বাংলা সিনেমাজগতের এক পরিচিত মুখ হলেন টোটা রায়চৌধুরি (Tota Roychowdhury)। টোটা একাধারে অভিনেতা, নৃত্যশিল্পী এবং মার্শাল আর্ট শিল্পী। বাংলার পাশাপাশি হিন্দি সিনেমাতেও যথেস্ট সাবলীল তিনি। জনসমক্ষে টোটা নামে পরিচিত হলেও তাঁর আসল নাম পুষ্পরাগ রায়চৌধুরি। কলেজে প্রথম বর্ষে পড়াকালীন তিনি প্রভাত রায়ের দুরন্ত প্রেম ছবিতে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান। সেখান থেকেই অভিনয় জগতে তাঁর পথচলা শুরু হয়।
টোটার নতুন ছবি
বর্তমানে ‘রকি অউর রানী কি প্রেম কাহানি’ ছবিটি নিয়ে দেশজুড়ে চলছে চর্চা। ভারতীয় ছবির একটা গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য রণবীর সিং ও টোটার ‘ডোলা রে’। ‘দেবদাস’এ মাধুরী যে নাচ করেছিলেন, সেই নাচে এই ছবিতে দেখা যাবে টোটোকে। আলিয়া ভাটের বাবা চন্দনের চরিত্রে রয়েছেন টোটা। সেখানে চন্দন কত্থক নাচে, তাই তাকে নিয়ে অনেকেই খিল্লি করে, পরিবারের লোকজনও তার নাচ তেমন পছন্দ করেন না।
কোন ভূমিকায় আছেন টোটা?
এক সাক্ষাৎকারে ছবি প্রসঙ্গে টোটাকে প্রশ্ন করা হয়, এই নাচ করতে গিয়ে প্রথমে কি তাঁর সংকোচ হয়েছিল? টোটা জানান, হ্যাঁ, কিন্তু নাচ করতে গিয়ে নয়, তিনি আদোও চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন কিনা, সেই ভেবে সংকোচ হয়েছিল। ম্যাচটি প্র্যাকটিস করতে শহরে পারমিতা মৈত্রর কাছে কোত্থকের শর্ট কোর্স করেন টোটো। পাশাপাশি মুম্বইয়ের নিকিতা বানাওয়ালিকরের কাছে মোট ৪০ টি ক্লাস তিনি করেন। আর তাঁর নাচের ব্যাপারে সর্বদা নজর রাখতেন বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার মহাপাত্র বা উদয় শংকরের মতো ব্যক্তিত্বরা।
নিজের পছন্দের শিল্পকে বেছে নেওয়ায় কটূকথার মুখে টোটা
এখনও ছেলেরা ক্লাসিকাল ডান্স করবে শুনলে বাধা দেয় পরিবার। টোটার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। তিনি ব্রেক ডান্স করতেন। আর তাঁর এই নাচ ভালো চোখে দেখতেন না পরিবার। অনেকে বলতেন, ‘ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে হয়ে কেন নেচে বেড়াচ্ছে?’ টোটার কথায়, নেচে বেড়ানো আর নাচের অনুষ্ঠান করার মধ্যে অনেক ফারাক রয়েছে। সেই নাচের জন্য টোটা অভিনয়ে সুযোগ পেয়েছিলেন। আজ তিনি জনপ্রিয় একজন অভিনেতা।
ছবির সাফল্য প্রসঙ্গে টোটার বক্তব্য
নৃত্যশিল্পী সুকল্যাণ ভট্টাচার্য বলেন, “আমি চিরকালই কোমল হোসেনের নাচের অনুরাগী। হৃত্মিক রোশন যখন নাচেন, সেটা ওয়েস্টার্ন ডান্স হওয়ার কারণে, কেউ কোনও প্রশ্ন তোলেন না। কিন্তু কেউ শাস্ত্রীয় নৃত্য করলে, বিভিন্ন প্রশ্নে মুখে পড়েন। এর কারণ মানুষ শাস্ত্রীয় নৃত্য সম্পর্কে অজ্ঞ”। টোটার কথায়, “বিভিন্ন আর্ট ফর্ম বেঁচে নিয়ে তারপর কটু কথা শুনেছেন, এমন মানুষেরা আমাকে যোগাযোগ করেছেন। কত শিল্পীর মনে কত কষ্ট জমে রয়েছে, শুধুমাত্র নিজের পছন্দের শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণে। এই ছবিটা দেখার পর, যদি সমাজের একাংশ শিল্পীদের নিয়ে অপ্রিয় কথা বলার আগে ভাবেন, সেটাই সাফল্য”।