নাটকীয় মোড়ে পৌঁছেছে ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ (Chirodini Tumi Je Amar) ধারাবাহিকের দুই মুখ্য অভিনেতা জীতু কামাল (Jeetu Kamal) এবং দিতিপ্রিয়া রায়কে (Ditipriya Roy) ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক। সোমবার রাতে আচমকাই নিজের সমাজ মাধ্যমের পাতায় দীর্ঘ এক পোস্ট করেন দিতিপ্রিয়া, যেখানে নাম না করেই সহ-অভিনেতার প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। পোস্টে অভিনেত্রী এমন কিছু হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের ইঙ্গিত দেন, যেগুলিকে তিনি ‘অনৈ’তিক’ এবং ‘অশা’লীন’ বলেই মনে করেছেন।
উল্লেখ্য, এই সমগ্র বিতর্কের সূত্রপাত একটি ‘এআই’ জেনারেটেড ছবিকে কেন্দ্র করে, যেখানে দু’জনকে চুম্বন করতে দেখা গিয়েছিল। এই ছবি ভাইরাল হতেই শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা। প্রথমদিকে দিতিপ্রিয়া বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও, সময় গড়াতেই গুঞ্জনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং কিছু বার্তা তাঁর কাছে সীমা লঙ্ঘনের পর্যায়ে পৌঁছায় বলে মনে করেন তিনি। সেই কারণেই তিনি নীরবতা ভেঙে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন সমাজ মাধ্যম পোস্টে।
তবে দিতিপ্রিয়ার এমন বিস্ফোরক পোস্টের পর এবার পালটা জবাব দিতে মাঠে নামলেন জীতু! তিনিও নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেন, যেখানে তিনি অভিনেত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট প্রকাশ করেন। যদিও দিতিপ্রিয়ার নাম বা নম্বর প্রকাশ করেননি তিনি, বরং তাঁকে ‘বাচ্চা মেয়ে’ বলে সম্বোধন করেন এবং নম্বর ঝাপসা করে দেন। লেখার শুরুতেই উল্লেখ করেন, তিনি সাধারণত নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন না, কিন্তু এবার বাধ্য হয়েই মুখ খুলছেন।
কারণ বিষয়টি শুধুই ব্যক্তিগত নয়, পেশাগত সম্মান ও ভবিষ্যতের দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। জীতুর মতে, এই ঘটনা আসলে “ছোট্ট সমস্যা”, যা অকারণে বড় আকার নিচ্ছে। তাঁর দাবি, দিতিপ্রিয়ার পিছনে এমন কিছু মানুষ রয়েছেন যারা তাঁকে ভুল পথে চালনা করছেন এবং সময় পড়লে পাশে দাঁড়াবেন না। অভিনেতা লেখেন, “এই মেয়েটিকে পেছন থেকে প্রবঞ্চনা দেওয়া হচ্ছে। যারা দিচ্ছে তারা কিন্তু এই মেয়েটির বিপদের সময় পাশে দাঁড়াবে না। প্লিজ মেয়েটিকে মেয়েটির পথে থাকতে দিন।”
তিনি আরও বলেছেন, ‘‘নিজেও হয়তো জানে না, যা করেছে সেটা কতটা গভীর। রাখাল যেদিন সত্যি মানুষখেকো বাঘের মুখে পড়বে, সেদিন কিন্তু কেউ সেটা বিশ্বাস করবে না! তবুও ছোট তো, একটু স্নেহ আর ভালোবাসা দিয়ে মার্জনা করবেন।’’ স্পষ্টতই, জীতু নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি দিতিপ্রিয়ার প্রতি একটা দায়িত্বশীল আহ্বানও জানিয়েছেন। এই টানাপোড়েনের পর থেকে ধারাবাহিকের পরিবেশ নিয়েও তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।
আরও পড়ুনঃ “পরিবারই আমার প্রথম অগ্রাধিকার!” “পরিবারের জন্য আমি যে কোনও কিছু ছাড়তে রাজি!” ঋদ্ধিমার দাদু-দিদার সঙ্গে বেড়াতে যেতে কাজ ছেড়ে দেন গৌরব! অভিনেতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ সমাজ মাধ্যম!
দুই মুখ্য চরিত্রের মধ্যে এই বিরোধ কেবল পর্দার বাইরেই নয়, শুটিং ফ্লোরেও প্রভাব ফেলছে বলে খবর। দিতিপ্রিয়া এখন কিছুটা গুটিয়ে রয়েছেন, তিনি তৈরি করেছেন নাকি ধারাবাহিক থেকে সরে আসার কাগজপত্রও। এদিকে টেলিপাড়ার কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, চলতি মাসেই শেষ হবে ধারাবহিকটি। অন্যদিকে, জীতুও এই পরিস্থিতি নিয়ে বিচলিত হলেও নিজের দিক থেকে অবস্থান স্পষ্ট করছেন। এই বিরোধ আদৌ কতদূর গড়ায় এবং এর প্রভাব ধারাবাহিক ও দর্শকসংখ্যার উপর কতটা পড়ে, এখন সেটাই দেখার।