“এখনও আমার পরিচয় দিতে গিয়ে সকলে বলেন, ‘স্বনামধন্য অভিনেত্রী!’ ৪০ বছর পরেও কেউ আমার পরিচালনার কথা সে ভাবে উল্লেখ করেন না!” ৮০ বছরে এসে আক্ষেপ অপর্ণা সেনের

বাংলা সিনেমার এক অনন্য নাম অপর্ণা সেন। অভিনেত্রী হিসেবে তাঁকে সবাই চেনেন, কিন্তু পরিচালক হিসেবে তাঁর অবদানও কম নয়। ১৯৮১ সালে ‘৩৬ চৌরঙ্গী লেন’ দিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর পরিচালনার পথচলা। এরপর একের পর এক উল্লেখযোগ্য ছবি—‘পরমা’, ‘সতী’, ‘যুগান্ত’, ‘দ্য জাপানিজ ওয়াইফ’, ‘গয়নার বাক্স’, ‘দ্য রেপিস্ট’। কিন্তু এত কাজের পরেও অপর্ণার আক্ষেপ, “আজও সবাই আমাকে অভিনেত্রী হিসেবেই চেনে, পরিচালক হিসেবে নয়।”

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয় পরিচালক সুমন ঘোষের লেখা বই ‘দ্য ওয়ার্ল্ড অফ অপর্ণা সেন’। সেই বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে নিজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও অভিমান শেয়ার করেন অপর্ণা সেন। তিনি বলেন, “৪০ বছর পেরিয়ে গেল, এখনও যখন আমার পরিচয় দেওয়া হয়, তখন শুধু বলা হয় ‘স্বনামধন্য অভিনেত্রী’। পরিচালক অপর্ণার কথা কেউ বলেন না!”

অপর্ণার আরও এক আক্ষেপ—এত বছরেও কোনও মহিলা পরিচালক তাঁকে নিয়ে কাজ করেননি। এখন অনেক নারী পরিচালিকা ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন, কিন্তু কেউ তাঁকে নিয়ে সিনেমা বা সিরিজ বানাননি। হাসিমুখে তিনি বলেন, “আমার ছোট মেয়ে কঙ্কনা এখন পরিচালনা করছে। খুব ইচ্ছে, ওর পরিচালনায় একদিন অভিনয় করব।”

এই প্রসঙ্গে লেখক-পরিচালক সুমন ঘোষ বলেন, “আমরা বেঁচে থাকা মানুষদের কদর করতে জানি না। কেউ মারা গেলে তবেই তাঁকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।” তিনি উদাহরণ দেন প্রয়াত মৃণাল সেনের—“বেঁচে থাকতে তাঁকে নিয়ে কিছুই হয়নি, কিন্তু মৃত্যুর পর শতবর্ষ উপলক্ষে তিনটি ছবি তৈরি হল!”

আরও পড়ুনঃ চরিত্র থেকে চেহারা নেটপাড়ায় ব্যক্তিগত আক্র’মণে জেরবার অভিনেত্রী কমলিকা ব্যানার্জি! পার্বতী চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম, অকপট অভিনেত্রী! তবেই কি পরিবর্তন হল চরিত্রের?

অপর্ণাকে নিয়ে বই লেখার আগে সুমন একটি তথ্যচিত্র বানিয়েছিলেন, নাম ‘পরমা: এ জার্নি উইথ অপর্ণা সেন’। সেই ছবি দেখানো হয়েছিল কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে। তবে সুমনের মতে, “৮০ মিনিটে অপর্ণা সেনকে পুরোপুরি তুলে ধরা সম্ভব নয়। তাঁর জীবনের অজানা গল্পগুলোই এই বইতে জায়গা পেয়েছে।” তিনি জানান, অপর্ণা কেমন একজন মা, স্ত্রী ও পরিচালক—সব দিকই বইটিতে ধরা হবে।