ভারতজুড়ে পরিচিত মুখ এখন বাংলার অভিনেত্রী ইশিকা দে! ‘সেক্রেড গেম’ থেকে ‘ব্যাডস অফ বলিউড’, হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে একের পর এক সাফল্যে উঠে আসছেন এই বঙ্গ-তনয়া! টলিউডে কেন কাজ পাননা তিনি?

কিছুদিন আগেই নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই, ‘ব্যাডস অফ বলিউড’ সিরিজটি নিয়ে সর্বত্র চলেছিল চর্চা। আরিয়ান খানের পরিচালনায় তৈরি প্রথম কাজ হিসেবে যে স্বাভাবিকভাবেই নজর ছিল, তা তো বটেই কিন্তু এই সিরিজে অন্যরকম করে নজর কেড়েছেন বঙ্গ-তনয়া ‘ইশিকা দে’ (Eshika Dey)। ২০১৮ সালের ওয়েব সিরিজ ‘সেক্রেড গেম’এ অভিনেতা নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দুর্দান্ত অভিনয়ের পর থেকেই শিল্পীসুলভ উপস্থিতি দিয়ে ভরসা জুগিয়েছেন, তবে আরিয়ানের এই সিরিজ যেন তাকে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে এনে দিয়েছে।

চরিত্রটি ছোট হলেও, সিজন শেষে তাঁকেই দেখা যায় খেলা ঘুরিয়ে দিতে! আর সেই উপস্থিতিতেই যেন লুকিয়ে পরের সিজনের সম্ভাব্য চমকের ইঙ্গিত। প্রসঙ্গত, পাঁচ বছর বাংলায় কাজ করার পর, জাতীয়স্তরে স্বীকৃতির চাহিদায় বিগত কয়েক বছর ধরেই একা থাকেন মায়ানগরীতে। অন্যদের মতো, এই সিরিজে অডিশন দিয়েই নির্বাচিত হয়েছিলেন ইশিকা। প্রথমদিকে চরিত্র সম্পর্কে স্পষ্ট করে জানানো হয়নি, কারণ গোটা গল্পের রহস্য বজায় থাকতো না তাহলে। পরে যখন তিনি চরিত্র সম্পর্কে ধারণা পান, তখনই যোগ দেন এই নির্মাণে।

তবে, কেমন অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর শাহরুখপুত্র আরিয়ানের সঙ্গে কাজ করে? আদেও কি সে বাবার মতোই, নাকি তারকা হওয়ার অহংকার আছে? ইশিকা বলেন, আরিয়ান কাজের ব্যাপারে আশ্চর্যরকম যত্নবান। সেটে বড় বা ছোট চরিত্র, সবার ক্ষেত্রেই একই মনোযোগ দিয়ে কাজ করাতেন তিনি। কারও প্রতি বাড়তি ভিআইপি আচরণ নয়, বরং প্রতিটি অভিনেতাকে ধৈর্য ধরে চরিত্র ব্যাখ্যা করে বোঝাতেন। আরিয়ানকে নিয়ে অহংকারের অভিযোগ যে একেবারেই ভিত্তিহীন, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন ইশিকা।

তাঁর অভিজ্ঞতা, শাহরুখপুত্র হওয়ার অহংকার বা দাম্ভিকতা নয়, বরং তিনি অনেকটাই মাটির মানুষ। সেটে কোথাও বসার জায়গা কম থাকলে মাটিতে বসে পড়া, সিনিয়র ও জুনিয়র শিল্পীদের সঙ্গে সমান আচরণ করা, এসব ছোট ছোট ব্যবহারে একটা পরিষ্কার বার্তা পাওয়া যায়। ইশিকার কথায়, শাহরুখ তাঁর সন্তানদের যে শিক্ষা দিয়েছেন, আরিয়ানের আচরণ যেন তারই প্রতিফলন। অভিনেত্রীর কাছে আরও জানতে চাওয়া হয়, এই সিরিজে তাঁকে পরিচারিকার ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ ‘বাবিল সুযোগ পেলেই দায় এড়ায়, যেন মিটিলের কোনও মূল্যই নেই!’ ‘মিটিল এত ভালো, বাবিলের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে কখনোই সম্পর্কটাকে গুরুত্ব দেয়নি!’ ‘চিরসখা’য় সম্পর্কের ফাটল, বাবিলের আচরণে ক্ষুব্ধ দর্শকরা! বাবিল কি ইচ্ছে করেই দূরে সরে যাচ্ছে?মিটিলকে সহজলভ্য ভাবাই কি কাল হবে তাঁর?

অভিনেত্রীর কি খারাপ লাগে যখন কেউ বলে তিনি দেখতে খারাপ বলে এমন চরিত্র পান? ইশিকার কথায়, পরিচারিকার ভূমিকায় দেখা গেলেও তাঁর কোনোই আক্ষেপ নেই। বরং নিজের স্বভাবসুলভ হাসিতেই জানিয়ে দিয়েছেন, এই চরিত্রের জন্যই তিনি ছবির অনেকের থেকে বেশি পারিশ্রমিক পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, ইশিকার মতে এমন চরিত্র করা সহজ নয়। বাস্তবধর্মী চরিত্রে অভিনয় করাই অভিনেতাদের আসল পরীক্ষা এবং সেই প্রক্রিয়া উপভোগ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, ইশিকার অভিনয়জীবন এখন আরও ব্যস্ত। সদ্য ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ ছবিতে রুক্মিণী মৈত্রর সঙ্গে দেখা গেছে তাঁকে। তাহলে কি ভবিষ্যতে দেবের সঙ্গেও অভিনয় করার পরিকল্পনা আছে তাঁর? অভিনেত্রীর কথায়, ‘সুযোগ পেলেই করব, আমার কোনও আপত্তি নেই বরং আমি শুধু আরও বেশি কাজ করতে চাই।’ বলিউড এবং টলিউড, দুই দিকেই ছন্দ মেলাতে থাকা এই অভিনেত্রী এখন নিজের কাজের মধ্য দিয়েই প্রমাণ করে চলেছেন তাঁর বহুমুখী দক্ষতা।