কখনও অনিন্দিতা, কখনও বা পিঙ্কি, একাধিক বিয়ে আর বিবাহবিচ্ছেদের পরিণতি নিয়ে বারবার চর্চায় থেকেছেন তিনি। তৃতীয়বারের মতো বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যেন জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন ‘কাঞ্চন মল্লিক’ (Kanchan Mullick)। অভিনয় এবং রাজনৈতিক ময়দানে তাঁর পরিচিতি থাকলেও, ব্যক্তিগত জীবন বরাবরই থেকেছে নেটপাড়ার নজরে। বহু সমালোচনা ও বিতর্কের পরেও বর্তমানে স্ত্রী ‘শ্রীময়ী চট্টরাজ’ (Sreemoyee Chattoraj ) ও কন্যাসন্তান কৃষভিকে নিয়ে, এই প্রথমবার কাঞ্চন পালন করলেন ‘পুরোপুরি নিয়ম মেনে’ জামাইষষ্ঠী (Jamai Sashti) !
গত ১ জুন, রবিবার, নিজ বাসভবনেই শ্রীময়ীর মা ও দিদির উপস্থিতিতে আয়োজন হয়েছিল এই ঘরোয়া উৎসবের। আটপৌরে শাড়িতে বাঙালি বধূর সাজে শ্রীময়ী এবং মেয়ে কৃষভিকে দেখা যায় কাঞ্চনের পাশে। সাজানো পঞ্চব্যাঞ্জনের থালার সামনে বসে কাঞ্চনের অকপট স্বীকারোক্তি— “তিন বার বিয়ে করেছি, কিন্তু এতটা নিয়ম মেনে জামাইষষ্ঠী এই প্রথম!” এই বক্তব্যই যেন উসকে দিয়েছে একের পর এক সমালোচনার ঢেউ।
তাঁর এই বক্তব্য যেন হাসির খোরাক হয়ে উঠেছে নেটিজেনদের কাছে। সমাজ মাধ্যমে এই মন্তব্য ঘিরে ছড়িয়ে পড়েছে নানা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ। কেউ লিখেছেন, “ নিয়ম মেনে জামাইষষ্ঠী খাওয়ার জন্য এত অধ্যবসায় সত্যিই বিরল!” কেউ আবার বলেন, “আগের দুইবারের শাশুড়িরা বুঝি নিয়ম মানতেন না, তাই তৃতীয় বিয়ে করতে হল?” এমনকি কেউ কেউ ব্যঙ্গ করে বলছেন, “চতুর্থবার নিয়ম মেনে শ্মশানযাত্রা হবে না তো?”
কারও মতে, এই ধরণের ‘ব্যক্তিগত উচ্ছ্বাস’ আসলে প্রথম পক্ষের সন্তানদের প্রতি একরকম অবহেলা, যা আরও কষ্টদায়ক! তবে বিতর্কের এখানেই শেষ নয়। এদিন এক সাক্ষাৎকারে কাঞ্চনের মন্তব্য— “আমাদের অল ওম্যান্স ফ্যামিলি। শ্রীময়ীর দিদিরও দুটি কন্যা, আমারও একমাত্র কন্যা সন্তান।” এই বক্তব্য যেন ঘি ঢেলে দিয়েছে নতুন বিতর্কের আগুনে। সমাজ মাধ্যমে অনেকেই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন কাঞ্চনের প্রথম পক্ষের পুত্রসন্তানের কথা।
প্রশ্ন উঠেছে— কীভাবে ভুলে গেলেন সেই সন্তানকে, যার মুখ থেকেই তিনি প্রথম “বাবা” ডাক শুনেছিলেন?একজন নেটিজেনের মন্তব্য বেশ স্পষ্ট, “আপনার মেয়ে সন্তান আছে ঠিক, সেটি গর্বের বিষয়, কিন্তু তাই বলে প্রথম ছেলেকে অস্বীকার করেন কি করে? আপনি ভুলে গেছেন সেই সম্পর্কের শিকড়কে।” আবার কেউ বলেছেন,”প্রথম সন্তান ছেলে, সেটা বেমালুম ভুলে গেছে। লজ্জাও নেই, শুধু মেয়ে, মেয়ে। শ্রীময়ীর প্রথম মা হয়েছেন, তার প্রথম সন্তান মেয়ে, সে তার জায়গায় ঠিক আছে।
আরও পড়ুনঃ মুখার্জী বাড়িতে ফিরলো কমলিনীর স্বামী! তবে, কি এবার কমলিনীর জীবন থেকে চিরতরে বিদায় নেবে স্বতন্ত্র? নতুন ঠাকুরপোকে কি ভুলে যাবে বৌঠান? কী হতে চলেছে চিরসখা ধারাবাহিকে?
কিন্তু আপনি আপনার জায়গায় ভুল।” ফলে শ্রীময়ীর নিখুঁত গৃহিণীসুলভ আয়োজনে সাজানো এই জামাইষষ্ঠী শেষমেশ যেন পরিণত হয়েছে এক সামাজিক বিতর্কে। কাঞ্চনের একান্ত ব্যক্তিগত উৎসবও ছুঁয়ে ফেলেছে জনতার কড়া বিচারের কাঠগড়া। এই বিতর্কে কাঞ্চন যেমন চুপ, তেমনই শ্রীময়ীও সবকিছু সামলাচ্ছেন স্বাভাবিক ভাবেই। তবে এটুকু স্পষ্ট, নেটদুনিয়া এখনও তাঁদের অতীত ভুলে সাম্প্রতিক ‘পারিবারিক সাজে’র গল্প সহজে মেনে নিতে পারছে না।