আপামর বাঙালি দর্শকের মনে তাঁর অবস্থান অনেকটাই ‘শোলে’র গব্বরের মতো। গব্বর সিংয়ের প্রসঙ্গে এনে মায়েরা যেমন ছেলেমেয়েদের ঘুম পাড়াত এক সময়ে। বলত, “সো যা বেটা, নেহি তো গব্বর আ জায়ে গা…” (ঘুমো, না হলে গব্বর এসে তোকে নিয়ে চলে যাবে)। তেমন বাংলা ছবির গব্বর ছিলেন অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় (Biplob Chatterjee)। নব্বইয়ের বাংলা বিনোদন দুনিয়ার ‘স্ট্যাম্পমারা’ খলনায়ক ছিলেন তিনি। প্রচুর শয়তানি করেছেন পর্দায়। নায়িকাকে হে’নস্থা, চু’রি, ডাকাতি খারাপ কাজের লিস্টিতে বাদ পড়েনি কোনও কিছুই।
বড়পর্দা হোক বা ছোটপর্দার, এমনকি থিয়েটারেও সমান সাবলীল বর্ষীয়ান অভিনেতা। একসময়কার দাপুটে খলনায়ক আজ লোকচক্ষুর আড়ালে। সেভাবে আর কাজ পান না টলিপাড়ায়। তাই কি ক্ষোভ জন্মেছে অভিনেতার মনে? তাই কি মাঝেমধ্যে আবেগঘন হয়ে পড়েন?
সত্যজিৎ রায়ের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ সিনেমার হাত ধরে হাতেখড়ি। তারপর প্রায় কয়েক দশক কেটে গিয়েছে এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে। একসময়ে তাপস পাল, প্রসেনজিতের ছবিতে ভিলেন মানে বিপ্লব চক্রবর্তী ছিলেন অন্যতম মুখ। বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় খলনায়ক হয়ে ওঠেন তিনি।
সিনেমার পর্দায় যেমন দাপুটে, বাস্তবে তিনি ঠিক উলটো। একেবারে মাটির মানুষ। শত্রুতার কারণে অনেক কাজ খুইয়েছেন। হালে অনেক সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন অভিনেতা। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে পুরস্কার নিয়ে গিয়েও কেঁদে ফেলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। এদিন বঙ্গপুরুষ সম্মান দিতে গিয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “ভগবানকে বলুন আমায় যেন সুস্থ করে দেয়। আমি আরও কিছুদিন যেন বাঁচতে পারি।” অভিনেতার এহেন কথা শুনে মন কেঁদে উঠেছে নেটিজেনদের।
আরো পড়ুন: খারাপ খবর! হাসপাতালে ভর্তি সবার প্রিয় বর্ষীয়ান অভিনেত্রী চিত্রা সেন! কী হয়েছে অভিনেত্রীর?
শেষ অভিনেতার বড়পর্দায় দেখা মেলে ২০২০ সালে। জিৎ, নুসরত জাহান, আবির চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘অসুর’ সিনেমায় একটি ছোট্ট ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন বিপ্লববাবু। ছোটপর্দাতেও তাঁর দেখা মিলেছে বহুবার। তবে বার্ধক্যজনিত কারণে এখন আর একটানা শুটিং করতে পারেন না বর্ষীয়ান অভিনেতা। শারীরিক অসুস্থতা বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুস্থ হয়ে আবারও পুরোদমে অভিনয় করতে চান তিনি। ভক্তদের প্রার্থনা তাদের পছন্দের অভিনেতার যেন ইচ্ছে পূরণ হয়।