কোনদিনও অ্যাঙ্কার হওয়ার স্বপ্ন‌ই ছিল না! চেয়েছিলাম গায়িকা হতে, ইচ্ছে অপূর্নই রয়ে গেল! এত জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও আজও আক্ষেপ রয়ে গেছে লাজবন্তী রায়ের

এক সময় বাংলা টেলিভিশনে রিয়েলিটি শো-এর জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। দর্শক ঘড়ি ধরে বসে থাকতেন কখন নতুন এপিসোড শুরু হবে। ব্যস্ত জীবনের পাশাপাশি এই শো-গুলোই এনে দিত একটু হালকা মুহূর্ত, হাসিখুশি সময় আর প্রতিযোগিতার উত্তেজনা।

এই রিয়েলিটি শোগুলির ভিড়েই আলাদা করে নজর কেড়েছিল রোজগেরে গিন্নি। সাধারণ গৃহবধূদের কেন্দ্র করে তৈরি এই গেম-শো অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অল্প সময়েই। দিনভর সংসার সামলানো মহিলাদের সামনে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করার এক অভিনব মঞ্চ দিয়েছিল এই শো। প্রতিটি এপিসোডে গিন্নিদের প্রাণবন্ত আচরণ, হাস্যকর মুহূর্ত আর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দৃঢ়তা—সব মিলিয়ে এই শো ছিল সত্যিই যুগান্তকারী।

রোজগেরে গিন্নিতে একাধিক সঞ্চালিকা থাকলেও লাজবন্তী রায় (Lajbanti Roy) ছিলেন দর্শকদের অন্যতম প্রিয় মুখ। তাঁর প্রাণখোলা হাসি, সহজ-সরল উপস্থাপনা এবং প্রতিযোগীদের সঙ্গে আন্তরিক কথোপকথন—সবই তাঁকে বিশেষ করে তুলেছিল। বাংলা টেলিভিশনের ইতিহাসে অ্যাঙ্কর হিসেবে নিজের জায়গা তৈরি করা লাজবন্তী রায় সেই সময়ের অন্যতম আইকনিক মুখে পরিণত হয়েছিলেন।

সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্মৃতিচারণা করে বলেন, “অ্যাঙ্কর শব্দটা তখন বাঙালি চিনতই না। আমাদের নামের পাশেই প্রথম অ্যাঙ্কর লেখা হয়েছিল। তবে সত্যি বলতে গেলে আমার তো কখনই অ্যাঙ্কর হওয়ার ইচ্ছা ছিল না। আমি ভেবেছিলাম গায়িকাই হব। কারণ ‘অ আ ক খ’ শেখার আগে শিখেছি ‘সা রে গা মা পা’।” তাঁর এই কথায় স্পষ্ট—সঞ্চালনা ছিল তাঁর জীবনের একটি আকস্মিক মোড়, কিন্তু সেই পথটাই তাঁকে এনে দিয়েছে ব্যাপক ভালোবাসা ও পরিচিতি।

আরও পড়ুনঃ পুণে থেকে জয়া বচ্চনের সঙ্গে পড়াশোনা করেও স্বপ্ন থেকে গিয়েছিল অপূর্ণ! কেউ তাঁকে নায়ক হিসেবে ভাবলোই না! কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়ের চলে যাওয়ায় আক্ষেপ রত্নার

আজও দর্শকের মনে রয়ে গিয়েছে রোজগেরে গিন্নির সেই সময়, আর সেই সঙ্গে লাজবন্তী রায়ের অসাধারণ সঞ্চালনা। তিনি শুধু একটি শো পরিচালনা করেননি, বরং বাংলার টিভি দুনিয়াকে পরিচয় করিয়েছিলেন নতুন এক পেশার সঙ্গে—অ্যাঙ্করিং। বিনোদন জগতের সেই সোনালি অধ্যায়ে তাঁর অবদান তাই আজও স্মরণীয়, মূল্যবান এবং দর্শকের কাছে গভীর নস্ট্যালজিয়ার জায়গা জুড়ে।