তিনি ছিলেন বাংলা স্বর্ণযুগের অভিনেত্রী। তবে শুধুমাত্র বাংলা কেন? কাজ করেছেন হিন্দি অভিনয় দুনিয়াতেও বিভিন্ন নামিদামি অভিনেতা অভিনেত্রীদের সঙ্গে। তবে বলেই যায় তার অভিনয়ের বা তার প্রতিভার যথাযথ মর্যাদা দেয়নি টলিউড। তবে এই নিয়ে অভিনেত্রীর আক্ষেপ একেবারেই ছিল না এমনটা বলা যায় না।
সেই আক্ষেপকে বুকে চেপে রেখেই চলে গেলেন তিনি। দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করলেন। কিন্তু না জিততে পারলেন না এই লড়াই। মারণ রোগের সঙ্গে দীর্ঘ তিন বছরের লড়াই শেষ হলো আজ। অনেকদিন যাবৎ তাকে আর পর্দায় দেখা যেত না। আর আজকের পর থেকে কোনদিনও তিনি পর্দায় ধরা দেবেন না। তিনি মৃণাল সেনের সৃষ্টি তার মানসকন্যা শ্রীলা মজুমদার (Sreela Majumdar)।
টলিউডের ব্যতিক্রমী অভিনেত্রী ছিলেন তিনি। নিজের অভিনয় নিয়ে অকপটে তিনি বলতেন, আমি অভিনয় করতে পারি না। আর অভিনয় করার চেষ্টাও করি না। যেটা করি সেটা শুমাত্র ‘বিহেভ’। আর আজ সেই ‘বিহেভ’ করার মানুষটাই চিরকালের মতো চলে গেলেন।
উল্লেখ্য অভিনেত্রীর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, গত ১৩ থেকে ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত টাটা মেডিক্যাল ক্যানসার সেন্টারে ভর্তি ছিলেন অভিনেত্রী। অভিনেত্রীর ছেলে লন্ডনে পড়াশোনার সূত্রে থাকেন। মায়ের অসুস্থতার খবর তাকে জানানোয় তড়িঘড়ি দেশে ফিরেছেন তিনি। আর আজ নিজের সংসারকে ফাঁকা করে দিয়ে চলে গেলেন শ্রীলা মজুমদার।
অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদারকে মৃণাল সেনের সৃষ্টি বলা হত। কারণ মাত্র ১৬ বছর বয়সে একটি নাটকের মহড়া থেকে তুলে এনে তাকে ছবির জগতে কাজ দিয়েছিলেন স্বনামধন্য এই বাঙালি পরিচালক । ১৯৮০ সালে মৃণাল সেন পরিচালিত পরশুরাম ছবির হাত ধরে চলচ্চিত্র জগতে আত্মপ্রকাশ করেন। গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’ তার অন্যতম কাজ। ২০০৩ সালে তিনি চোখের বালি সিনেমায় ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের জন্য বাংলায় কণ্ঠ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুনঃ জলসায় দারুণ খবর! একসময়ের জলসার জনপ্রিয় নায়িকা ফের ফিরছেন নতুন ধারাবাহিক নিয়ে!
অভিনয়ে এত নাম যশের পরেও নিজের ইচ্ছেতেই তিনি সন্তান জন্মের সময় সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবে বিরতি তাকে অনেকটা পিছনে ঠেলে দেয়। ছেলে একটু বড় হওয়ার পর যখন তিনি আবারও অভিনয়ে ফেরেন, তখন আর তেমন কাজ পাননি। যদিও এই নিয়ে বিশেষ আক্ষেপ করেননি তিনি কোনদিনও। কারণ তার কাছে সন্তান সুখটা তার অভিনয় কেরিয়ারের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর আজ সেই ছেলেকে রেখেই চলে গেলেন অভিনেত্রী।