পদ্মশ্রী (Padmashree Award) সম্মানে ভূষিত হয়ে আবারও সংবাদের শিরোনামে উঠে এলেন ‘মমতা শঙ্কর’ (Mamata Shankar)। দীর্ঘদিনের কর্মজীবনে তিনি বারবার প্রমাণ করেছেন, অভিনয় কিংবা নৃত্য উভয় ক্ষেত্রেই তিনি এক বিরল প্রতিভা। ২০২৫ সালে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর (Droupadi Murmu) হাত থেকে তিনি পেলেন পদ্মশ্রী সম্মান, যা কেবল তাঁর শিল্পীসত্তাকেই নয়, তাঁর বিনম্র ব্যক্তিত্বকেও সম্মানিত করল।
রাষ্ট্রপতির হাত থেকে এই পুরস্কার নেওয়ার সময়ে লাল তাঁতের শাড়িতে, সোনার গয়নায়, মুখভরা হাসিতে তিনি যেন হয়ে উঠেছিলেন বাংলার সংস্কৃতির প্রতীক। এই সম্মানপ্রাপ্তির পর সমাজমাধ্যমেও যেমন শুরু হয়েছে তার অতীতের মন্তব্য কে ঘিরে জোর সমালোচনা, তেমনি ধেয়ে এসেছে প্রশংসার জোয়ারও। সেই তালিকায় এবার যোগ দিলেন অভিনেতা ‘ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়’ (Bhaswar Chatterjee) । মমতা শঙ্করের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে তিনি ভাগ করে নিলেন তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা।
অভিনেত্রীর সঙ্গে ২০০২ সালে ‘জন্মভূমি’ ধারাবাহিকে মা-ছেলের চরিত্রে অভিনয়ের পর থেকেই ভাস্বরের কাছে মমতা শঙ্কর হয়ে উঠেছেন ‘মাতৃ-সম’ এক সত্তা। তাঁর কথায়, মমতা শঙ্করের সরলতা থেকে আন্তরিকতা এবং শিক্ষা নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের জন্য এক বিরল উদাহরণ। ভাস্বরের পোস্টে উঠে এসেছে শিল্পীর মানবিক দিক। তিনি উল্লেখ করেছেন, মমতা শঙ্কর কখনও তাঁর জন্মদিন ভুলে যাননি। এমনকি, একবার একটি ধারাবাহিকে অভিনয়ের আগে তাঁর কাছে জিজ্ঞেস করেছিলেন পারিশ্রমিক কত নিতে হবে!
এত বড় মাপের একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী হয়েও এতটা সাধারণভাবে মিশতে পারাটা ভাস্বরের কাছে ছিল চমকে দেওয়ার মতো। তাঁর মতে, এই সহজ-সরল মাটির টানটাই মমতা শঙ্করের আসল পরিচয়। এই পোস্ট ছড়িয়ে পড়তেই সাধারণ মানুষও নিজেদের ভালবাসা জানাতে ভোলেননি। অনেকেই মমতা শঙ্করের চরিত্র, সততা এবং মানসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। কেউ লিখেছেন,”ওনার মতো স্বচ্ছ মানুষ খুব কম দেখা যায়।” আবার কেউ বলেছেন,”এই সম্মান আরও আগেই প্রাপ্য ছিল ওনার।”
এমনকি কেউ কেউ বলেছেন, “মমতা শঙ্কর শুধু একজন অভিনেত্রী নন, তিনি একজন সুন্দর মানুষ, যাঁর থেকে অনেক কিছু শেখা যায়।” সব মিলিয়ে পদ্মশ্রী পুরস্কার পাওয়া শুধু একটি সাধারণ পুরস্কারের সমান নয়, বরং এক জীবনব্যাপী সাধনার স্বীকৃতি। অভিনয়, নৃত্য এবং নিজস্ব আচরণে মমতা শঙ্কর সেই বিরল শিল্পীদের একজন, যাঁরা সময়কে ছাপিয়ে থেকে যান মানুষের হৃদয়ে।
আরও পড়ুনঃ আমি যে কত বকুনি খেয়ে মানুষ হয়েছি, আর এখন আমার ছেলে-মেয়েকে বকতে গেলে মা রাগী চোখে তাকিয়ে থাকে!’ অকপট
কোয়েল মল্লিক
শেষে যেটা বলতেই হয়, তাকে নিয়ে যতই বিতর্ক থাকুক, তাঁর প্রত্যেকটি মন্তব্যকে একেবারেই ফেলে দেওয়া যায় না বরং বর্তমান সমাজে চিত্র ফুটে ওঠে সেই বক্তব্যে। তাঁর এই যাত্রা, তাঁর ব্যক্তিত্ব এবং তাঁর সততা আজকের তারকাখচিত গ্ল্যামার দুনিয়ায় সত্যিই এক অনন্য উদাহরণ। নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি কেবল একজন সিনিয়র আর্টিস্ট নন, বরং একজন জীবন্ত অনুপ্রেরণা।