“সমকামী চরিত্রে অভিনয়ের পর থেকেই সবাই ভাবছে আমি সমকামী, এখানেই চরিত্রের স্বার্থকতা!” সমকামী চরিত্র অভিনয় করে নেটিজেনদের কটা’ক্ষের মুখে পড়ে মুখ খুললেন সায়ক চক্রবর্তী!

জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘তুই আমার হিরো’ (Tui Amar Hero) নিয়ে সম্প্রতি নেটপাড়ায় আলোচনার ঝড় উঠেছে। গল্পে দেখা যাচ্ছে, ঋতমের চরিত্রে অভিনয় করছেন ‘সায়ক চক্রবর্তী’ (Sayak Chakraborty)। প্রথমে নায়িকা আরশির দিদি কাঁকইয়ের সঙ্গে বিয়ে হলেও, বিয়ের পর ঋতমের আচরণে ঘটে বড় ধরনের পরিবর্তন। দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে সে। একটা সময় জানা যায়, স্ত্রীকে ছেড়ে সে প্রেমে পড়েছে একজন পুরুষের!

সমাজের চোখে নিজের বাস্তব পরিচয় লুকিয়ে রাখতে কাঁকইকে বিয়ে করেছিল সে। আর সেই সত্য শাক্য আর আরশির সামনে ধরা পড়তেই, ধারাবাহিকের চরিত্রদের থেকে শুরু করে দর্শকরাও অবাক হয়ে যান। এই দৃশ্য সম্প্রচারের পর থেকেই নেটিজেনদের মধ্যে চলতে থাকে তুমুল আলোচনা। বিশেষ করে, সমকামী চরিত্রে অভিনয় করায় সায়কের দিকে ধেয়ে আসে একের পর এক কটাক্ষ। কেউ কেউ এমনকি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মন্তব্য করতে শুরু করেন।

অনেক দর্শকের চোখে অভিনয় আর বাস্তব জীবনের পার্থক্য যেন একেবারেই মুছে গিয়েছে। সমকামী চরিত্রে অভিনয় করায় তাঁকে সমকামী বলে রটনাও ছড়াতে শুরু করে। তবে এই সব নেতিবাচক মন্তব্য নিয়ে খুব একটা ভাবতে রাজি নন সায়ক। বরং তিনি ইতিবাচক দিকেই বেশি মন দেন। তাঁর কথায়, “ইন্ডাস্ট্রিতে যারা আমার বন্ধু আছে, যেমন– নীলাঙ্কুর, আয়েন্দ্রী, প্রেরণা, অনন্যারা অনেক প্রশংসা করেছে। এমনকি শুটিংয়ের পর রুবেলরাও হাততালি দিয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন, দর্শকের চোখে চরিত্রের সাফল্যই আসল।

তাই ভালো-মন্দ সব ধরনের প্রতিক্রিয়া তিনি স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করছেন। অভিনেতার মতে, বাংলা টেলিভিশনের ইতিহাসে এই প্রথম এভাবে সমকামিতা নিয়ে কাজ হয়েছে। অন্য ভাষার গল্পে এরকম চরিত্র দর্শক আগেও দেখেছেন। সায়ক উদাহরণ টেনে বলেন, “ভুলভুলাইয়া ৩-এ কার্তিক আরিয়ানকে সমকামী চরিত্রে দেখেছেন দর্শক, প্রশংসাও করেছেন। তাতে কোনও অসুবিধা হয়নি! তাই এই ধরনের সাহসী পদক্ষেপ বাংলাতেও প্রশংসার যোগ্য।” তাঁর মতে, চরিত্রটি পর্দায় ফুটিয়ে তোলা সহজ ছিল না।

আরও পড়ুনঃ “বুড়ো-বুড়ি সিংগেলদের প্রেমের আসর!” “একটা বুড়োকে নিয়েই পাগল অবিবাহিত মেয়েরা, সে উল্টে তিন বাচ্চার মায়ের জন্য পাগল!” “সবাই কি স্বতন্ত্রকেই ভালোবাস?!”— লেখিকা লীনা গাঙ্গুলীকে নিশানা করলেন দর্শকরা! ত্রিকোণ প্রেম দেখে ক্ষুব্ধ দর্শক, ‘চিরসখা’ নিয়ে তীব্র সমালোচনা!

শাড়ি, ফলস চুল আর মেকআপ নিয়ে সারাদিন কাজ করতে গিয়ে শারীরিকভাবে প্রচুর অসুবিধা হলেও তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে। সবশেষে সায়ক স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, কোনও চরিত্রে অভিনয় করার মানে এই নয় যে বাস্তব জীবনে তিনি ঠিক সেভাবেই বাঁচেন। একজন শিল্পীর কাছে চরিত্রের প্রতি নিষ্ঠাই আসল। দর্শক ইতিবাচক হোক বা নেতিবাচক, প্রতিক্রিয়াই প্রমাণ করে যে গল্প মানুষকে নাড়া দিতে পেরেছে। আর এই প্রতিক্রিয়ার ভিড়েই সায়ক খুঁজে পাচ্ছেন তাঁর অভিনয়ের সার্থকতা।