“আমি আগেই জানতাম আমার মা মা’রা যাবেন!”— অপরাজিতা আঢ্যর অকপট স্বীকারোক্তিতে হইচই! ‘আপনি তো এই যুগের খনা মা, অভিনয় ছেড়ে এবার জ্যোতিষীর পেশায় নামুন!’ ‘মা চলে যাওয়ার কথা এত শক্ত গলায় বলা যায়!’— অভিনেত্রীকে কটা’ক্ষ নেটপাড়ার!

অভিনেত্রী ‘অপরাজিতা আঢ্য’ (Aparajita Adhya) এবার একেবারে নতুন এক আঙ্গিকে ধরা দিতে চলেছেন বড়পর্দায়। দীর্ঘ অভিনয়জীবনে নানা চরিত্রে দেখা গেলেও ‘বানসারা’ (Bansara) ছবিতে তাঁকে দেখা যাবে এমন এক নেতিবাচক চরিত্রে, যা তিনি আগে কখনও করেননি। ছবিতে তাঁর চরিত্র গৌরিকা দেবী— গ্রামের জমিদার পরিবারের উত্তরসূরী, যাঁর কথাই যেন অলিখিত আইন। ধর্ম আর রাজনীতির সূক্ষ্ম মেলবন্ধনে দাঁড়ানো এই নারী একদিকে দেবীভক্তদের কাছে শ্রদ্ধেয় ‘বড়মা’, আবার অন্যদিকে ক্ষমতার রাজনীতিতে তিনি এক প্রভাবশালী মুখ।

চরিত্রের এই জটিলতা যেন অভিনেত্রীর নিজের এক অন্তর্গত দিকের প্রতিফলনও। বাস্তব জীবনে অপরাজিতা গভীরভাবে আধ্যাত্মিক। তাঁর দিন শুরু হয় প্রার্থনায়, আর শেষ হয় ভগবানের নাম স্মরণে। মহা কুম্ভে স্নান থেকে শুরু করে লোকনাথ, লক্ষ্মী পূজা— সবই তিনি নিজের হাতে করেন। কখনও দুঃসময় এলে ভগবানের উদ্দেশে চিঠি লিখে মন হালকা করেন, আবার অবসরে ভগবানের সঙ্গে একান্তে কাটানো সময়ই হয়ে ওঠে তাঁর শান্তির আশ্রয়।

অভিনয়ের পর্দায় তিনি যেমন চরিত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসেন, জীবনের পর্দাতেও তেমনি ভরসা রাখেন বিশ্বাসে আর প্রার্থনায়। এদিন এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, তাঁর মায়ের মৃ’ত্যু ঘটবে কবে এবং কখন সেটা তিনি আগেই জানতে পেরে গিয়েছিলেন! অভিনেত্রীর নিজের কথায়, “আমি জানতাম আমার মা মারা যাবে। আমি সেই সময় বম্বেতে ছিলাম। বাড়ি ফিরে সবাইকে বারণ করলাম আমার জন্মদিন করতে, কারণ এটাই মায়ের সঙ্গে শেষ জন্মদিন। এরপর আর মা থাকবে না।

এই কথা শুনে আমার শাশুড়ি আর ননদ সবাই অনেক বিরক্ত হলেন, কিন্তু আমি জানতাম এমনটাই ঘটবে। ২২ তারিখ যখন মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলাম, দেখলাম ওনার শারীরিক অবস্থা যথেষ্ট অবনতির দিকে। অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়েও কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না, খালি পড়ে যাচ্ছিলেন। তবে বাড়ি ফেরার আগে যখন দেখা করতে গেলাম, স্পষ্ট কথায় আমাকে বিদায় জানালেন। এইসব দেখে আমার শাশুড়ি মায়েরও আমার কথায় বিশ্বাস হল, তিনি বললেন মায়ের মুখে জল দিয়ে দিতে। ঠিক তার পাঁচ দিনের মাথায় মা গত হলেন।”

আরও পড়ুনঃ ‘বাংলা সাহিত্য সোনার খনি’! “আমাদের যা দরকার তা শুধু নিজের জায়গা থেকেই খুজে বের করতে হবে। আমাদের অন্য কোথাও তাকানোর প্রয়োজন নেই, বোম্বে হোক বা অন্য কোথাও।”- অকপট অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক! অভিনেতার বার্তা কি বদলে দেবে বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ?

অভিনেত্রীর এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই, সমাজ মাধ্যমে শুরু হয়েছে রীতিমত ট্রোলের বন্যা। নেটিজেনদের একাংশ বলছেন, “আপনি এই যুগের খনা মা!” আবার কেউ বলছেন, “মা চলে যাওয়ার কথাটা এতটা শক্ত গলায় কেউ কি করে বলতে পারে? আমাদের অনেকেরই এখনো গলায় আওয়াজ আটকে যায় এই কথা বলতে গেলে!” আবার একজন বলেছেন, “আপনি মহান, সব আগে থেকে জানতে পেরে যান। তাহলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভূমিকম্প, মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টি, এসবের পূর্বাভাস দেন না কেন?” অন্যজন বলেছেন, “অভিনয় ছেড়ে এবার জ্যোতিষীর পেশায় নেমে পড়ুন!”