ঠাকুরপুকুর দুর্ঘটনার (Thakurpukur Accident) মূল অভিযুক্ত ভিক্টো (Vickto) দাসকে অবশেষে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। গত সপ্তাহে যে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘিরে শহরজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে, সেই ঘটনার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন ভিক্টো। অবশেষে তাঁকে হাজির করানো হয় আলিপুর আদালতে এবং বিচারক নির্দেশ দেন, ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখা হবে অভিযুক্তকে। তদন্তে নতুন মোড় নিতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
ভিক্টোর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে একাধিক গুরুতর অভিযোগ। শুধু বেপরোয়া গাড়ি চালানোই নয়, বরং তাঁর গাড়ি থেকে মদ ও অন্যান্য নিষিদ্ধ দ্রব্য উদ্ধারের অভিযোগও উঠেছে। দুর্ঘটনার ঠিক আগে তিনি একটি পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এমনকি গাড়ি চালানোর সময় তাঁর অবস্থা স্বাভাবিক ছিল না বলেও দাবি করেছে পুলিশ। ফলে শুধুই দুর্ঘটনা নয়, এই ঘটনার পেছনে অনেক গভীরতর সত্য লুকিয়ে আছে বলেই মত তদন্তকারী দলের।
অভিযোগ উঠেছে, পার্টিতে উপস্থিত একাধিক টেলি-তারকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল ভিক্টোর। এমনকি সেই রাতের অনুষ্ঠানে সেলেবদের উপস্থিতি এবং তার জেরে জনসাধারণের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। দুর্ঘটনার ঠিক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ছবি এবং ভিডিও এখন তদন্তের আওতায়। প্রশ্ন উঠছে, এসব ঘটনা কি শুধুই কাকতালীয়, নাকি এর পেছনে পরিকল্পিত উদ্দামতা কাজ করেছে?
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ভিক্টোর মোবাইল, গাড়ির জিপিএস, এবং পার্টির সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কারা কারা সেই রাতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকি মদ সরবরাহ, পার্টির অনুমতি এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক দিকও এখন তদন্তের অংশ। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে অন্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। এমন কি জানা যাচ্ছে ভিক্টোর গাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে সাতটা মদের বোতল। গাঁজার কল্কে।
আরও পড়ুনঃ “নারী বলেই ছাড়? ড্রাইভিং সিটে না বসেও দায় এড়ানো যায় না! নেশাগ্রস্ত গাড়ি সফরে সকলেই দোষী” — ঠাকুরপুকুর দুর্ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া রূপাঞ্জনার, বললেন মূর্খতা’র ফল’!
সমাজের একাংশ ইতিমধ্যেই দাবি তুলেছে, এই ধরনের ঘটনায় কড়া শাস্তি হওয়া জরুরি। শুধুই তারকা পরিচিতি দিয়ে অপরাধ ঢাকা পড়া উচিত নয়, বরং আইনের চোখে সবাই সমান— এই বার্তা দেওয়াও জরুরি। ভিক্টো দাসের বিরুদ্ধে তদন্ত কতদূর গড়ায় এবং তার থেকে আর কী কী বেরিয়ে আসে, এখন সেটাই দেখার। তবে আপাতত, এই ঘটনা আরও একবার মনে করিয়ে দিল, বেপরোয়া উদযাপন কতটা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।