শুটিং ফ্লোরে বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতাকে তীব্র অপ’মান প্রযোজকের! বিরাট বড় পদক্ষেপ নেন প্রসেনজিত চ্যাটার্জি

টলিউডে বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় মানেই পর্দার দাপুটে খলনায়ক। রুক্ষ সংলাপ আর শক্ত ব্যক্তিত্বে তিনি ছিলেন একেবারে আলাদা। বাস্তব জীবনেও তাঁর সাহসী মনোভাব ও স্পষ্ট কথা বলার অভ্যাস সকলের জানা। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে এমন এক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি, যা আজও ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে আলোচনার বিষয়। এক প্রযোজকের আচরণ সেদিন প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল শিল্পীদের সম্মান ও নিরাপত্তা।

সেই সময় কলকাতার একটি নামী স্টুডিওতে চলছিল বড় বাজেটের ছবির শুটিং। মুখ্য চরিত্রে ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। শুটিং চলাকালীন কোনও একটি বিষয়ে প্রযোজকের সঙ্গে বিপ্লবের তর্ক শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যেই তা বচসায় রূপ নেয়। হঠাৎ করেই প্রযোজক সকল সীমা ছাড়িয়ে গোটা শুটিং ফ্লোরের সামনে বিপ্লবকে অপমান করেন এবং সেট ছেড়ে চলে যেতে বলেন।

এই অপমান বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ছিল অসম্মানজনক ও যন্ত্রণাদায়ক। কোনও প্রতিবাদ না করে তিনি চুপচাপ মেকআপ রুমে ফিরে যান। তাঁর মুখের হতাশা দেখে বাকিরাও স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। কেউ কিছু বলার সাহস পাননি। সকলেই জানতেন, প্রযোজকের বিরুদ্ধে কথা বললে কাজ হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। ফলে সেদিন শুটিং ফ্লোরে নেমে আসে অস্বস্তিকর নীরবতা।

ঘটনার সময় প্রসেনজিৎ সেটে না থাকলেও খবর পেয়ে তিনি সঙ্গে সঙ্গে হাজির হন। প্রথমেই তিনি যান বিপ্লবের মেকআপ রুমে। পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে সাহস দেন। এরপর সোজা গিয়ে প্রযোজকের সঙ্গে কথা বলেন। স্পষ্ট জানান, একজন শিল্পীকে অপমান মানে গোটা শিল্পী সমাজকে অপমান করা। সেই দিন থেকেই শিল্পীদের অধিকার রক্ষার ভাবনা বাস্তব রূপ নেয়।

আরও পড়ুনঃ ব্যর্থ প্রেম, বেদনা আর অসমাপ্ত স্মৃতির মেলবন্ধনে মাইলস্টোন ছুঁলো ‘দেরি হয়ে গেছে’! সময়ের ভুলে যাওয়া দরজা আবার খুলে অঞ্জন দত্ত ও মমতা শঙ্কর, প্রেক্ষাগৃহে ২৫ দিনে তুললেন নস্ট্যালজিয়ার ঢেউ!

প্রসেনজিতের সেই দৃঢ় অবস্থান থেকেই জন্ম নেয় আর্টিস্ট ফোরাম। এই মঞ্চ শিল্পীদের নিজেদের সমস্যা বলার সাহস দেয়। বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় বহুবার বলেছেন, সেই দিন বুম্বার পাশে দাঁড়ানো তিনি কখনও ভুলবেন না। পরবর্তীতে টোটা রায়চৌধুরীর মতো অভিনেতার ক্ষেত্রেও প্রসেনজিতের একই ভূমিকা প্রমাণ করে, শিল্পীদের সম্মান রক্ষা করাই তাঁর কাছে ছিল সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।

You cannot copy content of this page