“দুই বাচ্চার মা…২০২৫ এ ধূমকেতু হলে নিতাম না!”— ছবি হিট হতেই বদলে গেলেন দেব, শুভশ্রীর অবদান ভুলে গিয়ে মাতৃত্বকে করলেন হেয়! “অপমান করার সাহস কে দিয়েছে? এক মাকে অপমান মানে নিজের মাকেও অপমান।” “আগে মানুষ হও, তারপর অভিনেতা বা প্রযোজক হও”— কটাক্ষ নেটপাড়ার!

চলতি মাসের ১৪ তারিখ বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছে বহুল আলোচিত ছবি ‘ধূমকেতু’ (Dhumketu)। দীর্ঘ এক যুগ পর দেব-শুভশ্রীকে (Dev-Subhashree) একসঙ্গে দেখতে পেয়ে দর্শকদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। বহু ভক্তের মতে, এই জুটির আবার ফিরে আসা যেন এক অন্যরকম আবেগ। তবে ছবি নিয়ে যতটা আনন্দ ছিল, ততটাই বিতর্ক তৈরি হয়েছে দেবের সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে। এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়, যদি এই ছবিটি ২০২৫ সালে মুক্তি পেত তাহলে শুভশ্রীকে নিতেন কি না, দেবের উত্তরেই বেজায় চটেছেন নেটিজেনদের একাংশ!

দেবের বক্তব্য ছিল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একজন অভিনেত্রীর অবস্থান, ব্যক্তিগত জীবন থেকে শারীরিক পরিবর্তন পর্যন্ত সবকিছুই চরিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। তিনি সরাসরি বলেন, শুভশ্রীর মধ্যে আগের মতো নিষ্পাপ আকর্ষণ আর নেই। তাঁর কথায়, একজন অভিনেতার জন্য কী প্রয়োজন সেটা ভেবেই কাস্টিং হয়। দেব আরও বলেন, তিনি যদি ছবির হিরো হতেন, তাহলে সহ-অভিনেত্রীকেও চাহিদা অনুযায়ী নিতেন। সেই জায়গায় শুভশ্রী ঠিক মানানসই না হলে অন্য কাউকে নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।

দেবের নিজের কথায়, “শুভশ্রী এখন কোন স্টেজে আছে, মনে ওর বিয়ে হয়েছে কি না অথবা দুটো বাচ্চার মা হয়েছে কি না এই সবকিছুই দেখতে হত হিরোইন বানানোর আগে। সত্যি বলতে ও এখন দুই বাচ্চার মা, পুরোনো সেই স্পার্কটাই হারিয়ে গেছে ওর। আগের মতো ইনোসেন্স নেই আর।” তবে তিনি এও স্বীকার করেন যে শুভশ্রীকে প্রথম প্রযোজনার ছবিতে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি তাঁর দেওয়া ছিল। সেই প্রতিশ্রুতির কারণে হয়তো তাঁকে ছবিতে রাখা হত, তবে হয়তো ভিন্ন কোনও চরিত্রে। অর্থাৎ, মুখ্য চরিত্রে না হলেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় শুভশ্রীকে দেখা যেত।

এই মন্তব্য অনেকের কাছেই দায়সারা উত্তর মনে হয়েছে। সমাজ মাধ্যমে দেবের মন্তব্য নিয়ে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। নেটিজেনদের বড় অংশের অভিযোগ, এভাবে প্রকাশ্যে একজন সহ-অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের প্রসঙ্গ টেনে এনে মাতৃত্বকে ছোট করা মোটেও উচিত হয়নি। শুভশ্রীর বয়স বা মাতৃত্ব তাঁর প্রতিভা বা অবস্থানকে খাটো করতে পারে না। বরং একজন নারীকে নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য করা মানে নারীত্বকে অসম্মান করা। তাঁরা মনে করছেন, দেব শুধু শুভশ্রী নয়, সমগ্র নারীসমাজকেই হেয় করেছেন এই মন্তব্য করে।

অনেকে লিখেছেন, শুভশ্রীর মতো জনপ্রিয় ও সফল নায়িকার ক্ষেত্রে যদি এমন মানদণ্ড চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সাধারণ নারীরা আরও বেশি করে বৈষম্যের শিকার হবেন। কেউ কেউ সরাসরি দেবকে “অহংকারী” এবং “স্বার্থপর” আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ধূমকেতু হিট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অভিনেতার আসল রূপ প্রকাশ পেয়েছে। এমনকি তাঁর কেরিয়ারের প্রথম দিকে শুভশ্রীর অবদানকেও অস্বীকার করছেন না ভক্তরা। তাঁদের মতে, শুভশ্রীকে বাদ দিলে দেব এতদূর এগোতে পারতেন না।

আরও পড়ুনঃ “তুমি খুব স্বার্থপর মা!”— প্লু’টোর মৃ’ত্যুর পর মিঠির হঠাৎ বদলে যাওয়া নিয়ে অবাক দর্শকরা! নতুন প্রমো নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন সবাই! এই ধারাবাহিক কি সত্যিই মানবিক সম্পর্কের বাস্তব চিত্র তুলে ধরছে, নাকি শুধুই টিআরপির জন্য এমন চরিত্র তৈরি করা হচ্ছে?– প্রশ্ন উঠছে লেখিকার সিদ্ধান্ত নিয়ে!

অনেকেই তীব্র কটাক্ষ দেবকে, “আগে মানুষ হও, তারপর অভিনেতা বা প্রযোজক হও”। আবার কেউ লিখেছেন, “শুভশ্রীর পরিশ্রম আর উপস্থিতি ছাড়া দেবের অস্তিত্ব নেই!” কারোর কথায়, “মাতৃত্ব কে অপমান করার সাহস কে দিয়েছে? একজন নারীকে অপমান করা মানে, নিজের মাকেও অপমান করা।” অন্যজনের কথা, “দেবের সামনে শুভশ্রীকে লেডি সুপারস্টার বলতেই তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছেন উনি। শুভশ্রীকে ব্যবহার না করলে তুমি মুখ থুবড়ে পড়তে!” সব মিলিয়ে, ধূমকেতুর সাফল্যের মাঝেই দেবের এই মন্তব্য বিতর্কের কেন্দ্রে এসে দাঁড়িয়েছে। আর এই মন্তব্য যে দেবের ভাবমূর্তিতে ভিন্ন প্রভাব ফেলেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।