য কাউকে উপরে উঠতে দেখলে খুশি হতে পারাতেই রয়েছে। ভালবাসা ও শ্রদ্ধা সকলের জন্য।”