বারবার সরব হয়েছেন সরকারের বিভিন্ন কাজের বিরুদ্ধে! এবার সোজাসুজি মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে প্রাপ্ত সরকারি টাকা দান করে দিলেন আরজি কর প্রতিবাদ মঞ্চে! ব্যতিক্রমের অপর নাম চন্দন সেন

টলিউডে শনিবার রাত যেন নতুন আলো ফেলল মানবিকতার। সম্মান পেলেও নিজের কাছে রাখলেন না— ঠিক করলেন ফিরিয়ে দেবেন সমাজের উপকারে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে টেলিসম্মান অ্যাওয়ার্ডের অর্থ পাওয়ার পর অভিনেতা চন্দন সেন জানালেন, এই সম্মান কেবল ব্যক্তিগত নয়। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী আমাকে সম্মান দিয়েছেন বলেই আজ সম্মানিক অর্থ মানুষের কাজে লাগানোর সুযোগ পেলাম।”

চন্দন সেন এক লক্ষ টাকা দান করেছেন ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে কাজ করা একটি প্রতিষ্ঠানকে এবং আরও দুটি সমাজসেবামূলক সংগঠনকে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদের পাশে থাকা সংগঠনকেও সাহায্য করেছেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন— সরকারের সমালোচনার মাঝেও কি তিনি সরকারি সম্মানিক অর্থ দান করতে ভয় পাননি? চন্দন হাসিমুখে বললেন, “আমি এর আগেও এই সম্মান পেয়েছিলাম। তখনও মানুষের দুঃসময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছি। ভয় পেলে শিল্পী হওয়া যায় না।”

আরজি কর আন্দোলনে প্রতিদিন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছেন অভিনেতা। তার ফল হিসেবে সরকারি হলে তাঁর দলের নাটক মঞ্চস্থ করতে বাধা আসে বলেও তিনি জানান। তবুও মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে সম্মান দিয়েছেন, সেই কারণেই তাঁর মনে কৃতজ্ঞতা। তবে সেই কৃতজ্ঞতা কখনই তাঁকে নীরব করেনি— বরং তাঁর কথায়, “সম্মান মানেই দায়িত্ব।”

আরও পড়ুনঃ টলিউডে গভীর শোকের ছায়া! ইন্ডাস্ট্রির প্রিয় চিত্রগ্রাহক ভিকি গুইনের আকস্মিক মৃ’ত্যু, তুলছে হাজারো প্রশ্ন! কারোর সঙ্গে শত্রুতা নাকি অন্য কারণ, কেন মাত্র ৪০ বছর বয়সেই এই পরিণতি? মৃত্যুর রহস্যে চরম বিভ্রান্তি!

নিজেই ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছেন চন্দন। চিকিৎসা চলেছে দীর্ঘদিন। তাঁর ভক্তরা তহবিল গড়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাই নিজের চিকিৎসার অভিজ্ঞতা থেকেই বললেন, “এই টাকা জনগণের। আমার চিকিৎসাও হয়েছে তাঁদের সাহায্যে। তাই তাঁদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া আমার দায়।”

চন্দন সেনের এই দৃষ্টান্ত যেন মনে করিয়ে দেয়— শিল্পী মানেই কেবল অভিনয় নয়, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ, কণ্ঠস্বর এবং মানবিকতার প্রতীক। তাঁর সিদ্ধান্ত বহু মানুষকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে— সম্মান মানে শুধু গ্রহণ নয়, কখনও কখনও তা ফিরিয়ে দেওয়ার সাহসও।