পর্দার সন্তানের অকালমৃ’ত্যু, অকল্পনীয় শোকে স্তব্ধ অভিনেত্রী মালবিকা সেন! কাহিনির টানাপড়েন উস্কে দিয়েছে ব্যক্তিগত যন্ত্রণা, পর্দার ছেলেকে হারিয়ে স্মৃতিতে ভিড় করছে অকালে স্বামীকে হারানোর স্মৃতি!

টেলিভিশনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরসখা’-তে (Chiroshokha) এবার গল্প মোড় নিয়েছে এক গভীর আবেগঘন অধ্যায়ে। মালবিকা সেন (Malabika Sen) ওরফে অনন্যার জীবনে নেমে এসেছে অকল্পনীয় অন্ধকার, নি’থর ছেলেকে বুকে জড়িয়ে হাহাকার করে উঠছে সে। কখনও ভাবেনি, মায়ের জেদের কারণে এমন এক মর্মান্তিক মুহূর্তের মুখোমুখি হতে হবে তাকে। পরিবারিক টানাপড়েন, দায়িত্ব-অবহেলা আর ব্যক্তিগত রাগ-অভিমান মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এমন এক অবস্থান, যেখানে মায়ের ভুল সিদ্ধান্তই সন্তানের জীবনের ইতি টেনেছে।

লেখিকা গল্পকে এবার নিয়ে গিয়েছেন পরিণত প্রেম, দায়িত্ববোধ ও সমাজের অদৃশ্য চাপের দ্বন্দ্বে। প্লুটোর চরিত্রে অভিনয় করছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ছেলে– পার্থ বেরা। ছোট থেকে অভিনয়ের প্রতি তার আগ্রহ থাকলেও কলকাতায় এসে বহু ধারাবাহিকে কেবলমাত্র জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। এবার প্রথমবারের মতো গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তাকে দেখা যাচ্ছে, আর দর্শকও তার অভিনয়ে প্রশংসা করছেন। চরিত্রে ডুবে যেতে পারা এবং সেটি বাস্তবের মতো ফুটিয়ে তোলা যে সহজ নয়, তার উদাহরণ হয়ে উঠছে প্লুটোর আ’ত্মহ’ত্যার দৃশ্য।

জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে টান এনে চরিত্রকে আরও জীবন্ত করার চেষ্টাই করছেন তিনি। অন্যদিকে, অনন্যার চরিত্রে রয়েছেন অভিনেত্রী মালবিকা সেন। ছোটপর্দায় তার পথচলা শুরু হয়েছিল ‘ফাগুন বউ’ ধারাবাহিক দিয়ে। সেই সময় আবেগঘন দৃশ্যের শুটিং করতে গিয়ে ‘কাট’ বলার পরও ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেঁদে ফেলতেন তিনি। বাস্তব জীবনের যন্ত্রণা সেই সময় তার অভিনয়ে প্রভাব ফেলেছিল, কারণ স্বামীকে হারানোর বেদনা তখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি। মালবিকার মতে, আবেগঘন দৃশ্য ফুটিয়ে তোলার জন্য প্রচুর প্রস্তুতির দরকার।

অথচ টেলিভিশনের ব্যস্ত সময়সূচিতে তা খুব কমই পাওয়া যায়। ফলে অনেক সময়ই অভিনেতাদের ভেতরের অনুভূতি অজান্তেই বেরিয়ে আসে ক্যামেরার সামনে। গল্পের মূল দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে মায়ের অনমনীয় সিদ্ধান্ত আর ছেলের ভালোবাসার টানাপড়েনে। প্লুটো ভালবাসে কমলিনীর মেয়ে মিঠিকে, অথচ মায়ের চাপে তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয় মৌয়ের সঙ্গে। মনের সঙ্গে আপস করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনটাই শেষ করার পথ বেছে নেয় সে, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ারও সময় মেলেনি, হঠাৎ করেই থেমে যায় এক তরুণ প্রাণ।

আরও পড়ুনঃ ‘এত বছর তুমি কী বেচে নায়িকা হয়েছ সবাই জানে…’ সৌমি পালের বিস্ফো’রক কটাক্ষ শ্বেতা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে! টলিপারায় শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক!

এই কাহিনির মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারের সেই বাস্তব ছবিই, যেখানে সমাজ-পরিবারের চাপের কাছে ব্যক্তিগত ইচ্ছা ও প্রেম প্রায়ই পরাজিত হয়। অভিনেত্রী মালবিকা ও পার্থ দুজনেই একমত, অভিনয়ের সময় চরিত্রকে জীবন্ত করে তুলতে পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধন ভীষণ জরুরি। দীর্ঘ সময় ধরে একসঙ্গে শুটিং করতে করতে অজান্তেই তৈরি হয় এক আবেগী টান। পার্থ তাই এখনও মালবিকাকে ‘মা’ বলেই ডাকেন, এমনকি শুটের বাইরে গিয়েও। চরিত্রকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার পেছনে এই সম্পর্কগুলোই অভিনেতাদের শক্তি জোগায়।

You cannot copy content of this page