ঐন্দ্রিলাকে হারিয়েছেন, মা চতুর্থবার ক্যা’ন্সারে আক্রান্ত— তবুও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ঐশ্বর্য! বোনের স্বপ্নকে সঙ্গী করেই এবার অভিনয়ের পথে দিদি! দেখা যাবে কি ছোট পর্দায়?

ছোট পর্দার অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার (Aindrila Sharma) অকালপ্রয়াণ এখনও অনেকের মনে গভীর দাগ কেটে রয়েছে। তাঁর মুখের আদল, চোখের ভাষা আর হাসি আজও দর্শকের স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে। কিন্তু সেই ছায়ার মাঝেই ধীরে ধীরে আলো হয়ে উঠছেন তাঁর দিদি, ঐশ্বর্য শর্মা (Aishwarya Sharma)। সামাজিক মাধ্যমে আজ যাঁর প্রোফাইল জুড়ে কেবল নিজের কাজ, নিজের চেষ্টার প্রতিচ্ছবি। আগে যেখানে শুধুই বোনের ছবি দেখা যেত, এখন সেখানে ঐশ্বর্যের নিজের অভিনয়, নাচ কিংবা গানের নানা মুহূর্ত উঠে আসছে।

প্রসঙ্গত, ঐশ্বর্য পেশায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের ছাত্রী। ছোটবেলা থেকেই তিনি ও তাঁর বোন সাংস্কৃতিক চর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গান থেকে নাচ, সবেতেই ছিল আগ্রহ। তবে বোনের মতো পুরোপুরি অভিনয়ে ঝুঁকে পড়া সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে। ডাক্তারির পড়াশোনার চাপ আর ভবিষ্যতের প্রস্তুতি তাঁকে এই জগৎ থেকে কিছুটা দূরেই রেখেছিল। যদিও ঐন্দ্রিলা বারবার উৎসাহ দিতেন দিদিকে অভিনয়ের জগতে প্রবেশ করার জন্য। দিদিও ভেবেছিলেন, প্রবেশিকা পরীক্ষার পর সময় নিয়ে ভাববেন অভিনয়ের কথা।

কিন্তু সব পরিকল্পনার আগেই ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা— ছোট বোন চিরবিদায় নেয় পৃথিবী থেকে। বোনের চলে যাওয়ার পরে ঐশ্বর্যের জীবন এক নতুন মোড় নেয়। পড়াশোনার শহর দিল্লি ছেড়ে তিনি পাকাপাকিভাবে ফিরে আসেন কলকাতায়। মায়ের অসুস্থতা, বাবার দায়িত্ব, সংসারের ভার— সবই এখন তাঁর কাঁধে। তবে এর মধ্যেও থেমে থাকেননি তিনি। সমাজ মাধ্যমের পাতায় উঠে আসে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি, ছোট ছোট স্কিট— যেখানে তিনি নিজেই অভিনয় করছেন। যদিও ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাবও পেয়েছিলেন।

কিন্তু ডাক্তারির দায়িত্ব সামলে নিয়মিত অভিনয় তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, ঐশ্বর্যের মা বর্তমানে ক্যা’ন্সা’রে আক্রান্ত, এবং এই নিয়ে চতুর্থবার। এই কঠিন সময়ে পরিবারই তাঁর প্রথম অগ্রাধিকার। অথচ মনের মধ্যে জমে থাকা শিল্পীসত্তাটাকে আর দমন করতে পারছেন না তিনি। স্বল্প পরিসরে হলেও, বোনের অনুপ্রেরণায় আজ অভিনয় তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে উঠেছে। এক সাক্ষাৎকারে ঐশ্বর্য জানিয়েছেন, বোনের মৃ’ত্যু না ঘটলে হয়তো নিজের এই দিকটি কখনও আবিষ্কারই করতে পারতেন না।

আরও পড়ুনঃ “মনটা খুব খারাপ, আরও কিছু দেওয়ার ছিল” — হঠাৎ শেষ ‘বুলেট সরোজিনী’, অভিনেত্রী দিয়া জানালেন ধারাবাহিকের না বলা গল্প!

তিনি বলেন, আজও বোনের প্রেমিক অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন ঐশ্বর্য। বোনের সূত্রেই টলিপাড়ায় অনেকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় গড়ে উঠেছে। সেই পরিচিতি ও ভালোবাসাই তাঁকে সাহস দিয়েছে ধীরে ধীরে নিজেকে প্রকাশ করার। ভবিষ্যতে টেলিভিশনের পর্দায় তাঁকে দেখা যাবে কিনা, তা সময়ই বলবে। তবে একথা নিশ্চিত— ঐন্দ্রিলার ভালোবাসা আর অনুপ্রেরণায় তাঁর দিদির জীবনে একটি নতুন দিগন্ত খুলে গেছে।