তিনি পুরোপুরি বাঙালি নন, কিছুটা মালায়লি। কথা হচ্ছে, অভিনেত্রী ‘অ্যানমেরি টম’কে (Anmaary Tom) নিয়ে। যিনি এখন বাংলা টেলিভিশনের অত্যন্ত পরিচিত মুখ। মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু হলেও আজ তিনি নিজের জায়গা করে নিয়েছেন ছোটপর্দায়। সামাজিক মাধ্যমে তাঁর জনপ্রিয়তা নজরকাড়া, বিশেষ করে নাচের ভিডিও আর ফটোশুটের ঝলকে ভরে থাকে তাঁর ইনস্টাগ্রাম। অনেকেই হয়তো জানেন না, ব্যারাকপুরের মেয়ে অ্যানমেরি পড়াশোনা করেছেন কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে, কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক।
পড়াশোনার পাশাপাশি নাচই ছিল তাঁর প্রথম ভালোবাসা, যেটাকে আজও তিনি জীবনের অঙ্গ হিসেবে ধরে রেখেছেন। স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘গ্রামের রানী বীণাপানি’–তেই অভিনয়ের হাতেখড়ি অ্যানমেরির। সেখানে তাঁকে দেখা গিয়েছিল এক প্রতিবাদী নারীর চরিত্রে, যে সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজের মতো করে লড়াই করে। যদিও ধারাবাহিকটি খুব বেশি জনপ্রিয়তা পায়নি, দর্শকদের নজর কেড়েছিলেন অ্যানমেরি। তাঁর সাবলীল সংলাপ, স্বাভাবিক অভিনয় আর অনবদ্য অভিব্যক্তি সকলের মনে জায়গা করে নেয়।
দীর্ঘদিন ধরেই মডেলিং জগতে যুক্ত অ্যানমেরি। একাধিক জুয়েলারি ব্র্যান্ডের ফ্যাশন শো করেছেন, করেছেন নানা বিজ্ঞাপনের কাজও। অবাঙালি হলেও তাঁর বাংলাভাষায় সাবলীলতা চমকে দেয় অনেককেই। সাক্ষাৎকারে প্রায়ই তিনি বলেন, বাংলা তাঁর মায়ের ভাষা না হলেও এখন সেটাই তাঁর মনে প্রাণে জায়গা করে নিয়েছে। বাংলা সংস্কৃতি, সিনেমা, আর সংগীতের সঙ্গে তিনি একাত্ম হয়েছেন অনেক আগেই। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অ্যানমেরিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ না পাওয়া বা আর্থিক অনটনে ভোগা অনেক শিল্পী আজকাল প্রকাশ্যে আসছেন।
এই পরিস্থিতিকে তিনি কীভাবে দেখেন? তার জবাবে অভিনেত্রী বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়েই বলেন, “একমাস কাজ করে ছয় মাস সংসার চালানোটা যেমন কঠিন, তেমন জীবনযাত্রার উপরেও কিছুটা নির্ভর করে সেটা। কারোর হয়ত হাতে শেষ কাজ থেকে কিছু পরিমাণ সঞ্চিত অর্থ আছে, সে জানে এই অর্থ বিলাসিতা করার জন্য যথেষ্ট নয়। তা সত্ত্বেও সে বিলাসিতাতে বেশি নজর দিচ্ছে। আমার মতে, স্টারবাকস্ থেকেই কফি খেতে হবে এটা না করে, যখন ক্ষমতা নেই তখন রাস্তার ধার দিয়েও চা কফি খাওয়া যায়! আমার কাছে যখন সেই পর্যাপ্ত সুযোগটা আছে, নিজের জীবনযাত্রাকে গুছিয়ে নেওয়ার।
আরও পড়ুনঃ “বাপের দ্বিতীয় বিয়ে, অ’পকর্ম দেখে মর’তে ইচ্ছে করেনি, কিন্তু মা বিয়ে করে ভালো থাকার চেষ্টা করতেই আ’ত্মহ’ত্যা দেখাতে হবে?” “নিজের বউয়ের চরিত্র নিয়ে নীরব, মায়ের সুখে এত অস্বস্তি কেন?”— বুবলাইয়ের ম’রার নাটক দেখছ ক্ষুব্ধ নেটিজেনরা! ‘চিরসখা’র দর্শকদের মতে, ছেলে হয়ে মায়ের একাকীত্ব বুঝতে না পারা লজ্জার!
সেটা করাই ভালো, দেখানদারিতে না গিয়ে! আমার কাছে যখন সুযোগ আছে ওলা-উবের এর পরিবর্তে মেট্রোতে যাওয়ার, আমি সেটাই করব! অযথা বিলাসিতা বজায় রাখতে ধার বাকি করার কোনও অর্থ হয় না।” অ্যানমেরির এই কথায় তাঁর বাস্তববোধ আর জীবনদর্শন ফুটে উঠেছে স্পষ্টভাবে। তিনি মনে করেন, গ্ল্যামার দুনিয়ায় থেকেও মাটির কাছাকাছি থাকা জরুরি। অভিনয় বা আলোচনায় যতই থাকুন, জীবনের বাস্তবতার মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকা তাঁর সবচেয়ে বড় গুণ। নিজের সাফল্য আর সরল জীবনবোধ দিয়ে তিনি আরও পছন্দের হয়ে উঠছেন সবার কাছে।






